কবি রাজীব দে রায়-এর দুটি কবিতা
দিব্য গোলক
চোখের পাতার মত দ্রুত নেমে আসে সোনালী বিচ্ছেদ।
কোনো আলিঙ্গন দীর্ঘস্থায়ী নয়, তথাপি, অপার্থিব এক
চন্দ্রকলায় কয়েকপ্রহর ধরে পৃথিবী পূর্ণ হয়। বেলিফুলের
গন্ধের মতো সুতীব্র দংশন, তামাটে দাগ এঁকে দেয়
কৃষ্ণসাগরের কাঁধে। স্ফীত তরঙ্গরাশি বিপুল উচ্ছ্বাসে
আছড়ে পড়ে বৃষস্কন্ধ বালুতটে। লোনা বাতাসের
প্রাবল্যে মন্দির চূড়ায় ঢং ঢং ঘন্টা বেজে ওঠে।
এও যেন এক অলৌকিক মিথ্যাচার -- ঘটে গেল সবে !
আসলে সব-ই ভঙ্গুর। এই দিব্য গোলকটিও তাই।
অকৃত্রিম মুঠোর ভিতর ভাজা পাঁপড়ের মত ঝুরঝুর করে সহসা
ভাঙতে থাকে ।
হংসধ্বনি
যাবতীয় স্মৃতিভার জড়ো ক'রে
পাহাড়চূড়া ঠায় দাঁড়িয়ে সমস্ত দিন জুড়ে,
ঋজু ছায়ায় ভিতর থেকে
চুঁইয়ে পড়ে ফিকে আলো,
শঙ্খচিলের ডানায় ঝুলে সেই অমল আলো
পরাগরেণুর মতো উড়ে মিশে যায় নীলিমায় ...
চড়াই-উৎরাই অবসানে এসেছে ক্লান্তি,
বিকেলের আবছায়ায় অবতলের সন্নিকটে
জলের কাছে দু-দন্ড বসি ...
প্রায়ান্ধকার বিকেলে
প্রপাতরেখা বরাবর নামতে থাকে স্মৃতির ঝুরি,
...বৃষ্টিময় চেতন জুড়ে চমকায় বজ্র ও দ্যুতি ।
********************************************************
ডুয়ার্সের আলিপুরদুয়ারে জন্ম এবং বেড়ে ওঠা। শিক্ষাগত যোগ্যতা- উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে M.A. পেশা- উচ্চ-মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষকতা। একাধিক লিটল ম্যাগাজিন,পত্র-পত্রিকা এবং বিভিন্ন ব্লগজিনে কবিতা ও গল্প প্রকাশিত হয়েছে। বর্তমানে জলপাইগুড়ি শহরের স্থায়ী বাসিন্দা।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন