স্বপ্নদীপ রায় * তিনটি কবিতা
বোধ
হাঁটুমুড়ে বসে আছি। এইটুকুতে কি ভাঙা যায় নদীজল?
শেষ বিকেলের ছায়া এসে পড়ে গাছের পাতায়। ঐ পাতায় একটুক্ষণ আগে খয়েরের মতো লেগেছিল পাখির বর্জ্য,এখন সে খেলা করছে ছায়াকোলে, কতো স্বপ্ন তার! সব কি ভেসে যাবে নদীজলে?
হাঁটুমুড়ে বসে থাকি। আমার সাধজনমের গোধূলি আমাকে ধুলো মাখায়,কাদায় কাদায় মলিন করে তোলে এতোদিনের যাকিছু ভিজে আমার --- আর কতোদূর যাব?এখনো হয়নি তোমার?হয়নি মুখাগ্নির পর সবকিছু শীতল? অবিকল চুপচাপ?
হাঁটুমুড়ে বসে থাকি ---একটা একটা করে গুছিয়েছি কাঠ---তুমি এলে যাবোক্ষণ---
এখন বুঝি, এই সমারূঢ়ে সরে যাওয়াই আমার চূড়ান্ত কাজ!
বিশ্বাস
মৃত্যু শুনলে ভয় পাই, তার চেয়ে বলো জীবন । এই যেমন তোমার গল্পের মাঝে হঠাৎই উড়ে আসে এককাপড়ের একটি আউরৎ---ছ্যাঁৎ করে আসে লিঙ্গসন্ধিগুলি আমার!
কিছু এমন বলো যা আমাকে জিরিয়ে রাখে---
কয়েক শতাব্দী এভাবেই চলি আমরা---
তারপর আমরা আমাদের সন্তানদের গর্ত বুকের জামাগুলোতে ফুল গুঁজে দেব --- হাত ধরে আলজমি টপকিয়ে ভর্তি করে আসবো বোধিকাঞ্চন কাকতাড়ুয়াটির কাছে---
তারা চলবে যেভাবে, আমরা পিছোবো সেভাবে
---তবে মৃত্যুর কথা বোলো না---
মৃত্যু শুনলে ভয় পাই, তার চেয়ে বলো জীবন :
গোপন আকুলিবিকুলির মতো আমাদের পিতৃপুরুষদের যে নলবন___
অপেক্ষা
পাড় চেনাচ্ছো যে---নৌকো কই গো তোমার? লগিতে বালি লেগে আছে---জোছনায় চিকচিক করে ওরা---
ও জোছনায় ঝাউগান ওঠে, বাতাসে বাতাসে বেইন্তেহা মুহব্বৎ!
আমাকে ডুবতে দাও।
আমি মানুষ,মাথা ভারী---
আমাকে ডুবতে দাও।
আমি মানুষ,জলে পড়ি---
তুমি পাড় খুঁজে নোঙর ফ্যালো, রাতটুকু থেকে যেও ঐ ইশিতার জোছনাপুরীতে,
কিছু শিখলে জানিও,
জলের অনেক নীচে আমি রইলাম,
রইলাম তোমার একান্ত ডোবার অপেক্ষায়!
*******************************************************************************************************




কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন