রবিবার, ১৫ ডিসেম্বর, ২০২৪

খুকু ভূঞ্যা




খুকু ভূঞ্যা * দু’টি কবিতা 


একক নির্জনতা 

হাসির আড়ালে বেঁচে থাক আদুরে শ্রাবণ 

জীবনের তিন ভাগ অন্যের,বাকি একভাগ হোক  নিজস্ব 

এখানে কাউকে কোনো জবাব দেব না 

বৃষ্টি কেন ভালো লাগে, প্রিয় ঋতুর নাম শীত কেন

ছায়ার কাছে কেন বসে থাকি নির্জন পদ্মাসন 

কেনই বা ---


জীবনের তিন ভাগ নষ্ট হতে দিয়ে সূর্যোদয় দেখা হয়নি 

পর্ণমোচি মুখের দিকে তাকিয়ে কেউ বলেনি  বেঁচে আছো?

চোখের তলায় এত কালি কেন?

ভাঙা স্বপ্নের কাছে কেন বসে থাকো সারারাত 

ঘুমোতে যাও, ভোর হয়ে আসছে 


বহুকষ্টে একভাগ বাঁচিয়ে খানিকটা সবুজ আছি 

তিনভাগের ব্যস্ততা এখানে উঁকি দিওনা 

এখানে আমি স্বজন সুজন হীন একক নির্জনতা 

অশ্রু অক্ষরে সমর্পিত, ফিরে গেছে ঈশ্বর মাঝরাতে ---













যখন মাথায় ঝনঝনিয়ে ওঠে বিষ 

 ইচ্ছে হলো পুরনো স্মৃতিমুখ নাড়াচাড়া করি 

একতারা বাজিয়ে চলে যাওয়া বাউলকে ডেকে বলি এসো 

সেই গানটা ধরো, খাঁচার ভিতর অচিন পাখি---- 

কিছু দূরে ধান কাটতে কাটতে বাবা হাঁক পাড়বে 

কাইহে - গোঁসাই ঠাকুর যে --মেলা দিন পর 

দুফুরে ভাত খেয়ে যেও 

খুশি মনে আরো এক গান ধরে সে 

শীতের আকাশে যুবক সূর্য আবেগে কেঁপে কেঁপে ওঠে 

চরাচর ডুবে যায় গেরুয়া হৃদয়ের অতল 


আর নিয়ে যেওনা ওখানে আলপথ জীবন 

 যে যেখানে আছে থাক 

নগ্ন অর্ধ নগ্ন রক্তাক্ত 

মাঠের শেষে শীতল ছায়ায় বসে তুমি একের পর এক শেষ 

করো ধ্রুপদী সঙ্গীত 

ভাত খেতে বেলা বয়ে যাক 

সব পাখি ফিরে যাক ঘরে 

কুঁড়ি হৃদয়ে রুয়ে দাও সারস আকাশ 


সময়ের এত আকুতি 

মাথার ভিতর ঝনঝনিয়ে ওঠে বিষ 

আত্মহত্যা করলে হয়, কিন্তু--

এতই কি সস্তা -- প্রশ্বাস রেখে যাব দিতি পুত্রের পা'য়

তারচেয়ে স্মৃতিকণা বেঁধে আঁচলে হাঁটা যাক একা একা 

লাশ সময় আমাকে খুঁজতে এসো না 

আমি অন্ধকারের কেউ 

আমি কোজাগরী পূর্ণিমা 













************************************************************************************************



খুকু ভূঞ্যা

জন্ম: ১৯৮৪ সাল ২২শে অক্টোবর । পঃ মেদিনীপুর জেলার পিংলা থানার অন্তর্গত জলচক সংলগ্ন জঁহাট গ্ৰামে। মা: শ্রীমতী রাধারানী মাইতি । বাবা: শ্রী রবীন্দ্রনাথ মাইতি। শিক্ষা: মাধ্যমিক । পেশা: গৃহবধূ।প্রকাশিত গ্ৰন্থ: ১: লেপের আদর খোঁজে ফুটপাত(২০১৫ সাল) ২: মাটিপাঠ (২০১৮) ৩: চন্দনে সাজিয়ে দাও কান্না(২০২২) ৪: ধুলোয় আঁকা অন্ন দুপুর(২০২২) ৫: নদী অথবা নাভিকথা(২০২২) ৬: কান্না যত গভীর হবে( ২০২৪)


1 টি মন্তব্য:

  1. কবির নির্মোহ উচ্চারণ বরাবরই আমাদের মুগ্ধ করে। অন্তরের টান খুঁজে পাই এই লেখায়।

    উত্তরমুছুন