মঙ্গলবার, ১৫ এপ্রিল, ২০২৫

দেবাশিস

 










দেবাশিস * দুটি কবিতা 


কপোত ও জলের গান



নিরুদ্দেশে যায় চলে যায় ছেড়ে যাওয়া বৈতরণী
নরকের দেশ ভেসে ভেসে যায় পৃথিবীর সমকোণে
জলের ঢেউ ফেনার গন্ধ মেঘেদের কানাকানি
তুমি শুধু ভাব জলের কথা উষ্ণ প্রস্রবণে।

সওদাগরের চাঁদের ভেলায় শ্যাওলা জমে যায় 
লাল প্রবালের প্রাচীর ফুঁড়ে বেহুলা জেগে ওঠে
আমার ভিতর লখিন্দরের পিঞ্জর অসহায়
ধাক্কা লাগে প্রাচীর ভাঙ্গে অলিখিত অস্ফুটে।

নদীর জলে ভেসে ভেসে আসে ফুলের মালা যত
তোমার পায়ে জড়িয়ে সাবেক শিশুর মত হাসে 
অচেতন জট খুঁজতে থাকে নিরাকার অবিরত
জলের আযান গাইছ তুমি গঙ্গা নদীর পাশে। 

নতুনের মত বাঁচার আশায় সলিল স্রোতের দিকে
হারিয়ে গিয়েছ নিরুদ্দেশে বাংলার ঘরে ঘরে 
অমাবস্যার অন্ধকারেও ঊষাকাল হয় ফিকে
অসীমকে তুমি ঘরেতে বেঁধেছ গাঙ্গেয় চরাচরে। 

সেই ঘরে রেখ জলের সুরাহা অনতিদূরে শপথ
বার বার মরে নরকের জালে দুরভিসন্ধি কপোত।

















কচ্ছপ 


তারপর তোমার চোখ থেকে 
নেমে এসেছিল দীঘল ছদ্মবেশী নির্বাসন

উদ্ধার হবে না জেনেও
সুতোয় বেঁধেছ পরজন্মের স্বল্পমেয়াদি দীর্ঘশ্বাস 
 
আত্মাহুতি দিয়েছিলে গতজন্মে
যেভাবে অলীক গহন ধুয়ে দেয় নিরপরাধ পূর্ণিমা রাত

তোমার জীর্ণ স্মৃতি থেকে নির্গত আগাছা 
প্রতিষেধক হয়ে ওঠে বিশল্যকরণীর ছোঁয়ায়

এ জন্মে চেয়েছ যত পরিপাটি আড়াল
উন্মুক্ত হয়েছে সব যত্নে রাখা পর্দানসীন মহার্ঘ্য 

সমস্ত কচ্ছপের আয়ু শেষ হয়
কচ্ছপের গতিতেই, তোমার চোখের দিকে চেয়ে --





















***********************************************************************************************


দেবাশিস সাহা


দেবাশিস সাহা। লেখায় পদবি ব্যবহার করেন না। নদীয়া জেলার কৃষ্ণনগর পার্শ্বস্থ কালিরহাটে থাকেন। পেশায় স্কুল শিক্ষক। প্রকাশিত কবিতার বই দুটি। সর্বভূতেষু (২০২৪, পারস্পরিক), ঘুণপোকা ও বিশল্যকরণী (২০২৫, গীর্বাণ)।






কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন