মঙ্গলবার, ১৫ এপ্রিল, ২০২৫

কৌশিক সেন




কৌশিক সেন * দুটি কবিতা


শৃঙ্গারপর্ব


যে সকল দেবতারা শৃঙ্গারের পর পানপাত্রে মেহফিল জমান, তাঁরা তরল প্রকৃতির হন। তাঁদের লোলুপ দৃষ্টিতে নারীরা স্রোতস্বিনী হয়ে ওঠে।

চন্দনস্নানের পর যেসব দেবতাদের সম্মুখে ধুপ-দীপ জ্বালাতে হয়, তাঁদের কামনায় কোনো ধক নাই।  অকারণে ঘেমে নেয়ে একসা হন নৃত্যরতা অপ্সরারা।


যেসকল দেবতাদের অবগাহনের পর ভেজা শরীর শুকোতে লেগে যায় কয়েক শতাব্দী, তাঁরা নিশ্চিতভাবে সরীসৃপ প্রজাতির, ক্ষুধার তাড়নায় গিলে খান উভচর প্রাণীদের।

অর্ঘ্য নিবেদনের থেকে ষোড়শ শৃঙ্গারকে যে সকল দেবতারা শ্রেয়তর মনে করেন, সাবধান, তাঁরা বাকসিদ্ধ। তাঁদের অভিশাপে ব্রহ্মাণ্ডের সমস্ত কীটপতঙ্গ মনুষ্যজন্ম লাভ করে।











দশাশ্বমেধ

দগ্ধতা কেটে যায় মহামারী গেলে।  কাঠের ছাউনিঘেরা বিড়ালিনীচোখ, ছায়াঘেরা মোহের বারুদ,

ঘুম ভাঙে একাকিনী বিক্রয়বালিকার।  কিবা বেচে সে! সাভানায় ঘন হয় শিম্পাঞ্জীর হাড়।  বেতের দেওয়ালঘেরা আয়ুর্বেদসকাল।  পুষ্পপরাতে রাখা শুষ্ক শিউলি যত।

এ শরীর উঠবেনা আর। এ শরীর আশরীরে বিঘতের কান্না নেহাত।  নলবনে প্রথম কদম।  বিলাপের অকাল রাবীন্দ্রিক।  এ শরীর চাল-ডাল ভুলে যাওয়া মেঘের রেস্তোরাঁ যেন!  কত শোক, জ্বলন্ত চিতার মত আকাংখ্যার পাহাড়।  টান মেরে খুলে নেয় কৃষ্ণবসন।  এ শরীর কুকুরীর ভাদরযাপন।

মুগ্ধতা ছিঁড়ে যায়।  মুগ্ধতা ছিঁড়ে গেলে বিধিলিপি বুনে রাখি ক্রুশ ও কাঁটায়।  গুনে গুনে মেপে রাখি শীততাপ।  মন বুঝি কুয়াশাকাতর!  সামলাই। হাওয়ার দাপট। ছিটকিনি খুলে যায় দরোজা, জানালার।  ঘ্রাণের অধিক কোনো প্রথা ভাঙি অলকাবেলায়।  ঋদ্ধতা কেটে গেলে আমিও শ্বাপদ হই, অশ্বসমান।













**************************************************************



কৌশিক সেন 

জন্ম :২২ সেপ্টেম্বর ১৯৭৬ বহরমপুর, মুর্শিদাবাদে। ছাত্রজীবন ও বেড়ে ওঠা বহরমপুর শহরেই।  কলেজ উত্তীর্ণ হওয়ার পর কঠোর জীবন সংগ্রাম। সাতাশ বছর বয়সে দিল্লীতে আগমন।  কেন্দ্রীয় সরকারী কর্মচারী। আঠেরো বছর ধরে দিল্লীর বাসিন্দা।  দিল্লী ও দিল্লীর বাইরে বেশ কিছু পত্র পত্রিকায় লেখা প্রকাশিত ও প্রশংসিত।  প্রকাশিত কাব্যগ্রন্থ : রাই জাগো গো, কর্ষণলিপি,পাখিঘুম



কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন