সোমবার, ১৪ জুন, ২০২১

সৌমিত বসু



  সৌমিত বসু বাংলা কবিতায় একটি পরিচিত নাম। রোমান্টিকতার ছদ্ম আবরণে, প্রতীকী ব্যঞ্জনায়, এক অননুকরণীয় কাব্যভাষায় কথা বলেন কবি। ' তোমার কথার ফাঁকে চুল পেতে শুয়েছে ঈশ্বর। ' তাঁর কথা বলার এমন স্বরক্ষেপে পাঠক মোহাবিষ্ট হন।



কবি সৌমিত বসুর দুটি কবিতা




সামান্য কবিতা


সারাদিন মুঠোর ভেতর ধরা তোর হাত। হাত না বলে যদি আত্মা বলি,যদি বলি এতদূর থেকে হেঁটে এসেছি শুধুমাত্র বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হবার আশায়,রোমকূপ থেকে ফুটে ওঠা বিন্দু বিন্দু উত্তেজনা ভিজিয়ে দিচ্ছে সম্পন্ন মাটি।যেভাবে চোখের জলে ভিজে ওঠে মাঝরাত,বৃষ্টির ছাঁট লেগে ভিজে যায় বুকের ভেতর রোঁয়াওঠা সম্পর্কের শাড়ি।


সারাদিন মুঠোর ভেতর ধরা তোর দেহ।রোদ লেগে পাছে গ'লে যাস,আমি দুই হাতে সমস্ত টুকরো টাকরা কুড়িয়েঢেলে দিই ছাঁচের ভিতর,যেভাবে অনেক রাতে চুম্বন ঢেলে দেয়া বিষশাদা স্তনে।দেহের ভেতর থেকে আগুনে জড়ানো লতাপাতা নেমে আসে মেঘ বরাবর,ছুঁয়ে দেয় গর্ভের নুন।তোর শরীরের সাথে শুয়ে থাকি আবছা আলোয়,রাত ভোর,মুঠো খুলি,সমস্ত শব্দ দেখি গান হ'য়ে ওপারে মিশেছে।


সারাদিন মুঠোর ভেতর আঁকা আছে তোমার হৃদয়।আঙুলের ফাঁক বেয়ে ঝরে পড়ে সমূহ অতীত।যেটুকু তোমায় নিয়ে কথা হলো,বৃষ্টি হলো,সবটুকুগাঁথা আছে গুহার দেয়ালে।যদি পারো খুঁজে নিয়ে প'ড়ো।




 মোহিনী


তোমার কথার ফাঁকে চুল পেতে শুয়েছে ঈশ্বর


চাঁদেরা তাদের যেন কেউ নয়।অস্পষ্ট বিকেলের মতো রোদ এসে পড়েছে কার্নিশে।কান্নারা ভাইবোন হাত ধরাধরি করে চলেছে আশ্বিনের পথে।ভয়ে জড়োসড়ো। কারা কারা ভেবেছো তাদের কথা?ধানের গোলায় লুট,রিলিফের চাল ভাগাভাগি। মধ্যরাতে দরোজার পাশে লুকোনো বন্ধুকের নল অন্যকথা বলে,ধর্মকে চাদরে জড়িয়ে কারা যেন রেখে যায় ব্রিজের ওপর।সমস্ত মেয়েদের শাড়ি পতপত উড়ছে আকাশে।সমস্ত সন্তান আজ সারা গায়ে চেরাচেরা দাগ।


এইমাত্র নেমে যাওয়া রোদে দু-হাত ছড়িয়ে সে ভাবে কান্নাদের সংসার এতো বড়ো হয় কেন?বর্শা ও বন্দুক কেন এতো গলায় গলায়?


তোমার কথার ফাঁকে গোল হয়ে বসেছে চাঁদেরা,ঈশ্বর গুটিয়ে নিয়েছে তার চুল।




সৌমিত বসুর কয়েকটি জনপ্রিয় কাব্যগ্রন্থ


বিষণ্ণতর শব্দের দিনগুলি 

বোধিবিন্দু

 আরশিমাছের চোখ

 আমার সন্তান যেন থাকে রাইটার্স-এ

 ডানার আনন্দরঙ 

কৃষ্ণকথা ,ইত্যাদি |  


1 টি মন্তব্য: