অভয়া দশমী * গৌরীশঙ্কর দে
১.
যে লুপ্ত প্রণয় তুমি গুপ্ত রেখেছিলে আমাদের
দুজনের মধ্যে, আজ তার বাঁধ ভেঙে দিলে,
প্রোটন-ইলেকট্রন-নিউট্রন কণা যেখানে ট্রিনিটি
ভেঙে যায় অথচ প্রকৃতপক্ষে ভাঙে না কিছুই...
লেপটন ভেঙে যায় প্রথমে ইলেকট্রনে দশম মন্ডলে
আসীৎ তমসা গূঢ়মগ্রেহমের অন্ধকার কোলে,
দুধ-জল এক কারণ সে পরম তমসা, টিটি
নেই, কে দেখবে টিকিট, ট্রেন চলে প্রতিপলে ঢের
সময় গড়ায়, মৃত্যু দীর্ঘ দাবা খেলে, কোনো রুই,
কাৎলা, মৃগেল সে নয়, বঁড়শি ডুবে আছে স্থির, মাচা বেয়ে পুঁই—
২.
সুদীর্ঘ পতন হয় 'সা' 'নি' এসে মেশে যেই স্পেস নড়ে যায়,
সময় ঘামায় না সে মাথা, ফাৎনায়, দাবার বোর্ডে
কেবল বেড়ায় ভেসে চিদাকাশে কী অবলীলায়
চলে যায় পশ্চিম দিগন্তে জয়সীমা, চান্দু বোরদে,
অবশেষে সুনীল গাভাসকার, সৌরভ গাঙ্গুলি...
শতেক শতাব্দী ধরে ফুটে ওঠে গাছে ফুলগুলি...
মানুষ তাদের নিয়ে দেবতার পায়ে ছোঁড়ে ওদিকে আর জি করে
কেঁদে মরে বিচারের আশায় আশায় অভয়ার কায়াহীন
ছায়া, মাথা খোঁড়ে মিছিলে মিছিলে ওরা রাত্রিদিন
কাঁদে, প্রতিবাদে অন্ধকার রাতে অতন্দ্র প্রহরে।
৩.
দশ পংক্তি বিভাজিত দশদিক ঢাকা হাহাকারে,
গ্রহ থেকে গ্রহান্তরে নীরবে ছড়ায় এক তীব্র প্রতিবাদ—
যেখানে দাঁড়ায় মেঘ কিছুক্ষণ বন্যা এসে শেষে কাটা ঘা'য়
লবণ ছিটিয়ে তাকে আরো গূঢ়তর রুদ্ধ দ্বারে
বন্দী করে রাখে ঘোরতর হিটলারি কায়দায়,
পুড়ে ছাই হয়ে যায় জতুগৃহের সে আগুনে নিরপরাধ
অন্য পাঁচ ভাই, ভাবি তাই বিচার কোথায় মহাভারতের
কাল থেকে আজো! দুঃশলাকে বিবাহ করাই কি জয়দ্রথের
ভুল ছিল, রথ থেকে এক ধাক্কায় মাটিতে ফেললে ট্রিনিটির
আজ্ঞায় অর্জুন ছুঁড়ে দেন পুত্রের মায়ায় প্রতিহিংস্র তীর?
*************************************************************************************************
গৌরীশঙ্কর দে
বাংলা কবিতায় একটি পরিচিত নাম। ছন্দকুশলী এই কবি প্রতিনিয়ত আমাদের কাব্যপিপাসা পরিতৃপ্ত করে চলেছেন। নির্বাচিত কবিতাসহ এ পর্যন্ত আটটিরও বেশি কাব্যগ্রন্থ তিনি রচনা করেছেন। তাঁরকয়েকটি উল্লেখযোগ্য কবিতার বই ---অশ্রু প্রপাতের নিচে * স্খলিত স্বপ্নের নীড় * ভাষামাতৃক্রোড়*আদিসপ্তগ্রাম * আশির বাদকের পত্রলেখা*অনৈশ্বর্য * নির্বাচিত কবিতা*
আমার নিভৃতাবাস




কবির অন্তর্দৃষ্টির সুচারু প্রয়োগ এ কবিতার সম্পদ। খুব ভালো লাগলো।
উত্তরমুছুন