রবিবার, ১৫ ডিসেম্বর, ২০২৪

জবা ভট্টাচার্য

 



জবা ভট্টাচার্য * দু’টি কবিতা 






সেই_তো_আবার_কাছে_ডাকলে

ডাকলেই যদি সেই হারানো মেঘনামে

মাঝে  মুছে দিলে  কয়েক দশক

কেন ?


হাজার ডেসিবেলে বুকের ভেতর

আমজাদের সরোদ-- পরজ বসন্ত ধুন

প্রথম পরশ কুমারীর মতো,আরক্ত লজ্জায়

কেঁপে ওঠে  শেষ গোধূলি।

পাহাড়ি পথের পাকদন্ডী

চা বাগানের  প্রেক্ষাপটে

মেঘ কুয়াশার যুগলবন্দি

অবিন্যস্ত চুলের ফাঁকে, সাদা কালোর আলতো ছোঁয়া

আকাশ নীল চোখের তারায়,জিজ্ঞাসাদের জলোচ্ছাসে

প্রাচীন  এ নাও টলোমলো।


আমাদের  যায় নি সে দিন? সবই  আছে!


প্রতিটা মেঘ জানে, প্রতিটা জলকণা

প্রতিটা প্রহর জানে, হৃদয়ের আনাগোনা

মরা গাঙে বৃষ্টি নামে

দামাল হাওয়া উথালপাথাল

মুহূর্তে সব স্বপ্ন লাগে

দু কুল ভাঙে তুমুল তোড়ে

জলছবি লজ্জারা ঝরে পড়ে

অস্থির আবেগে,আরবি ঘোড়ার

ছুট ছুট  ছুট, চামড়ার  ভেতর

শাড়ির ভাঁজে, আদর আতর


আবার  দেখা শেষ প্রহরে

উজান ভাসায় বাঁধন ছিঁড়ে

সর্বনাশা শ্রাবণ  আসে

অবাধ আকুল প্রণয়োল্লাসে।













পাতা ঝরার বেলা


কাঁপনলাগা  দেউলিয়া  শীতের  ভোরে

কিংবা  রাতের শিশিরে, ঝরে যাওয়া

পাতাগুলো আমাদের বলতে পারেনি

কেন তাদের ডালপালার অঙ্গাঙ্গী সম্পর্ক ছেড়ে

অসহায়  ঝরে যেতে হয়।


অথচ তারা আঁকড়ে থাকতে চেয়েছিল

বৃক্ষের  জন্য ,  বৃক্ষের  হয়ে ,  বৃক্ষমধ্যে--


পাতা হারানোর রিক্ততায় দীর্ঘ ঋজু সাখী

করুণা  যাচে-- গভীর  বেদনতাপে ।


পাদপ শরীর জুড়ে আলোমেখে ফুটে থাকা

আশ্চর্য   দু একটি  ফুল  বলে ,

সবকিছু  ঠিকঠাক  হলে,

আমরাও  ওই  বসন্ত অরণ্যের মতো

আবার  সুখী  হবো।













**************************************************************************



জবা ভট্টাচার্য

জন্ম, বেড়ে ওঠা, পড়াশোনা সবটুকুই  কলকাতায়। বিবাহ সূত্রে  উত্তরবঙ্গে আসা। ভালোবাসা থেকে লেখালিখি করা। এ পর্যন্ত  সাজি, মান্দাস,  বিবর্তন, সহ বহু ছোট বড়ো লিটল ম্যাগাজিনে লেখা প্রকাশিত  হয়েছে। নিজের  একটি কবিতা সংকলন  আছে "মাধুকরী  মন"।

1 টি মন্তব্য:

  1. সুন্দর সুন্দর অনুভূতির দুলুনিতে "প্রাচীন এ নাও টলোমলো"। মুর্ত ভাবনার প্রকাশে কবি বেশ সফল।

    উত্তরমুছুন