বৃহস্পতিবার, ২৯ জুলাই, ২০২১

প্রিয় কবি লেখক এবং পাঠকদের প্রতি


  স্বরবর্ণ *   



* পুজো সংখ্যা হিসাবে প্রকাশিত হবে আগামী ১৫ অক্টোবর  ২০২১ 

* এই সংখ্যার জন্য আপনার মৌলিক ও অপ্রকাশিত লেখা (গল্প কবিতা প্রবন্ধ বা ভ্রমণ কাহিনি ) ১৫ সেপ্টেম্বর  ২০২১- এর মধ্যে পাঠিয়ে দিন । 

* শব্দসীমা অনির্দিষ্ট ।  

* লেখার সঙ্গে আপনার একটি ছবি এবং সংক্ষিপ্ত পরিচিতি, প্রকাশিত গ্রন্থ (থাকলে)  ছবিসহ পাঠিয়ে দিন। 

* "স্বরবর্ণ " সামগ্রিক চিন্তার ফসল। প্রতি দুমাস অন্তর বেরো  আগে থেকে লেখা পাঠান পরিকল্পনার সুবিধার জন্য  লেখা পাঠাবেন ওয়ার্ড ফাইলে, হোয়াটসঅ্যাপ কিংবা ই-মেইল বডিতে টাইপ করে 

* হোয়াটসঅ্যাপ নম্বর   8777891532

*ই-মেইল --- debasishsaha610@gmail.com 


সম্পাদকমণ্ডলী                                                   

 ড : শুভঙ্কর দে           অলোক কোৱা

সৌম্যজিৎ দত্ত             দেবাশিস সাহা  


মঙ্গলবার, ১৩ জুলাই, ২০২১

স্বরবর্ণ * ৩

খুব শিগ্রি প্রকাশিত হতে চলেছে 

এ সংখ্যার সম্ভাব্য লেখকসূচি 



কবিতা

নির্মল হালদার * সমীরণ ঘোষ * চন্দন রায় * উদয় ভানু চক্রবর্তী * গৌরীশঙ্কর দে * বিজয় সিংহ * কানাইলাল জানা দেবাশিস সরখেল * ফজলুররহমান বাবুল * তৈমুর খান * সন্দীপন গঙ্গোপাধ্যায়* পিয়ালী বসু * দেবার্ঘ সেন * শাহ নওয়াজ * ধৃতিরূপা দাস * মৃন্ময় মাজী * কল্পোত্তম (উত্তম মাহাত) * রজতকান্তি সিংহচৌধুরী * বন্ধুসুন্দর পাল * পায়েল শেঠ সুফল সান্যাল * অরিত্র চ্যাটার্জি * অনিমেষ * বিধান ঘোষ * দেবাশিস সাহা 


প্রবন্ধ

সম্রাট মুখোপাধ্যায় * ড: দীপঙ্কর বাগচী * 

ড: শুভঙ্কর দে * লোক কোৱা * তপন পাত্র    


কবি ও কবিতা বিষয়ক গদ্য * সব্যসাচী মজুমদার 


গল্প

রাহুল দাশগুপ্ত

নিমাইচন্দ্র সাহা 


ভ্রমণকাহিনি * মাধুরী দাশগুপ্ত * নায়াগ্রা ফলসে হারালো যে-দিনটা 


পাঠ প্রতিক্রিয়া বিশ্বনাথ পাল * কবি 

রামচন্দ্র প্রামাণিক-এর' কালপক্ক 'নাটক সম্পর্কে 


কবিতা উপন্যাস ( ধারাবাহিক ) *কোথাকার অতিথি আমি ( মানস ভ্রমণ

দীপংকর রায়

উপন্যাস ( ধারাবাহিক )* ধুলোর সিংহাসন *পর্ব -- তিন 

দেবাশিস সাহা 


এছাড়া থাকছে " প্রিয় কবি প্রিয় কবিতা " এবং "তোমায় খুঁজে ফিরি " নামে দুটি নতুন বিভাগসহ  স্বরবর্ণের অন্তরঙ্গ কিছু বই -এর খবরাখবর  


সম্পাদকমণ্ডলী      

ড : শুভঙ্কর দে            অলোক কোৱা

সৌম্যজিৎ দত্ত             দেবাশিস সাহা 

শনিবার, ১০ জুলাই, ২০২১

চন্দন রায়



শব্দ আর কল্পনার সাযুজ্যে মায়াবী গীতিময় এক অননুকরণীয় কবিতাভাষায় একের পর এক কবিতা রচনা করে চলেন কবি চন্দন রায় । তাঁর জীবন সম্পৃক্ত উচ্চারণে,তাঁর প্রতিটি স্বর বিক্ষেপে আমরা মুগ্ধ হই। যখন তিনি বলেন,'সমস্ত আগুন নিভে গেলে গরল মন্থন করে আবার/ উঠে দাঁড়ানোর চেষ্টায় চন্ডালডাঙার এই শরীর/গান গায় দাঁড়কাক কণ্ঠ।' তখন তাঁর শব্দছায়ায় আমরা বিহ্বল হয়ে দাঁড়াই। -----


 

কবি চন্দন রায়-এর দু'টি কবিতা  


শিরোনাম সন্ধান চলছে --৩



নরজন্ম । শুনতে এবং বলতে দারুণ লাগে।

নরজন্ম। বসন্তে লেজ গজায়। ফাল্গুনে কলংকিত

হাড়মাস। চৈত্রে  ক্ষতগুলো ঘাম হয়। বৈশাখে

শিল্পপ্রাণ কোলাহল। লম্বা শুঁড়। ঘন রস। জল গুল্ম।

শেষ-কলঙ্ক। নরজন্ম। স্বর্ণবল চমৎকার মাঠ পেরিয়ে যায়।


ইতিহাস খুব ভাল লেখে। চেয়ারে সুমন। কাঠের আগুন।

দর্শন নিয়ে জীবনের কাছে আসে। জীবনানন্দ। নজরুল।

জলের উপর পূর্ণ চাঁদ। ভিতরে অস্থি চেবানো মাছ।

সাশ্রয়ের কথা ভেবে সমস্ত নদী, সমস্ত অগ্নি, কফিপাত্র

হাতে বাগানের মালি খুঁজে হন্ন।  নরজন্ম-----


শুনতে এবং বলতে ভীষণ ভাল লাগে------



শিরোনাম  সন্ধান চলছে -৩৫



এখন মনের ভিতর কোন প্রশ্ন থাকে না।

শুকনো নদীর মতো। দিকশূন্য কাশবন।

সমস্ত আগুন নিভে গেলে গরল  মন্থন করে আবার

উঠে দাঁড়ানোর  চেষ্টায়  চন্ডালডাঙার এই শরীর

গান গায় দাঁড়কাক কণ্ঠ।


মাঝেমধ্যে আলাদিনের প্রদীপ ঘসার  মত

হৃৎস্পন্দন রক্তের উত্তর পেতে অতীতের গৌরবগুলোকে

বাসন মাজার সাবান ঘসে বিছানার  রোদ্দুরে

মেলে রাখে। পরাক্রমের সংগ্রহশালা----


নিম্ন শরীরে ভালবাসা খোঁজ করার ইচ্ছে জাগে

ঘুমের রাত  পাখি হাত পা ছড়িয়ে দেশান্তরে চলে যায়।

একদিকে পাহাড়ের কালো গহ্বর

অন্যদিকে নদীর অবিরাম ধর্মযুদ্ধ

মাঝখানে মধ্য দুপুর। নিজের ছায়া। এখন মনের ভিতর

কোন প্রশ্ন জাগে না। জাগতে দিতেও চাই না---


সমীরণ ঘোষ




 ব্যাখ্যাতীত এক কবিতা ভাষায় কথা বলেন কবি সমীরণ ঘোষ। কবিতাকে আমরা ছন্দে অলংকারে প্রতীকে ব্যঞ্জনায় বাঁধতে চাই, কিন্তু সে তো একটা প্রয়াস মাত্র। তারপরেও যে অনেক  উপলব্ধি অধরাই থেকে যায়। সেই ' অধরা'র কাছে যেন আমাদের পৌঁছে দিতে চায় কবি সমীরণ ঘোষের এইসব পংক্তিবিন্যাস------


 


কবি সমীরণ ঘোষ-এর কবিতা  


সান্ধ্যবৈঠক 


২১

গানের সিপিয়া থেকে গান মুছে গেলে ফলার নির্জন

হিসহিস করছে বাঁট

শূন্য আর চোখের তাওয়ায় 


২২

প্রেতের কান্নার ঝাউ স্মৃতির শুমারি

রাত্রি জ্বালছে কালো গানে


২৩

তিলের চিবুকে গান ঝিলের বেগুনি

ছিপসহ জ্যোৎস্না ডুবছে


২৪

নিজের মাংসে গান জিভের সারস

আধপোড়া গোধূলি চাখছে 


২৫

গানের ভেতর ভাঙাবাড়ি

সাতদিন বেড়াতে এলাম 

দিনচার সুরের খাদান

পনেরোদিনের কুহু নিলাম হচ্ছে 

ভাঙা হাটে 


২৬

গলে যাওয়া গানকে জানতো

মৃত দেশ

সে-অনেক সান্ধ্যমল্লার

তারার বরফে আজও মুজরো বসেছে


২৭

গান ওর স্তন থেকে চমকে তাকাবে

তাই রাতের মেরুন

শিষের লন্ঠন তুলে বরফকঠিন

ছায়াপথ 


২৮

গান ময়ূররঙের দিদিমণি

প্রেয়ারলাইনে একা 

মুষড়ে যাওয়া বয়সবালক


২৯

চিমটেখোঁচানো এই সূর্যাস্ত  বরফনতুন

গানের কলেও ধুধু। পিনের আত্মায় নেভা দেশ



৩০

তোমাকে ছুঁচ্ছি

মৃত স্পর্শের স্তনেও নীল গানের বলয়



৩১

ময়মনসিংহে আমরা গানই পুঁতেছিলাম

আস্ত করাতকল শিস দিল

বনের পাঁজরে



প্রকাশিত কাব্যগ্রন্থ  কবিতাসংগ্রহ।
চাঁদলাগা চৌষট্টি আশমান। অন্তর্বর্তী রেখা।
কালো পাথরের হারমোনিয়াম। মরচে গোধূলির পাঠ।
মরিচগন্ধের সেতু। হাড়ের দূরবীন । হাত আয়নার ঘুম 


প্রকাশিতব্য : পেনসিলের শ্রুতিধর


অনূদিত নাটক
সুইফটনির্মিত প্রাসাদ : গ্রিগরি গোরিন


শুক্রবার, ৯ জুলাই, ২০২১

উদয় ভানু চক্রবর্তী




পেশায় তিনি চিকিৎসক, কিন্তু তাঁর অন্তরাত্মায় ছায়া ফেলে কবিতার নীল ইশারা। অদ্ভুত এক মায়াবীছন্দে রচিত হয় তাঁর কাব্যভাষা।'...পড়ে আছে অবিকল আমার হৃদপিন্ডের আকারের পদ্মকুঁড়ি ' কিংবা ' শ্যামল আঁচলে মুখ ঢেকে কে চলে যায়/ বিমুগ্ধ পরকীয়ার মতো গূঢ আবেগে/ দুলে ওঠে জগৎ'



কবি উদয় ভানু চক্রবর্তী-র দু'টি কবিতা 


ইতিবৃত্ত


তারপর এগিয়ে গেলাম ভেতরে, 

সংকীর্ণ গুহামুখ ধরে ঘোরানো রাস্তা- পার হয়ে আকুল অরণ্য।

নাম না জানা পাখিরা উড়ছে- 

পড়ে আছে অবিকল আমার হৃৎপিন্ডের আকারের পদ্মকুঁড়ি, 

চামর দোলাচ্ছে কৃষ্ণকায় গাছের দল, 

লাব-ডুপ লাব-ডুপ লাব-ডুপ- মৃদু স্বরে 

বাজছে অনন্ত প্রাণ সংগীত!


শিশিরকণারা প্রবাহিত হচ্ছে ধমনী শিরা উপশিরা বেয়ে, 

বিচিত্র আলো আঁধারিতে কোথাও রক্তের 

উত্তাপ নেই, বিকৃতি নেই- প্রতারণা নেই সূর্যাস্তের, 

পাপ নেই, যন্ত্রণা মৃত্যু কিছু নেই

কিছু নেই,

চিহ্নহীন জগৎ!


বসি খানিকক্ষণ- অনুরক্ত নম্র ঘাসের ওপর; 

তিনটি সরু গলি চলে গেছে সম্মুখে,

কোন দিকে যাব ভাবতে ভাবতে চলেছি হেঁটে!

পলাশের লাল রেখা , টলটল ঢেউহীন নদী, 

শিউলি রমণীদের নিখুঁত অঙ্গ সৌষ্ঠব, অপূর্ব মুদ্রায় নৃত্যরতা, 

ওরা ডাকে মধুর ধ্বনিতে, চোখ বুজে আসে-

আধোচেতনার মতো নিমীলিত, এমনও হয়,

এমনও হয়! 


হঠাৎ প্রবল বর্ণচ্ছটার ঝলকানি চারদিকে,…

কয়েক মুহূর্ত-

অতঃপর আলো সয়ে এলে, দেখি শব্দহীন অপার্থিব 

সে প্রান্তরে শুধু তন্ময় মুখোশের সারি 

অথচ সবই পরিচিত মুখ!

এই মুখ এই মুখোশ এই স্বপ্ন, সৎকার, বোধি-

মুখোমুখি? 

যেন পেরিয়ে এসেছি কত উদ্যত সংসার 

বাসনা !!! 



বৃষ্টিসুখ এবং বিরহ


ঋতু পাল্টেছে, গাছের এমন বিনোদিনী ভাব

দেখে দোয়েলের গোপন ঈর্ষা জাগে- 

পালকের মৃদু শিহরণ ভেসে ভেসে আসে, 

নামে সহিষ্ণুতার উপর!

শ্যামল আঁচলে মুখ ঢেকে কে চলে যায়- 

বিমুগ্ধ পরকীয়ার মতো গূঢ় আবেগে,

দুলে ওঠে জগৎ! 


বিহ্বল মুহূর্তরা থেমে রয়েছে, বাতাসের ফিসফিস সংলাপ- 

"সাইয়া বোলো তনিক মো'সে, রহিয়ো না যায়ে..."!

হে বিমর্ষতা- 

এ প্রত্যাশার কোনো অন্ত নেই, এ নীরবতায় 

শুধুই সুরের সমর্পণ !

তবে কি বিফল অনুরাগে সে রেখে গেল 

অস্পষ্ট পায়ের ছাপ- কাঁপলো পাতারা?


ফিরে ডাকার ভাষা খসে পড়ছে, সম্পর্কের বুনোট ছেঁড়া-

আলুথালু উড়ে যাওয়া শ্রাবন পাখি, মেঘ ছোঁয়- মাটি ছোঁয়, 

আর দুরন্ত অভিমান তারই পিছু পিছু ছুটতে ছুটতে ছুটতে- 

বৃষ্টি নামে হঠাৎ, ঠাঁই পায় অশান্ত ডানা,

দেখা হয়- 

আলুলায়িত কেশ, চোখ নাক ঠোঁট, 

আরও যত সৌষ্ঠব, স্মরনীয় স্পর্শটুকু - 

আকাশ বুজে আসে!


লুকোনো ব্যথার নীচে,

রিমঝিম রিমঝিম রিমঝিম---

বারান্দা ভেজে, চোখ ভেজে, ভেজে বুকও-

আজীবন চেয়ে থাকা তবু স্বপ্নের উজানে-

আশ মেটে না...

মেটে না সুখও !!!