এই বিভাগে আমরা এমন দু-একটি কবিতা পড়ব , যে কবিতা আমাদের অন্তর্লোকে বিস্ময় সৃষ্টি করে শুধু নয় ,আমাদের কবিতা পড়ার আনন্দে অবগাহন করায় , প্রতি দিন প্রতি মুহূর্তে | এই পর্যায়ের কবি যে সবসময় বিখ্যাতই হবেন , এমনটা নয় , তিনি অখ্যাত তরুণ তরুণতর কবিও হতে পারেন , কিন্তু ,শর্ত একটাই ,কবিতাটি যেন আমাদের মর্মলোক স্পর্শ করে | স্বরবর্ণ / ২ সংখ্যায় 'প্রিয় কবি প্রিয় কবিতা ' বিভাগের কবি হলেন কবি কামাক্ষীপ্রসাদ চট্টোপাধ্যায় |
ধুলো
ধানের রঙের মতো হেমন্তের রৌদ্র ভরা বিকেল
এতো আলো এতো আকাশ এতো প্রাণ
সব মিলিয়ে পরিপূর্ণ একটি ফলের মতো মনে হয়।
সবচেয়ে অবাক লাগে যখন মনে করি
আমি বেঁচে আছি আমি দেখছি আমি ভালোবাসছি।
অবাক লাগে ভাবতে :একদিন এদের আমি দেখিনি
একদিন এদের আমি দেখব না
এতো আলো এতো আকাশ এতো প্রাণ
ধানের রঙের মতো হেমন্তের রৌদ্র ভরা বিকেল ।
একদিন আমি এদের পাবো না
কিন্তু একদিন যে এদের পাবার আনন্দ
আমার মনের মধ্যে বিন্দু বিন্দু সঞ্চিত হয়েছিল
তাদের রেখে গেলুম, ছড়িয়ে দিলুম
গ্রামের সোনালি ধুলোর পথে।
তামাটে পায়ের ফাটা চামড়ার চাপ
এই আনন্দকে জীর্ণ করুক।
শিশু খেলা করুক এই ধুলোয়,
মাঠের ফসলের আর হেমন্তের শিশিরের গন্ধ
ছড়িয়ে পড়ুক এই সোনালি পৃথিবীতে ---
বাংলাদেশের এই আশ্চর্য ধুলোয়।
হেমন্তের এই আলোর বন্যাময় শান্ত বাংলাদেশের গ্রাম
যত দূর দেখা যায় সোনার ফসল
মাঠের উপর স্তরের মতো নুইয়ে পড়েছে
শান্ত নির্বাক সূর্যের উষ্ণ কোমল স্পর্শ
একটু ঠান্ডা বাতাস বইলো
বাঁশবন শিরশির করছে
একটা ফড়িং লাফিয়ে চোরকাঁটার বনে অদৃশ্য হলো
আকাশে শঙ্খচিল ---
হঠাৎ দূরের মাঠ চিরে কালো মালগাড়ি চলে গেল
হেমন্তের পরিপূর্ণ পড়ন্ত বেলায়
কী নিরর্থক ভাবা : একদিন ছিলুম,
একদিন থাকবো না।

সত্যি, কবিতা পড়বার আনন্দে অবগাহন সম্পূর্ণ হলো যেন একবার...
উত্তরমুছুনআহা
ঠিক বলেছ ধৃতিরুপা। সেই ছোটবেলা থেকে কবিতাটা পড়ছি কিছুতেই পুরনো হয় না।
উত্তরমুছুন