শনিবার, ৮ জুলাই, ২০২৩

কল্যাণ ভট্টাচার্য



কল্যাণ ভট্টাচার্য * দু'টি কবিতা






বসুন্ধরা তোমাকে

ক্রমশ অদ্ভুত এক আঁধারে ডুবে যাচ্ছো তুমি বসুন্ধরা 

প্রায়শই কেঁপে যাচ্ছে তোমার শরীরী মানচিত্র 

আগুন জ্বলছে তোমার বাইরে ও অন্তরে

ইজ্রায়েল থেকে ইউক্রেন। 


কেউ কাউকে চেনে না,শত্রু নয় কারো, সেনারা জানে। 

তবুও অনিবার্য এক শত্রুতায় মৃত্যুর হোলি খেলে দুই পক্ষ। 

পুড়ে যায় ঘর বাড়ি পুড়ে যায় মন 

আর পিশাচের হাসি হেনে 

পর্দার ওপারে নাচে মানুষের যম। 

প্রসব যন্ত্রণায় কাতর জননী খোঁজে নাড়ি কাটা ধন 

তখনই এক ধ্বংস লীলা কেড়ে নেয় সেই অমল জীবন। 


মাৎস্য ন্যায় খেয়ে বড়োর হাঁমুখ ক্রমশ আরো বড়ো হচ্ছে।

 রাষ্ট্র গিলে খাচ্ছে আরেক  রাষ্ট্রকে। 

শান্তি চুক্তি ভেসে যায় উদ্ধত আস্ফালনে। 

চারদিকে রক্তস্রোত, জ্বলছে আগুন ।

 কোথায় রাখবো পা বলো তুমি বসুন্ধরা। 


এভাবেই  স্বপ্ন সুখ কেড়ে নেয় হিংস্র নিষাদ 

শিকারই জীবিকা তার। 

নির্ঘাত খাসির মতো নির্মোহে ঝুলিয়ে গোনে মানুষের লাশ। 

আর বিস্মিত জেগে থাকো তুমি প্রতিমা বিষাদ। 


এতো সব পরেও কিছু কথা থাকে বাকি 

মানবতাহীনতায় রাত্রি ঘনায় । নতুন সূর্য ওঠে। 

অজস্র  হানাহানি কাটাকাটির পর 

সব ঝড় থেমে যায়।  

কুরুক্ষেত্র নিভে গেলে ধর্মাশোক জেগে ওঠে। 

জেগে ওঠো তুমি অসুরদলনী। 





শূন্য 

দিন যায়

সময় ছোট হয়ে আসে    

যদিও জানি…  'তুঁহুঁ মম শ্যাম সমান'    

মন ছোট হয়ে আসে। 


তোমার সংসারে নিজেকে খুঁজি 

কোথায়…কোথায় আমি? কোথায় আমার অস্তিত্ব…? 

মন ছোট হয়ে আসে। 


এতটা চলার পথ…

এসবই ফাঁকি? 


দিকচক্রবালে ছুটি

সেখানেও সর্বত্র ভাসান ভাসান খেলা

মন ছোট হয়ে আসে 


তাহলে আর দেরি কেন 

এই নাও আমার হাড়গোড়…  অস্থিমজ্জা…

আমার ভালো লাগা মন্দ লাগা… 


শূন্য আছি  

আমাকে আরো শূন্য করে তোলো

তোমাতেই লীন করে দাও...  


**************************************************************************************************



কল্যাণ ভট্টাচার্য


বাংলা সাহিত্যাকাশে কল্যাণ ভট্টাচার্য এক বিশিষ্ট নাম। সারা ভারত জুড়ে অণুগল্প নিয়ে আন্দোলন করেন। সাহিত্য লহমা পত্রিকার মাধ্যমে এবং দূরদর্শনের বিভিন্ন চ্যানেলে অনুগল্প বিষয়ক অনুষ্ঠান করে সারা ভারতবর্ষে অনুগল্পকে ছড়িয়ে দিয়েছেন। ছোট গল্প নিয়ে পরীক্ষা নিরীক্ষা করেন। প্রকাশিত হয়েছে ছোটগল্প কবিতা ও নাটকের বই। ইতিমধ্যে তার 'মানুষের ছবি' গল্পগ্রন্থের জন্য পেয়েছেন শিলিগুড়ি থেকে এন. আর. ডি. এফ. অ্যাওয়ার্ড। অনুগল্পের শ্রেষ্ঠত্বের জন্য পেয়েছেন কলকাতা থেকে 'কফি হাউস' পুরস্কার ও 'ব্রায়ান অণুগল্প' পুরস্কার। কবিতার শ্রেষ্ঠত্বের জন্য পেয়েছেন 'এবং লোকায়ত পুরস্কার' 'বেলারানী দে স্মৃতি পুরস্কার ২০১৭ ,এছাড়া পেয়েছেন ছোট বড় সম্মান ও সম্বর্ধনা। পেয়েছেনকলকাতা থেকে "আরাত্রিক পুরস্কার,২০২২" ও সমগ্র সাহিত্যকৃতির জন্য "ফিনিক্স পরিবার পুরস্কার, ২০২২"।



কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন