শনিবার, ৮ জুলাই, ২০২৩

গুচ্ছ কবিতা * অমিতাভ সরকার



কবিতাগুচ্ছ * অমিতাভ সরকার








ছবির ডায়েরি 

১.

এই গরমে শব্দের বেশ জলকষ্ট। 

কবিতার হাওয়া খননেও যন্ত্রণার ক্লিশে মাটিতে 

অন্তরের সোনা ফোটে না।

চিন্তার পাতকুয়োয় তেল কম দিয়ে চিনি বেশি হলেও আবার বিপদ। 

খরচের ভরসায় না থেকে নিজের দায়িত্বে পথ রেখে দিলেই ভালো। 

তাপমাত্রা যে আরও বাড়বে!

মেঘের শেয়ার বাজারে বোকামির অবাধ্য পারদস্তম্ভ 

বেসুরো রবীন্দ্রসঙ্গীতের মতোই 

সংস্কৃতির গভীরে শিকড় মেলেছে।


ঠাকুরের পুজোর ফুল যে ক্ষমার খাবারের বিছানায় রাখতে নেই।

কাজের পায়ের যন্ত্রণায় সারারাত মনের ভালো ঘুম হয় নি। 

ভালোবাসার দোকানে কবিদের ফটো এক্সিবিশনের ভিড়।


এতকিছুর পরেও, 

ভাবনার পারিপার্শ্বিকতায় সবুজের 

দাম কতখানি!  



২.

সময় টাকা ধার চাইছে।

ইচ্ছে আছে, কিন্তু বলতে পারছে না। 

যারা নেয়, এর কাছে মিটিয়ে আরেকজনের কাছে ধার করে।


ঋণ ঋণই থেকে যায়।

শোধ আর হয় না। 


সুদে-আসলে ভরসার মুনাফা বেড়েই চলে। 













৩.

মেসেঞ্জারে দোকান বসেছে

২৪x৭ পরিষেবা জারি।

যদিও ক্রেতা নামমাত্র। 


গাছে ফুল না ফুটলেই বা,

মাদুলির তাবিজ বানিয়ে ছবি দিতে

অসুবিধে কোথায়!


আবার বিজ্ঞাপন দিলেই ভাবছি ব্লক করব।


আর কথার দরকার নেই। 



৪.

ড্রেনে আবারও জল জমেছে। 

সংস্কারের গন্ধে থাকা যাচ্ছে না। 

পরিষ্কার জিনিসের একটা নাম আছে।

মনটাকে সাবধানে পা ফেলতে বলো।


একদিন বেরলে সেই জামা পরদিন আর পড়া যাচ্ছে না। 

যা গরম পড়েছে স্কুল খুলে আবারও বন্ধ হওয়ার যোগাড়। 

ছুটি নিয়ে রোদের কোনো রাখঢাক নেই।

ঘরেবাইরে সব জায়গায় বিড়ম্বনা। 

মনের চোরপাহারা খেলায় সময়ের পোয়াবারো।


দারোগারা রোজকারমতো মেঘের বৈঠকে বসছেন। 

আকাশের শরীরখারাপে কারোরই কোনো হেলদোল নেই।

চেহারাটা বাইরেই যা ওইরকম। 


কেউ কি চায় আমার রোগ হোক।

আর হলে কি তাকে অস্বীকার করা যায়। 

মানুষ বুঝে পায় না 

তবু তো হয়।


আর, ভিতরের যন্ত্রগুলো তো বাইরে থেকে দেখে বোঝা যায় না। 

যারা বোঝে না তাদের বারবার বোঝাতে হয়।

চেঁচানো মানেই ঝামেলা নয়।


এরপর 

পুলিশের আলসেমির চাকরিগুলো মনে হয় আর থাকবে না।



**********************************************************************************************



অমিতাভ সরকার 

অমিতাভ সরকার স্কুলের শিক্ষক, লেখালেখি করেন। দেশবিদেশের বিভিন্ন ব্লগ, ম্যাগাজিন, সংবাদপত্রে ওর লেখা বেরিয়েছে। প্রকাশিত কাব্যগ্রন্থ, 'অচেনা সময়ের কাব্য', 'পথ', 'পথ চলা', 'ডাঙা', 'অনুবর্তন'। কবির প্রাণের বিষয় রবীন্দ্রসঙ্গীত।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন