কৌশিক সেন * দু'টি কবিতা
আজ ফির জিনে কি তমান্না হ্যায়…
তোমাকে গাইড করে মেঘলা আকাশ পেরোবো বলে পুলের দুইধারে রেলিং বেঁধেছি। চাঁদের আশেপাশে রেখে এসেছি জ্বলন্ত হ্যারিকেন। মেঘ আর মুখরতার দেশে রাতজাগা জোনাকিরা পথ হারিয়েছে পাকদণ্ডিতে, শুধু আমি ছাড়া! আমাদের আশেপাশে হেঁটে গেছে নিরাময়ের দিনগুলির মতো এক নদী। পার্শ্ববর্তী অরণ্য থেকে অনুরণিত হয়েছে মাঙ্গলিক বৃংহনধ্বনি। সরোবরের শাপলা তুলে নিবেদন করেছি প্রেমিক ঈশ্বরকে। তুমি চিনিয়েছো মজে যাওয়া অশ্বক্ষুরাকৃতি হ্রদের কান্না। তুমিই বুঝিয়েছো, শেষ বসন্তে কোন কোন ফুল বিরহী হয়ে ওঠে, কোন কোন পাখি উন্মাদ হয়ে যায়। চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়েছো, খননের গাইতিতে চাপ চাপ রক্তের দাগ, কালজয়ী ভাস্কর্যের ছেনিতে অমোঘ রমণচিহ্ন। বেঁচে থাকার উৎসারে ঠিক কতোটা কুয়াশা আটকে আছে, জানতেই পারতাম না, যদি তুমি না জানাতে! ধরে নিতাম অন্ধকার কিম্বা মৃত্যু নিতান্তই একাঙ্ক নাটকের অভিনয় মাত্র! এক একটা জীবন আঁকড়ে ধরে যদি তুমি দেবানন্দ হয়ে উঠতে পারো, আমিও তবে ওয়াহিদা হয়ে উঠবো একদিন!
ছুঁতমার্গ
ছুঁতে পারি, যদি তুমি একদিন পোশাকের
আড়ালের খাসতালুক আমার নামে লিখে দাও!
ছুঁতে পারি, যদি সর্পগন্ধা জড়িয়ে ওঠে তোমার
ভুজঙ্গলতা। চওড়া কাঁধে এঁকে দাও দংশনচিহ্ন।
ছুঁতে পারি, যদি মেঘ হয়ে যেতে পারো, উদোম
বুকে ঝাঁপিয়ে পড়তে পারো আগামী আষাঢ়ে।
ছুঁতে পারি, যদি নক্ষত্রের মতো পিশাচিনি হয়ে
যেতে পারো, ঘোর অমাবস্যায় খসে পড় বিষাদের
সাগরে।
ছুঁতে পারি, যদি স্নান সারো সরযুতে, ধীরে ধীরে
প্রস্তুত হও অগ্নিপরীক্ষায়, অশোককানন থেকে
ফিরে আসবার পথেই!
********************************************************************************************************
জন্ম :২২ সেপ্টেম্বর ১৯৭৬ বহরমপুর, মুর্শিদাবাদে। ছাত্রজীবন ও বেড়ে ওঠা বহরমপুর শহরেই। কলেজ উত্তীর্ণ হওয়ার পর কঠোর জীবন সংগ্রাম। সাতাশ বছর বয়সে দিল্লীতে আগমন। কেন্দ্রীয় সরকারী কর্মচারী। আঠেরো বছর ধরে দিল্লীর বাসিন্দা। দিল্লী ও দিল্লীর বাইরে বেশ কিছু পত্র পত্রিকায় লেখা প্রকাশিত ও প্রশংসিত। প্রকাশিত কাব্যগ্রন্থ : রাই জাগো গো, কর্ষণলিপি,পাখিঘুম।






দুটি কবিতায় খুব ভাল লাগল।
উত্তরমুছুন