কবি দেবাশিস-এর দুটি কবিতা
গাঙ্গেয় অববাহিকা
খোয়াইশ
হিমেল আলিঙ্গনের ছায়া এসে পড়ে গঙ্গার ঘাটে
জলের বুঁদবুঁদ মিশে যায় ছলাৎছল অবয়বে
কালো মেঘের মতো ধেয়ে আসে ভয়ঙ্কর চুম্বন
সব মিথ্যের জালবোনা শুরু হয়েছে সবে।
ধূলোমাখা চুলের অবিন্যস্ত সংলাপের মতো
বেড়ে গেছে বেহিসেবি খোয়াইশ
ঢুলে পড়া ন্যুয়ে পড়া ঝুঁকে পড়া সব
প্রতিশ্রুতির বেলাগাম ফিসফিস।
লুকনো পোশাকের মতো বেড়ে যায় সময় মধুর
নিঃশ্বাস গায়ে মাখে গরম হাওয়ায়
কখনও বা ভিজে যায়
শেষ জেটি ছেড়ে যায়, ছেড়ে যায়, বহুদূর।
কলিকাতা কড়চা
বাগবাজার ঘাটে ট্রেন এসে থামে।
ছড়ানো ছেটানো ছোট ছোট স্বল্পমেয়াদি প্রেম
প্রবাহমানতার পাশে বসে দেখে-
ভেসে যায় খড়কুটো। ভালোবাসার দোঁয়াশ মাটি।
গঙ্গার শরীর ধরে হামাগুড়ি দেয়
আচ্ছন্ন সন্ধ্যে রাতের অলিখিত গন্তব্য।
দু'চারটি সাইকেল আরোহী
গাঁজার তীব্র ঝাঁঝালো গন্ধ
উন্নয়নের জোরালো সাদা আলো
গঙ্গাবক্ষে ভেসেলের সুরেলা হুইসেল-
পথ পেরিয়ে যায় কাশি মিত্র শ্মশান ঘাট।
স্বজন হারা শোক মিশে আছে ভারি কুয়াশায়।
সুতানটি চেক পোস্টে দাঁড়িয়ে খুঁজে পাওয়া
পুরনো সে কলিকাতা কড়চা।
শোভা বাজার, আহিরিটোলা, কেওড়াতলা
এভাবেই পরপর এসে দাঁড়ায়
জোবচার্নকের প্রমোদ নগরীর প্রবাহিত অলিন্দে।
সাড়ে তিনশ বছরের দোঁয়াশ মাটির পাড়ে
পড়ে আছে এক মৃত্যুক্ষয়ী অ-সভ্যতা।
*******************************************************
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন