সৌমিত বসু * দু’টি কবিতা
জীবন এক আশ্চর্য দূরবীন
১৬.
রোজ অচেনা হয়ে যাচ্ছে মা-বাপ।
রোজ জুতোর ফিতে টাইট হয়ে বসে যাচ্ছে পায়ে।
রংবদল এখন কোনো বিষয়ই নয়
যেন করিডোর দিয়ে হাঁটতে হাঁটতে যে কোনো
ক্লাসে ঢুকে পড়া
যেখানে ছাত্ররা একমনে তাকিয়ে থাকে দিদিমনির
ফিনফিনে সাদা ব্লাউসের ভেতর কুচকুচে
কালো ব্রেসিয়ারের দিকে
আমি দুদিকে তাকাতে তাকাতে উঠে পড়ি
ব্রিজের ওপর।
কখনো কখনো আতঙ্ক ভয়ে শুয়োপোকা হয়ে যায়
কখনো কখনো পাটিগণিত হয়ে যায় ছোটবেলাকার নামতা
আমি সেই অবহমানের পাশে এসে বসি
কোটের ভেতরের সমস্ত ভয় উড়িয়ে দিই জাদুকর হয়ে
অজান্তে কাঁধের ওপর চেপে বসে ইস্কুল
আমিও রমণ শেষে রমণীর মতো ফিরে আসি।
রোজ অচেনা হয়ে যাচ্ছে জীবন।রোজ রোজ
ঘষাকাচ হয়ে যাচ্ছ তুমি।
১৭.
একটি রক্ত হাত তুলে অন্য একটি রক্তকে ডাকছে
সারাপাড়া সুনসান
কুকুরগুলোর গলায় বিঁধে রয়েছে আলপিন
ভীরু জোৎস্নায় চাঁদ একবার মুখ বাড়িয়ে আবার
হারিয়ে যাচ্ছে পাতার ঢেউয়ে।
একটা রক্ত সুর করে কান্না ছড়িয়ে যাচ্ছে পাড়ায় পাড়ায়।
মায়েরা চোখ বুজে দরজা খুলে সামনে এসে দাঁড়াচ্ছে,
পেতে দিচ্ছে আঁচল যাতে কান্নার টুকরোগুলো
মাটিতে না পড়ে
যাতে গণতন্ত্র হাতে করে ডাক দিতে পারে সন্ততিরা,
যাতে কোনোদিন কোনো কান্না কাউকে
ডাক পাঠাতে না পারে।
একটি কান্না গড়িয়ে আসছে দরোজার নিচ দিয়ে।
আমরা চিনতে পারছি
কিছুতেই মুছতে পারছি না।






চেনা পৃথিবীতে অচেনা অনুভূতিগুলিকে মুখর করে তুললেন কবি দুটি লেখা জুড়ে। সাবলীল উপমার প্রয়োগ বেশ মন ছোঁয়া।
উত্তরমুছুন