কৌশিক সেন * দু’টি কবিতা
নাল
সাজছি বুঝি আজ, দরজাপাড়ে ফুরিয়ে গেল ঘর
অস্ত গেল সূর্য এবং চাঁদ, উদয় হল ঢোলকলমির ফুল
এসব কথা ঘোড়ার মুখে শোনা, শানানো খঞ্জর
তাক করেছি ঊর্ধ্বে তোলা হাত, কাঁপেনি একচুল।
চুপ করে শোন, ল্যাঙটা ছেলের গন্ডাকাটা দেশ
তাপ বেড়েছে, মায়ের থানে সিঁদুরমাখা শূল
ঝালমুড়িতে লঙ্কাকুচি, গল্পে জাগে পীরবাবা, দরবেশ
ঘোড়ার মুখে কুলূপ আঁটা, জমাটি বিলকুল।
সঠিক জানি, বিষুব ছিল নষ্টছুঁড়ির নাল
আলতাছাপে ছড়িয়েছিল ঝড়; বেআক্কেলে ঘ্রাণ
মেঘ বলেছে, ভাঙবো যদি ঘর সবকিছু বাঞ্চাল
সানাই বাজুক বৃন্দাবনি রাগে, শ্রাদ্ধ অনুষ্ঠান...
ওড়না যদি রাখিস খুলে, রাখ। মুষ্টিভরা সুখ
ছড়িয়ে দেব। ঠোঁট ছোঁয়াব, বাড়িয়ে দিলে বুক।
পশমিনা
লোমওয়ালা যদি, সাযুজ্য রেখেছে যদি ছাগলের দল
মাহাত্ম্য বড়ই জটিল, নিকাশে ভেঙেছে রাজটীকা
দুরের বাসনা তবু বাষ্পীভূত স্বেদ, যদি তিলমাখা
মেঘের শিয়রে জাগে রাত, রূপকথা মিশনারি স্কুল...
ঘন্টা বাজে, মঠ নয় ত্রিপিটকে মৃত গন্ধরাজ
ব্যাজস্তুতি শুনে চলা সাবালক ত্রিবিধাসাধন,
জ্যামে ও মাখনে রাখা ত্রাণ, ছুরিতে সময়
যমের দুয়ার থেকে ঘুরে আসা ব্যাপিকা আওয়াজ।
কর্কশ যদি, মিয়ানো মুড়ির খিদে ভেসে যায়
পালতোলা নদী, দ্রাবকীয় কত বুমেরাং
অজবীথি তারকার নাম, পালানের টানে গজরায়
হাতছানি এড়াতে পারিনি, আদিম আরাম...
ঘটমান সেতুদের ভাষা, জানে নাকি ভোরের বাতাস
নাগর ছেড়েছে যদি তোকে, আমাকেই সতীন পাতাস।।
***************************************************************************************
জন্ম :২২ সেপ্টেম্বর ১৯৭৬ বহরমপুর, মুর্শিদাবাদে। ছাত্রজীবন ও বেড়ে ওঠা বহরমপুর শহরেই। কলেজ উত্তীর্ণ হওয়ার পর কঠোর জীবন সংগ্রাম। সাতাশ বছর বয়সে দিল্লীতে আগমন। কেন্দ্রীয় সরকারী কর্মচারী। আঠেরো বছর ধরে দিল্লীর বাসিন্দা। দিল্লী ও দিল্লীর বাইরে বেশ কিছু পত্র পত্রিকায় লেখা প্রকাশিত ও প্রশংসিত। প্রকাশিত কাব্যগ্রন্থ : রাই জাগো গো, কর্ষণলিপি,পাখিঘুম।







কৌশিকদার লেখা বরাবরই ভালো লাগে। তার ভাবনার স্তর চমকে তোলে । লিখন শৈলী আলাদাভাবে প্রশংসার দাবি রাখে।
উত্তরমুছুন