তাঁর কবিতার হিরন্ময় দ্যুতি অন্তরের ভিতর বাহির আলোকিত করে দেয়। মুগ্ধ হওয়া ছাড়া পাঠকের কোনও উপায় থাকে না। কবি বন্ধুসুন্দর যখন বলেন ' ঔদার্যে সংযমে দুই আঙ্গুলের ফাঁকে রেখে আসি আমার অনাদি কালের উপার্জন '। তখন ইচ্ছে হয় ,জীবনের যা কিছু খরচ হয়ে গেছে ,কবির ' উপার্জন ' থেকে কিছুটা আমরা সঞ্চয় করে রাখি।
কবি বন্ধুসুন্দর পাল-এর দুটি কবিতা
উপার্জন
১.
ঔদার্য সংযমে দুই আঙ্গুলের ফাঁকে রেখে আসি আমার অনাদি কালের উপার্জন । তোমার খুচরো গা থেকে তখন গমকলের গন্ধ ছাড়ে, আমি তোমাকে ভানিয়ে দেখি, তুমি কেমন উচ্ছলতায় ফুলেফেঁপে উঠছ । এই যে সহ্যের উদাসীনতা, এই যে কৌমার্যবিহীন পরমান্ন, আমাকে আসন পেতে বসিয়ে রেখেছে অলকানন্দায় । আমার পিঠ থেকে গড়িয়ে পড়ছে উন্নাসিক আদর । ভিজে যাচ্ছে গমক্ষেত । হে উচ্ছৃঙ্খল, আমাকে সাধক ভেবে সান্ত্বনা দিও না । মাটির তাওয়ায় সেঁকে আমাকে তুলে আনো, দ্যাখো, আমি কেমন দুদিক চুঁয়ে গেছি অবলীলায় । আর তুমি কলপাতায় শরীর জড়িয়ে ক্রমশ কনেবউ হয়ে উঠছ...
২.
তোমার প্রিয় রঙ করা নখের দিব্যি খেয়ে আমার পেট ভার করে আসে । এই যে শরীরী স্থায়িত্ব, আমাকে নিশ্চিত করতে করতে কলসির জলে মুখ ডুবিয়ে ধরছে । আমার অমরত্বের কোনো স্থায়ী ঠিকানা নেই, তাই তোমার পরিমার্জিত পিছনের দরজা দিয়ে পালিয়ে যাওয়ার অভ্যাস আয়ত্তে আনতে পারিনি জেনেও এখনও তুমি সামনে এসে নীচু হয়ে দাঁড়াও । আমি অপলক দৃষ্টির সম্মানহানি কে সমর্থন করি বলে যে কোনো অন্ধ মেয়ের চোখে চোখ রেখে আদি অন্ত দাঁড়িয়ে থেকে কাটিয়ে দিতে পারি এ জীবন । এ কথা হরিণেরা যাতে জানতে না পারে, তাই তাদের চোখের উপমা নিয়ে একটা কাজলের দোকান দিয়েছি । তুমিও কিনতে এলে ফেরাব না...

কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন