রবিবার, ১৫ ডিসেম্বর, ২০২৪

তাপস কুমার দে





তাপস কুমার দে * দু’টি বিতা 

 


স্মৃতির ভাঙা আয়না 


সোনাবউকে দেখার সৌভাগ্য হয়েছিল কোন এক দুপুরে! 

ঠিক যেন ঘর জুড়ে  উদিতসূর্য কুসুম আগুন!


জানালার পাশে দাঁড়িয়ে বৃষ্টি বোধক দৃষ্টিতে,

চায়ের পেয়ালা হাতে মুখস্থ কবিতার মতো একজনা!


আমাকে সে পড়েছিলো তখন   প্রশ্নের বানানে-

সুন্দরের অমৃত সুরা পানে, তৃপ্ত শ্বাস ভেঙে ভেঙে। 

দুপুর খাবারের আয়োজনে  অনুরোধটুকু তার উড়িয়ে দিয়ে 

হেসে ছিলাম আনমনে। 


বৌমনি! কেমন আছো এ-ই হতভাগা দেশে?


সিরাজ ভাই এখনো আগের মতো  বাউন্ডুলে আর রগচটা 

তিলোত্তমা! আদর ভাঙা আয়েশি ছিলে যে তুমি বৌমনি! 












দুর্গা ঠাকুর দেখলাম 


মন্ডপে মন্ডপে  দুর্গা ঠাকুর দেখলাম সুসজ্জিত আয়োজন

নির্জীব দুর্গতগ্রস্থ এক নারীকে দাড়ানো দেখলাম, পাথর যেন।

কোথায় দুর্গতনাশীনী দুর্গা?  কোথাও নেই!


কপাল শূন্য কালবেলায় উপচে পড়েনি চিত্রকলা, গান, কবিতা

পাঁজরে লেখা হয়নি নয়নতারা  দুপুরের গনগনে রাগ

দুঃখ বুনিয়াদে তর্জমা হয়েছে প্রকাশ্য সুখের শান্তি জল 

প্রকাশ্য লুকানো বর্বতাগুলো ফল প্রশাদি থালায় থালায় 


নির্লজ্জ আমরা বেদানা শুকানো লাল দানা  

বারবার ঠুকরে যায় অস্তিত্ব নিরোধ জলযোগ

কাকে বলবো ঐ নারী আমাদের বোধ সংস্কারের তৃতীয় চোখ। 


সবিশেষ পুড়তে থাকা ধূপের ক্রুদ্ধ ধোয়া উড়ে যাচ্ছে 

প্রদীপ জ্বলা আগুনের হাঁটু মুড়ে বসে পড়া ছায়া 

সলজ্জ মিশে আছে হাতের অস্ত্র জোছনা 

প্রকাশ্য রচিত আলোকসজ্জা উপহাসের দ্যুতি ছড়াচ্ছে যেন।

সব দেখে কুড়িয়ে নিলাম অবুঝ শিশুটির ফেলে যাওয়া পুতুল 

দুর্গা।


হয়তো দুর্গতনাশীনী দুর্গা ঘুমিয়ে  আছে নির্জীব পুতুলের অন্তর দৃষ্টিতে

শিশুটি বড় হবার অপেক্ষায়!


দুর্গতনাশীনী দুর্গা নেই, কোথাও নেই 

দুর্গতগ্রস্থ এক নারীকে দেখলাম নির্জীব দাঁড়িয়ে। 

 









***************************************************************


তাপস কুমার দে 

 লেখালিখি শুরু--সেই স্কুল জীবন থেকে লেখালেখির হাতেখড়ি। 
 স্কুল জীবন থেকে বিভিন্ন রকম গল্পের বই পড়ার অভ্যাস গড়ে ওঠে এটা প্রবল হয় যখন আমার এক সহপাঠী বিভিন্ন রকম বই সংগ্রহের উদ্যোগ নেই কারণ সে পাঠাগার গড়ে তুলবে। আর এ কার্যক্রমে অংশ গ্রহণ করতে গেলে একটি বই দিয়ে অংশ গ্রহণ  করতে হবে। আমি অংশ গ্রহন করলাম এবং গল্প পড়তে পড়তে লেখার ইচ্ছে জাগে এবং একটি গল্প লিখেও ফেলি ওটাই আমার প্রথম লেখা। 
প্রভাব সৃষ্টিকারী লেখক অথবা কার কার লেখা পড়তে ভালো লাগে---- আমি যখন বেড়ে উঠি তখন হুমায়ুন আহমেদের যুগ তারপরও রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়, শরৎচন্দ্রের মতো লেখকদের লেখা ভালো লাগার তালিকায় উঠে আসে। 
আমি কেনো লিখি---- আত্মতুষ্টির জন্য খানিকটা তারচেয়ে বড়ো ব্যপার হলো মনুষ্যত্ব বিকাশের অবিচ্ছেদ্য অংশ যে সাহিত্য, তা নিজেকে ও সমাজকে বুঝাতে। যার ভেতর রয়েছে মহাজাগতিক আনন্দ। 
ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা ও তার বাস্তবায়নের  পদক্ষেপ ---- লেখালেখির ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা বলতে নিজের বই প্রকাশ করার আপ্রাণ চেষ্টা আর সেই লক্ষ্যে পান্ডুলিপির কাজ চলমান।  
 বেশকটি সাহিত্য সংগঠনের সাথে সম্পৃক্ত ছিলাম তার মধ্যে অন্যতম খুলনা সাহিত্য মজলিস,  খুলনা কালচারাল সেন্টার। এখনও সম্পৃক্ত আছি খুলনা কালচারাল সেন্টারর সাথে।  

1 টি মন্তব্য:

  1. শীতকালীন সূর্যকে "উদিতসূর্য কুসুম আগুন" হিসেবে দেখিয়েছেন কবি। অপূর্ব উচ্চারণে ঋদ্ধ দুটি লেখা।

    উত্তরমুছুন