শনিবার, ১৪ আগস্ট, ২০২১

গৌরীশঙ্কর দে




কবিতার যে রহস্যময় আলো আঁধার, ব্যক্ত অব্যক্তের সোনালী মায়া,তা যেন কবি গৌরীশঙ্কর দে -এর কবিতায় ইশারায় ইঙ্গিতে ফুটে ওঠে, কখনও ছন্দে, কখনওবা  ছন্দাতিরিক্ত বোধে।' আলোর সুড়ঙ্গে এত কালো মেখে কে শুয়ে রয়েছে? সেই কী আমার মৃত শরীরের ধ্রুপদী প্রলাপ, উচ্চাকাঙ্ক্ষা, বিপন্ন কান্নার স্বরলিপি ভেঙে স্রোতে ভেসে গেলে সে কী অভিশাপ?'



কবি গৌরীশঙ্কর দে-এর দুটি কবিতা 


রাগ দেশ


শ্যাম কল্যাণের রঙ 

লেগেছে মরদেহের চোখে। 

মায়াময় চোখের দীঘল নীরবতা—

আমাকে ফিরিয়ে দাও আত্রেয়ীর বিষন্ন আলোকে,

শ্রদ্ধা এসে মুছে দিক ঝড়, বিষন্ন ভয়াবহতা।


আলোর সুড়ঙ্গে এতো কালো মেখে কে শুয়ে রয়েছে?

সেই কী আমার মৃত শরীরের ধ্রুপদী প্রলাপ,

উচ্চাকাঙ্খা, বিপন্ন কান্নার

স্বরলিপি ভেঙে স্রোতে ভেসে গেলে সে কী অভিশাপ?


তবে কেন এতো ছটফটানি—

আমি কী তোমার মতো অনিদ্রাকে জানি?


আমি জানি হোসপাইপ দূরে গিয়ে কীভাবে ঘুমায়—

চোখের গর্ভে যে রেটিনার তীব্র সালোকসংশ্লেষে,

তুমি অনুভব করতে পারো, স্বপ্নে কোথায় সে যায়—

পূরবীর মধ্য দিয়ে ইমনে অক্লেশে। 



 স্নানযাত্রা


কখনো ঝঙ্কৃত সুরপ্রবাহে

বেসুরো কখনো কালো নয়নে। 

উদ্ধত অঞ্চলে সুচারু জাগ্রত 

অনন্তে নিদ্রিত শয়নে।।১


কাঞ্চীভরণময়ী ঘৃত বিল্লপত্রে

প্রজ্জ্বলিত হোমারতি দৃপ্ত। 

কখনো সামান্য সখা নীলাভ তোয়ধি 

জলে প্রসন্ন বিমূর্ত পরিতৃপ্ত ।। ২


অঞ্জিষ্ঠতটস্থ প্রাণে স্নিগ্ধ বারিধারা 

অপলক চক্ষুদ্বয়ে গভীর প্রকোষ্ঠ। 

স্নানার্থে ব্যকুল জৈষ্ঠ্য পূর্ণিমা তিথিতে

ঝল্লিকাসিক্ত অধরোষ্ঠ।। ৩


কর্ণপটাহে ভক্ত গর্জনমুখরিত 

ধরণীপ্লব উন্মত্ত বালচঞ্চল।

স্বর্ণগোলকদ্বয় বিশাল চক্ষুময়

বাঁচাতে উদ্যত অবিচল।।৪


জগন্নাথঃস্বামী নয়নপথগামী

ভবতু মে অনিবার্য। 

জ্বরজ্বালা চৌদ্দদিন পাণ্ডুফলে

কোয়ারিন্টিনও শিরোধার্য।। ৫


অণ্বেষণে ভয় হয় কী প্রসঙ্গে লীলাময় 

নিঃশব্দচরণে প্রথাগত। 

বিশ্বাসও ঈশ্বরের স্নায়বিক দ্বন্দ্ব 

বন্ধদ্বার অশ্বিনীকুমার প্রথামত।। ৬


উপস্থিত গজমুখী সেজে কী বাঁধালে এ কী

শোভনীয় নয় এই কার্য।

অতিমারী তরঙ্গিত চরাচর আতঙ্কিত 

তবু স্নান, সে কি অনিবার্য।। ৭



গৌরীশঙ্কর দে-র কবিতার বই 









কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন