শার্দুলের আবির্ভাব
প্রভাত ভট্টাচার্য
পর্ব-৩
আমি এখানে এসেছি একটা বিজ্ঞাপন দেখে। কাগজে এবং সোশ্যাল মিডিয়ায় বলা হয়েছিল যে পিছুটান নেই এরকম কয়েকজন শক্তসমর্থ লোকের দরকার। কি কাজের জন্য, তা বলা হয় নি। বিতান বলল।
আমিই বিজ্ঞাপন দিয়েছিলাম। তা আপনার তো তাহলে কোনো পিছুটান নেই। কি করেন এখন?
তেমন কিছুই না। একসময় আমি সার্কাসে কাজ করতাম। তারপর ঘোড়দৌড়ের মাঠে জকির কাজ। আরো অনেক টুকটাক কাজ করেছি।
জেলে গেছেন কখনো?
একটু ইতস্তত করে বিতান বলল, দু একবার।
কি জন্য?
স্মাগলিং এর সঙ্গে জড়িয়ে গিয়েছিলাম কিছুদিন।
বন্দুক চালাতে পারেন?
হ্যাঁ, পারি।
বাঃ ,আপনি সব দিক দিয়েই উপযুক্ত আমার কাজের জন্য। আপনি আজ থেকেই আমার দলের লোক হয়ে গেলেন।
কিন্ত কাজটা কি?
পরে জানতে পারবেন। অত তাড়াহুড়োর কি আছে। আর হ্যাঁ, আমার ব্যাপারে, এবং কোনো ব্যাপারেই কৌতুহল দেখাবেন না। তাহলে অযথা সমস্যা হতে পারে। ঠিক আছে তো।
ঠিক আছে, বুঝতে পেরেছি।
শার্দুল ....হাঁক দিল অজয়।
একজন বিশাল চেহারার লোক এসে দাঁড়াল। চোখে তার ক্রুর দৃষ্টি। বিতানের অস্বস্তি হল তার তীব্র চাহনিতে।
অজয় বিতানের দিকে হাসিমুখে চেয়ে বলল, এ হল শার্দুল আমার অ্যাসিস্ট্যান্ট। এর আবার একটু মাথাগরম আছে, সমঝে চলাই ভালো। শার্দুল, যাও ওকে নিয়ে যাও, আর থাকার জায়গা দেখিয়ে দাও। আর ওর কাছে অস্ত্র থাকলে নিয়ে নাও।
শার্দুল মাথা নোয়ালো আর ইশারায় বিতানকে ওর সঙ্গে আসতে বলল।
ঘোড়াটার কি হবে?
ও আমার আস্তাবলে থাকবে। আর কোনো প্রশ্ন আছে?
না।
বিতান ওর পিস্তলটা শার্দুলকে দিয়ে চলল তার সঙ্গে। সে বুঝতে পারল যে এরা খুব একটা সহজ লোক নয়। কিন্ত কি আর করা যাবে। এসেই পড়েছে যখন। আর যা মনে হয় এদের কবল থেকে বার হওয়া খুবই মুশকিল। দেখা যাক কি হয়।
শার্দুল একটা ঘরে নিয়ে গেল তাকে ইশারায় বুঝিয়ে দিল যে এটাই এখানে তার থাকার জায়গা । লোকটা বোবা নাকি।
ছোট ঘর, কিন্ত চলে যায়। ছোট একটা খাট আর চেয়ার রয়েছে । বিতান বসল খাটের ওপরে। এবারে বেশ ক্লান্ত লাগছে।
অজয় গভীর চিন্তায় ডুবে ছিল। হঠাৎই তার চিন্তাজাল ছিন্ন হয়ে গেল বাইকের আওয়াজে। বেরিয়ে এসে দেখল একজন এসেছে বাইকে চড়ে। আগের জন আসলো ঘোড়ায় চড়ে, আর এ যান্ত্রিক ঘোড়ায়।
লোকটা বাইক থেকে নেমে বলল, আমি এখানে কাজের জন্য এসেছি।
আসুন ভেতরে। অজয় ডেকে নিল তাকে।
বিজ্ঞাপন দেখে এসেছেন নিশ্চয়ই। আশা করি কোন পিছুটান নেই। নাম কি আপনার?
কি করছেন এখন ?
আমার নাম বাবলু। একটা কারখানায় কাজ করতাম, সে কাজটা চলে গেছে।
ঠিক আছে। তাহলে থেকে যান এখানে।
জানা গেল যে বাবলুর কোনো অপরাধের ইতিহাস নেই।
আচ্ছা, কোনো ব্যাপারেই কৌতুহল দেখাবেন না। কাজের ব্যাপারে পরে কথা হবে। আর বাইক আমার কাছেই থাকবে। এই বলে অজয় আবার শার্দুলকে ডাকল বাবলুকে নিয়ে যাবার জন্য।
শার্দুলকে দেখে বাবলুর তো অবস্থা খারাপ। যাই হোক, চলল তার সঙ্গে। সবকিছুই কেমন যেন ।
তার জায়গা হল বিতানের পাশের ঘরে।
তার দিকে একটা শীতল চাহনি দিয়ে চলে গেল শার্দুল।
************************************"**************************************************************






কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন