তাপস কুমার দে * দু’টি কবিতা
স্মৃতির ভাঙা আয়না
সোনাবউকে দেখার সৌভাগ্য হয়েছিল কোন এক দুপুরে!
ঠিক যেন ঘর জুড়ে উদিতসূর্য কুসুম আগুন!
জানালার পাশে দাঁড়িয়ে বৃষ্টি বোধক দৃষ্টিতে,
চায়ের পেয়ালা হাতে মুখস্থ কবিতার মতো একজনা!
আমাকে সে পড়েছিলো তখন প্রশ্নের বানানে-
সুন্দরের অমৃত সুরা পানে, তৃপ্ত শ্বাস ভেঙে ভেঙে।
দুপুর খাবারের আয়োজনে অনুরোধটুকু তার উড়িয়ে দিয়ে
হেসে ছিলাম আনমনে।
বৌমনি! কেমন আছো এ-ই হতভাগা দেশে?
সিরাজ ভাই এখনো আগের মতো বাউন্ডুলে আর রগচটা
তিলোত্তমা! আদর ভাঙা আয়েশি ছিলে যে তুমি বৌমনি!
দুর্গা ঠাকুর দেখলাম
মন্ডপে মন্ডপে দুর্গা ঠাকুর দেখলাম সুসজ্জিত আয়োজন
নির্জীব দুর্গতগ্রস্থ এক নারীকে দাড়ানো দেখলাম, পাথর যেন।
কোথায় দুর্গতনাশীনী দুর্গা? কোথাও নেই!
কপাল শূন্য কালবেলায় উপচে পড়েনি চিত্রকলা, গান, কবিতা
পাঁজরে লেখা হয়নি নয়নতারা দুপুরের গনগনে রাগ
দুঃখ বুনিয়াদে তর্জমা হয়েছে প্রকাশ্য সুখের শান্তি জল
প্রকাশ্য লুকানো বর্বতাগুলো ফল প্রশাদি থালায় থালায়
নির্লজ্জ আমরা বেদানা শুকানো লাল দানা
বারবার ঠুকরে যায় অস্তিত্ব নিরোধ জলযোগ
কাকে বলবো ঐ নারী আমাদের বোধ সংস্কারের তৃতীয় চোখ।
সবিশেষ পুড়তে থাকা ধূপের ক্রুদ্ধ ধোয়া উড়ে যাচ্ছে
প্রদীপ জ্বলা আগুনের হাঁটু মুড়ে বসে পড়া ছায়া
সলজ্জ মিশে আছে হাতের অস্ত্র জোছনা
প্রকাশ্য রচিত আলোকসজ্জা উপহাসের দ্যুতি ছড়াচ্ছে যেন।
সব দেখে কুড়িয়ে নিলাম অবুঝ শিশুটির ফেলে যাওয়া পুতুল
দুর্গা।
হয়তো দুর্গতনাশীনী দুর্গা ঘুমিয়ে আছে নির্জীব পুতুলের অন্তর দৃষ্টিতে
শিশুটি বড় হবার অপেক্ষায়!
দুর্গতনাশীনী দুর্গা নেই, কোথাও নেই
দুর্গতগ্রস্থ এক নারীকে দেখলাম নির্জীব দাঁড়িয়ে।
***************************************************************





শীতকালীন সূর্যকে "উদিতসূর্য কুসুম আগুন" হিসেবে দেখিয়েছেন কবি। অপূর্ব উচ্চারণে ঋদ্ধ দুটি লেখা।
উত্তরমুছুন