সোমবার, ১৪ জুন, ২০২১

কল্পোত্তম



তরুণ কবি কল্পোতম শিল্পের বিস্ময় । পেশায় তিনি রাজমিস্ত্রি, কিন্তু তার যে-হাত ইট বালি সিমেন্ট ঘাটে, সেই হাত-ই কথা বলে  ওঠে গল্পে ,কবিতায় ,আঁকায়। একটি উপন্যাস সহ ইতিমধ্যেই তিনি লিখে ফেলেছেন পাঁচটি গ্রন্থ ।



 কবি কল্পোতম-এর তিনটি কবিতা 

 ২৭.


সকালের অনুজ্জ্বল 

সূর্যকে হাতে নেওয়ার ইচ্ছা অনেকেরই।

অনেকেই ছবি তুলে  

অসম্ভব

সেই সাধ মিটিয়ে নেই কোনোমতে

তারপর দেখানোর পালা।


বিকেলের সমুজ্জ্বল

সূর্যকে সাথে নেওয়ার ইচ্ছা অনেকেরই।

সেখানেও তার মূলে

অসম্ভব  

সরলতা থাকে সূর্যের মনোরথে

তাছাড়া কে ছুঁই তাকে শালা।


দুপুরের ঐ উজ্জ্বল

সূর্যকে কাছে নেওয়ার ইচ্ছা অনেকেরই

চিরকাল আছে ঝুলে,

অসম্ভব

বলি নর-কপি পায়নি কোনোমতে

এটাই তো আকাঙ্খার জ্বালা।


যখন চোখের জল

দুঃখকে সয়ে বাক্যহীন ঝরে অনেকেরই

প্রভাকর যায় ভুলে,

অসম্ভব

উত্তাপ প্রশমিত করে কোনোমতে

গেঁথে দেয় প্রেমের সে মালা



২৮.

কোথায় খুঁজছো বাঁশি

একদিন না বাজিয়ে থাকলে না হয়,

চলো যাই নদীচরে

মনের সকল কথা লিখে রাখি

কেটে কেটে বালুর বলয়।


কোথায় খুঁজছো হাসি

এ সময় না হেসেই থাকলে না হয়,

চলো যাই চুপ করে

মনের সকল ব্যথা দিয়ে ঢাকি

হেঁটে হেঁটে কাটুক সময়।


কোথায় গেলে গো ভাসি

এ সময় না ভেসেই থাকলে না হয়,

চলো উঠি ধুপ করে

পাড়ের উপর শেষ জলরাশি

সেখানেই কোনোমতে রই।


কখনো ফুটবে হাসি

এ সময় অপেক্ষায় থাকলে না হয়,

ফুল ফোটে চুপ করে

ব্যথা আর বেদনাকে দিয়ে ফাঁকি

সেখানেই আমাদের জয়।



২৯.

শান্ত মেয়ের মতো ঘুমায় রাত

জেগে থাকি আমি

এক একটা কবিতা আসতে চায় নামি

দুলে দুলে, হয়তো মহাভুলে

আমার মনের পাতা জুড়ে।


শান্ত মেয়ের মতো বাড়ায় হাত

অপলক আমি

এক একটা পদ-ছাপ যেন মহাদামি

দুলে দুলে পড়ছে যেন ফুলে

মনের আকাশ থেকে উড়ে।


কান্ত আলোর মতো তোমার নাথ

ধীর পায়ে নামি

এক একটা মুখে পড়ে, দেখে অন্তর্যামী

চুলে চুলে বইছে কালো চুলে

চেতন মনের বাধা ফুঁড়ে।


শান্ত পিতার মতো দাঁড়ায়ে সাথ

ধারাসুখে নামি

এক একটা আধো কথা শুনে শুনে জানি

কি আছে সেই কথাদের মূলে

মনের বেদন সব ছুঁড়ে।

২টি মন্তব্য: