পাঠকের চোখে : স্বরবর্ণ * ছয় * ১৪২৮
' স্বরবর্ণ * ছয় ' সংখ্যাটি কেমন হল ? কী বলছেন সুধী পাঠকমন্ডলী ? এ বিষয়ে ব্লগে অনেকেই মতামত দিয়েছেন । আবার ব্লগে সড়গড় না হওয়ায়, অনেকে সম্পাদকের হোয়াটসঅ্যাপ নম্বরে মতামত জানিয়েছেন। ফোনেও অনেকে অভিমত ব্যক্ত করেছেন। তাছাড়া, এ সংখ্যার কবি লেখকেরা অনেকেই তাঁদের নিজস্ব ওয়ালে সংশ্লিষ্ট লেখাটি শেয়ার করেছেন। সেখানেও অনেকে মতামত দিয়েছেন। সুচিন্তিত মতামত দেওয়ার জন্য সকল পাঠককে জানাই আন্তরিক ধন্যবাদ।
পাঠকের মতামত শিরোধার্য করে আমরা ক্রমান্বয়ে সেগুলি প্রকাশ করব । আজ পাঠ প্রতিক্রিয়ার প্রথম পর্ব -----
শতদল মিত্র লিখেছেন কিছু পত্রিকা আছে, যার জন্য অপেক্ষায় থাকি। 'স্বরবর্ণ' তেমনই এক পত্রিকা। প্রথমেই খুঁজে নিই অনুবাদ কবিতা। আর চমকে দিল মীনাকুমারীর শায়েরী সুধাংশুরঞ্জন সাহার সাবলীল অনুবাদে। স্বপন নাগের উজ্জ্বল অনুবাদে নাগার্জুন, নরেশ মেহেতা, সর্বেশ্বরদয়াল সাক্সেনা, ওমপ্রকাশ বাল্মীকি ও হূবনাথ পাণ্ডের হিন্দি কবিতা সমৃদ্ধ করল। ঝলসে দিল যেন ওমপ্রকাশ বাল্মীকির কবিতা।
গদ্য বিভাগে সুশান্ত চট্টোপাধ্যায়ের 'প্রতিবাদের নন্দনজ্যামিতি'তে কবি তরুণ সান্যালের কবিতাদর্শন ও কবির আকবিতাজীবন এক 'গোটা মানুষের ছবি'-র সন্ধান সুন্দরভাবে ফুটে ওঠে। পারমিতা ভৌমিকের কবি পিনাকী ঠাকুরের আটপৌরে কাব্যভাষা, তার কাঠামো নিয়ে আলোচনা যথাযথ। তবে সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়ের কথায় 'পিনাকী সময়কে বিধৃত করে ছোট ছোট পঙক্তিতে'-- এ বিষয়ে বিশদ উল্লেখ থাকলে আরও প্রাপ্তি হতো।
অণুগল্প বিভাগে রঞ্জনা ভট্টাচার্যর 'খাদ' এবং শর্বরী চৌধুরীর 'সম্পর্ক'-- দুটি গল্পই যেন নারী-পুরুষের সম্পর্কের ভান, তার ভঙ্গুরতার ছবি। 'সম্পর্ক'-এ যদি ভঙ্গুরতাকে ঢেকে রাখার অসহায় ভান, 'খাদ'-এ আপাত ভঙ্গুরতার মধ্যেই কাঠামোর সন্ধান। পাঠক আমি তৃপ্তি পেলাম।
কবিতাবিভাগ আগের মতোই সুসম্পাদিত। অভিবাদন সম্পাদককে। পরবর্তী সংখ্যার অপেক্ষায় থাকলাম।
গৌরীশঙ্কর দে-এর নিবিড় পাঠে উন্মোচিত হয়েছে পত্রিকার নানা দিক । তাঁর মন্তব্যগুলি একে একে তুলে দিচ্ছি ---
"সম্পাদকীয়" সম্পর্কে তিনি লিখছেন -----সম্পাদকীয় পড়ে পত্রিকার সঞ্চারপথটিকে চেনা যায়। জ্ঞানের গরিমা নেই,উদ্ধার করেছি গোছের কোনো প্রতিবর্তী ক্রিয়ার সোল্লাস নেই, স্নিগ্ধ মাধুর্য নিয়ে অনায়াসে নিজকে, নিজস্ব দলবৃত্তের বাইরে বেরিয়ে ডাক দিল শিল্পের সতীর্থ-সুজনবর্গকে। এই ডাক তিতিরের, এই হাত নগ্ন নির্জন। Hat's off.
বিজয় সিংহ-এর কবিতা সম্পর্কে তাঁর বীক্ষণ ----বিজয় সিংহ! এক অতি প্রিয় পরিচিত নাম। দুটি কবিতাকে একইসঙ্গে জানাই সেলাম ।
পঙ্কজ মান্না-এর কবিতা সম্পর্কে তাঁর মন্তব্য ---অসামান্য লাগলো দুটি কবিতাই। স্বরবর্ণ-এর কাছে ঋণী রইলাম। কবিকে জানাই অশেষ অভিনন্দন।
সুজয় যশ-এর কবিতা পড়ে তিনি জানাচ্ছেন ---অত্যন্ত সম্ভাবনাময় কবিদের একজন কবি সুজয় যশ। ওঁর কবিতায় আমি গভীর নিমগ্ন এক পরাবাস্তব খুঁজে পাই। এ কবির একান্ত নিজস্ব অভিজ্ঞা। শুভকামনা।
চন্দন রায়-এর কবিতা সম্পর্কে তাঁর মন্তব্য ---"একমাত্র কবিই পারে/ রাতের মন্থর আকাশে মায়ার ছন্দ এনে দিতে—" চন্দন পারেন।
সৈয়দ কওসর জামাল-এর কবিতা সম্পর্কে তাঁর অভিমত ----জামালদা কবিদের কবি। ওঁর প্রসঙ্গে কিছু বলা এত স্বল্প পরিসরে অসম্ভব। তলপ্রধান ছন্দে লেখা এই কবিতায় আবার উদ্বেলিত হলাম।
উদয় ভানু চক্রবর্তী-এর কবিতা সম্পর্কে তিনি লিখছেন---অত্যন্ত মিতবাক এই কবির কবিতা পড়ে মুগ্ধ হলাম। এক অতীন্দ্রিয় স্বরক্ষেপণ।
অনুবাদ কবিতা * তপন পাত্র---খুব ভালো লাগলো অনূদিত কবিতাগুলি। শুধু কবিপরিচিতি সামান্য থাকলে ভাওলো হতো।
কবিতাগুচ্ছ * রাহুল দাশগুপ্ত---কবি রাহুল দাশগুপ্ত-এর কবিতাগুলো এক গভীর প্রত্যয়ে বলে গেল যেন নিজস্ব বিশ্বাসই অন্তর্নিহিত আস্তিকতা। শিরদাঁড়া সোজা রেখে চলাই জীবন। কুর্ণিশ জানাই।
কবিতাগুচ্ছ * শীলা দাশ---"সমুদ্র বাতাসের দিগন্তবন্দীশ"-এ জাড়িত কবিতাগুলি বড়ো মধুময়।
কবিতাগুচ্ছ * অমিত চক্রবর্তী---অমিত চক্রবর্তীর অমিত শক্তিশালী লেখনীর সঙ্গে প্রথম পরিচয়েই বসন্তবাহারে যেন কোথায় হারিয়ে গেলাম। "মধুর বসন্ত"-এ মায়ার খেলায়।
রামকৃষ্ণ মাহাতো-----বাহ্ অপূর্ব প্রান্তিকবৃন্তে ফোটা অত্যাধুনিক দুটি কবিতাই মন জুড়ে ঝড় বুনে দিলো। শুভকামনা।
দেবার্ঘ সেন----দেবার্ঘ সেন অসম্ভব শক্তিমান কবি। এখানে প্রকাশিত 'শিহরন সংক্রান্ত' কবিতাটি অনন্য। 'সমীর'ও সুন্দর। অনেককেই জানেন বোধকরি ওঁর ছবির হাতও অপরূপ।
শহীদুল ইসলাম---চমৎকার কবিতা। কবিতার শত ফুল বিকশিত হোক।
মৃন্ময় মাজী----মৃণ্ময় মাজী আমার আত্মজার বয়সী। অত্যন্ত সুন্দর লিখে চলেছে। ওঁকে প্রথম দেখি মুখপুস্তকে। অত্যন্ত বলিষ্ঠ হাত। পাশাপাশি লোকায়ত প্রান্তিক কবিতায়ও সমান পারদর্শী। এখানে প্রকাশিত দুটো লেখাই অত্যন্ত গভীর, মর্মস্পর্শী।
উপন্যাস * দেবাশিস সাহা ---- ডায়েরির অংশে লেখাটি নতুন মাত্রা নিল। অসাধারণ লাগছে।
( আগামী পর্বে )
' স্বরবর্ণ * ছয় ' সংখ্যাটি কেমন হল ? কী বলছেন সুধী পাঠকমন্ডলী ? এ বিষয়ে ব্লগে অনেকেই মতামত দিয়েছেন । পাঠকের মতামত শিরোধার্য করে আমরা ক্রমান্বয়ে সেগুলি প্রকাশ করছি । আজ পাঠ প্রতিক্রিয়ার দ্বিতীয় পর্ব -----
সুজয় যশ তাঁর নিবিড় পাঠ প্রতিক্রিয়ায় জানাচ্ছেন-----
"সম্পাদকীয়" আপনার এই সৃজনশীলতাকে আগলে রাখার যে সুন্দর প্রচেষ্টা ,তাতে সাথে থাকব আমৃত্যু । সবাই আসুক সাহিত্যের আলোয় নিশ্বাস নিই প্রাণ ভরে ।
গৌরীশঙ্কর দে আপনার কাছে শিখে চলি নিত্য ।
"প্রিয় কবি প্রিয় কবিতা * সুভাষ মুখোপাধ্যায়" যতবার এ লেখা পড়ি একটা দীর্ঘশ্বাস বেরিয়ে আসে । ভেতর থেকে কে যেন বলে ওঠে লাগছে, আমার লাগছে খুব , ফুলগুলো সরিয়ে নাও এবার ।
"উপন্যাস * দেবাশিস সাহা" পরের অংশের অপেক্ষায় রইলাম দাদা। বেশ ভালো লাগছে ।
"অণুগল্প * শর্বরী চৌধুরী" দিদি মন খারাপ হয়ে গেল । তবে খুব সুন্দর লেখা ।
"কবিতা বিষয়ক গদ্য * পারমিতা ভৌমিক" আপনার এই গভীর বিশ্লেষণ আরও ভালো ভাবে চিনতে শেখায় বুঝতে শেখায় । শ্রদ্ধা জানাই ।
"শ্রীময়ী দে" এই প্রথম আপনার লেখা পড়লাম । বিস্মিত হলাম, আপনার ভাবনার অভিব্যক্তি দেখে । শ্রদ্ধা জানাই কলমকে ।
"রামকৃষ্ণ মাহাতো" ভীষণ ভালো লেখা দুটি কবিতা ।
"পলাশ দাস" খুব সুন্দর আপনার লেখা ।
"উদয় ভানু চক্রবর্তী" মন্তব্য করার ধৃষ্টতা দেখাতে পারলাম না । অসাধারণ ।
"দেবার্ঘ সেন" পোড়া পেন্সিলের মৃতদেহ.... মনে থেকে যাবে এ কথা ।
"গৌতম রায়" খুব ভালো লেখা ।
"গোবিন্দ মোদক" বুকের ভেতর আস্ত নদী, আহা কি অপূর্ব লিখলেন !
"মৃন্ময় মাজী" দুটি কবিতা আলাদা সত্তায় অনন্য ।
"নিমাই জানা" অসাধারণ বললেও কম হয় । আপনার লেখায় একটা অন্য মাধুর্য ।
রামকৃষ্ণ মাহাতো লিখছেন ,"পঙ্কজ মান্না"-র কবিতা সম্পর্কে ‘কী কথা উহারা বলে ’ মুচড়ে মরা যন্ত্রণা'রা ঠাঁই পেয়েছে কবিতায় । ঈশ্বরের কাছে প্রার্থনা করবো, এরকম কবিতা পড়ার জন্য আরো একটা প্রেমিক জন্ম যেন পাই ।
"শতদল মিত্র"-র কবিতা সম্পর্কে তারপর বলো , --কবি , তুমি নষ্ট ! ... ডুবে যাওয়া যায় এইরকম লাইনে ,লেখাতে ।
ধৃতিরূপা দাস "শতদল মিত্র"-র কবিতা সম্পর্কে লিখছেন মনুর সন্তানেরা সত্যই নিরক্ষর দাদা। সহজে বুঝবে না। আহা, আরাম হয় আপনাদের কবিতা পড়লে...
তৈমুর খান "পলাশ দাস"-র কবিতা সম্পর্কে লিখছেন "দু একটা লোক আলো হাওয়া" লোককে এভাবে ভাবতে পারাটাই একজন প্রকৃত কবির কাজ।
স্বপন নাগ দেবাশিস সাহা-র উপন্যাস ধুলোর সিংহাসন (পর্ব * ছয় ) পড়ে জানাচ্ছেন-----
আগের কিস্তিগুলো পড়িনি। এটি পড়লাম। উপমাকে ঘিরে অশোকের পিতৃস্নেহ বিবৃত আছে ডায়েরির পাতায়। একুশ বছর পর খুঁজে পেয়ে বিহ্বল এক পিতার কাছে যেন পুরনো দিনকে খুঁজে পাওয়ারই উত্তাল এক অস্থিরতার সাবলীল বর্ণনায় ঋদ্ধ এই কিস্তি। এরপর? এমন আগ্রহ তৈরি হয় বৈকি। আর সেই আগ্রহকে চারিয়ে দেওয়াই তো উপন্যাসের গুন। চোখ ভীষণ বিরোধিতা করে ওয়েব ম্যাগাজিনের লেখা পড়তে। তবু অপেক্ষায় থাকব পরেরটুকু জানবার উৎকন্ঠায়।
"অনুবাদ কবিতা * সুধাংশুরঞ্জন সাহা" সম্পর্কে স্বপন নাগ লিখছেন প্রাপ্তি। মীনা কুমারী শায়েরী লিখেছেন, এই তথ্যটিই আমার মনে হয়, আমার মত অনেকের কাছেই অজানা। ফলে, এই পাঠ এক অনন্য প্রাপ্তি। আমার বিশ্বাস, এমন প্রকাশনা যে কোন পত্রিকার পক্ষেও যথেষ্ট গর্বের।
সমিত পালিত "অণুগল্প * দেবাশীষ মুখোপাধ্যায়" সম্পর্কে লিখছেন আগে অনেক বেশি ধন্যবাদ ও নমস্কার জানাই। খুব ই ভালো লাগলো অনুগল্পটি পড়ে। সত্যিই বিন্দুর মধ্যে সিন্ধু এঁকেছেন আপনি। আগামী দিনে আরও বেশি পাওয়ার আশায় থাকলাম। "বেশি পাওয়ার এই আশা কিন্তু আমায় দুঃখ দেবেনা।
( আগামী পর্বে )
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন