দেশ কাল সমাজ সচেতনতা কবি দেবাশিস সরখেল-এর কবিতার মূল সুর হয়ে বাজে। খানিকটা তির্যকভঙ্গিতে সমাজের অসঙ্গতিগুলিকে কবি ধরতে চান। ' সভ্যতার নিবিড় রূপকথাগুলি / খেলে যায় ধুনুচি নাচনে। '
কবিতাগুচ্ছ/ দেবাশিস সরখেল
জাগরণ
এক পায়ে দাঁড়িয়ে, ইঁট গাঁথি বাড়িয়ে বাড়িয়ে
দু’তিন তালগাছ। কেউ মাছ, নীল তিমি
হয়েছো একখান যাহোক, দ্রিমি দ্রিমি
বুকের পাঁজরে। আমরা কেউ কিছু হই?
দিনান্তে বাতাসা, খই
চড়াই, শালিক খুঁটে খায়, চারপাশ নীরব
এঁটোকুলে ভরছে পালই।
একদিন দেখেছিলে, প্রকৃত ধরনীতলে
সঘন গহন বারিজাত।
হতবাক্ স্থিতধী পিতৃদেব
বাতাসে বাতাসা ভোগ, খই
যদি আমরা সকলে তার চরনের ধূলো হই
মানবজমিনে হাত, তালগাছে ভরপুর আলপথ
রঙে, রসে শিমুলে - পলাশে জাগে
দেহাতী জীবন।
আমিময়, তুমিময়
তোমার ছেড়ে যাওয়া ঝালর, বিছানা
আমার।
আয়নার দিকে তাকাই, ঘুম ভাঙে ---
চমকে উঠি, তুমি।
ছায়ার দিকে তাকালেও অনুরূপ বিস্ময়ের ঘোর।
তুমি হেঁটে চলেছো বৃত্তাকারে
বেঁচে উঠি, মরি।
মুক্তধারাতে প্রকৃতবন্ধনসখা
আনন্দলহরী
রঙে, রুপে, রসে বাজে গান
আনন্দলহরী
রান্না
এর তুল্য মহোৎসব পৃথিবী দেখেনি
থার্মোকলের মাল হাতে বেরিয়ে এলেন
কুমার কিন্নর।
সুসংবাদ খুব কাছে।
সসের বিকট গাছে যিনি নাক ঝাড়ছেন
তারও চোখ জিহ্বাসংবাদ নিতে থাকে।
পাকশালার ঐ মানুষ
ঈশ্বরেরও ঈশ্বর, আত্মার আত্মীয়
অভাজন সভাসদ সকলের উচাটন মন।
স্যালাড আসছে
যেন বা মহোত্তম পুস্পবৃষ্টি
ধরাধাম জুড়ে।
ক্ষীর দাও, খিচুড়িও দাও
কবি ও দার্শনিক মুখোমুখি
ধর্মের গল্পসব রুপকথা
মায়া, মহামায়া
ক্ষণকালের মিলনমেলায় বাতাস
পাঁপড়ের গন্ধে হয় কটু।
কাশের বন ডিঙিয়ে মহামায়া
ছুটে চলেছেন রোহিঙ্গা শিবিরে
অমৃতের বাটি হাতে স্মৃতিরূপে সংস্থিতা
ফুলে ফুলে বিধুর মন্ডপ
মহাকালের উনুনে চপ ভাজে যোগিনীতনু।
ওকে ডাকো, রাখো বক্ষনীড়ে।
সভ্যতার নিবিড় রূপকথাগুলি
খেলে যায় ধুনুচি নাচনে।
ওদেরও ক্ষীর খিচুড়ি দাও
শরতের মায়ামেঘপুঞ্জ দেখি
শান্তিরুপেন সংস্থিতা।
দেবাশিস সরখেল-এর কবিতার বই

![]() |





কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন