শব্দ আর কল্পনার সাযুজ্যে মায়াবী গীতিময় এক অননুকরণীয় কবিতাভাষায় একের পর এক কবিতা রচনা করে চলেন কবি চন্দন রায় । তাঁর জীবন সম্পৃক্ত উচ্চারণে,তাঁর প্রতিটি স্বর বিক্ষেপে আমরা মুগ্ধ হই। যখন তিনি বলেন,'সমস্ত আগুন নিভে গেলে গরল মন্থন করে আবার/ উঠে দাঁড়ানোর চেষ্টায় চন্ডালডাঙার এই শরীর/গান গায় দাঁড়কাক কণ্ঠ।' তখন তাঁর শব্দছায়ায় আমরা বিহ্বল হয়ে দাঁড়াই। -----
কবি চন্দন রায়-এর দু'টি কবিতা
শিরোনাম সন্ধান চলছে --৩
নরজন্ম । শুনতে এবং বলতে দারুণ লাগে।
নরজন্ম। বসন্তে লেজ গজায়। ফাল্গুনে কলংকিত
হাড়মাস। চৈত্রে ক্ষতগুলো ঘাম হয়। বৈশাখে
শিল্পপ্রাণ কোলাহল। লম্বা শুঁড়। ঘন রস। জল গুল্ম।
শেষ-কলঙ্ক। নরজন্ম। স্বর্ণবল চমৎকার মাঠ পেরিয়ে যায়।
ইতিহাস খুব ভাল লেখে। চেয়ারে সুমন। কাঠের আগুন।
দর্শন নিয়ে জীবনের কাছে আসে। জীবনানন্দ। নজরুল।
জলের উপর পূর্ণ চাঁদ। ভিতরে অস্থি চেবানো মাছ।
সাশ্রয়ের কথা ভেবে সমস্ত নদী, সমস্ত অগ্নি, কফিপাত্র
হাতে বাগানের মালি খুঁজে হন্ন। নরজন্ম-----
শুনতে এবং বলতে ভীষণ ভাল লাগে------
শিরোনাম সন্ধান চলছে -৩৫
এখন মনের ভিতর কোন প্রশ্ন থাকে না।
শুকনো নদীর মতো। দিকশূন্য কাশবন।
সমস্ত আগুন নিভে গেলে গরল মন্থন করে আবার
উঠে দাঁড়ানোর চেষ্টায় চন্ডালডাঙার এই শরীর
গান গায় দাঁড়কাক কণ্ঠ।
মাঝেমধ্যে আলাদিনের প্রদীপ ঘসার মত
হৃৎস্পন্দন রক্তের উত্তর পেতে অতীতের গৌরবগুলোকে
বাসন মাজার সাবান ঘসে বিছানার রোদ্দুরে
মেলে রাখে। পরাক্রমের সংগ্রহশালা----
নিম্ন শরীরে ভালবাসা খোঁজ করার ইচ্ছে জাগে
ঘুমের রাত পাখি হাত পা ছড়িয়ে দেশান্তরে চলে যায়।
একদিকে পাহাড়ের কালো গহ্বর
অন্যদিকে নদীর অবিরাম ধর্মযুদ্ধ
মাঝখানে মধ্য দুপুর। নিজের ছায়া। এখন মনের ভিতর
কোন প্রশ্ন জাগে না। জাগতে দিতেও চাই না---

কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন