বিকাশ চন্দ * দু'টি কবিতা
নিজস্ব জবানবন্দী খোঁজে
নববর্ষের সালতামামি শুয়ে আছে বটের ছায়ায়
নির্বোধ সময়ের শরীরে মরে প্রজনন কাল
আমরা পরস্পর বড়ই আপনজন নীরন্ধ্র সময়ে
ফুল পাতা ঘাসে ঢাকা স্তব্ধ নিরীশ্বর একক মগ্নতায়
একাকী শূন্য মেঘ শুনেছিল সবুজের হাহাকার
মধ্যরাতের উষ্ণতায় বেজে গেছে গোপনে ইমন কল্যাণ।
সকল স্বপ্ন ভেঙে গেলে আত্মার টুকরো শুধু
বুকে হাত রেখে শুনি মধ্য রাতের আনাড়ি ডাক
থোকা থোকা লাল শরীর জুড়ে কাঁটার অসুখ
তবুও অন্তরঙ্গতায় জড়িয়ে দেশ কাল মাটি
অবেলায় জল মাটির স্বভাব ঘিরেছে জন্ম ঘর
এখনও অভিশাপে ঝলসে যায় মানুষ নিহিত বিলাসে
উড়ে আসে ঝড়ো পাখি সন্তানের শব্দ স্বর খোঁজে
আরও অনেক পাখি লাল নীল কালো সাদা প্রাণময়
অজ্ঞাত মমতায় ছোটে আশ্রয়ে মন্দির মসজিদ গীর্জায়
মানুষের হাসি মুখে স্বরলিপি নিজস্ব জবানবন্দী খোঁজে
অরণ্যের দ্রিমি দ্রিমি
হলুদ পলাশ জানে প্রাণে প্রাণ মানুষে অরণ্যে অঙ্কুরে
বাঘের সাথে লুকোচুরি বুঝেছিল কুশলী টোপ
বাঘ ছিল না ছিল স্তাবক শিকারী আড়ালে বাঘিনি
উদ্ধত ক'জন যুবক বুক চাপড়ে আগুন জ্বালায়
অনেক দোসর জুটেছিল অন্ধকার রঙে শরীর খেলা
বসন্ত এলে ছা'পোষা ঘরে বুকে সাপটে হারানিধি
রমনী গাছের যন্ত্রণা ছিঁড়ে খায় বল্কল অন্তর্বাস
রঙিন অরণ্য পাতায় ম্যাজিক আলোয় মাদলের বোল
সকল অরণ্য জননী জানে গিলে খায় স্তাবকের চোখ
কুঠার করাতের দায় নেই অরণ্য রূপ টানে
বসন্ত প্রাণেশ হাতে বাবুই ধান শস্য কেন্দু বন আলু
প্রতি প্রহরে অরণ্যের ঘুম ভাঙে মহুল উৎসবে
মহুয়া বালার চন্দ্রহার দোলে অরণ্যে বিষাদ মাদল
খামছে আছে বৃক্ষ বুকের বল্কল দুর্বহ ক্ষত
গামছা জড়ানো আলগোছে আত্মার কোমল রতন
মহুল গন্ধী রাতের জ্বলন আলোহীন অন্তর অসুখ
ঘাতক পোশাকে জড়িয়ে জলপাই পাতা মাথায় ফেটি
টান টান রাত ছেঁড়ে সরল সবুজ পাতায় টুপ টাপ অশ্রু
অরণ্যের দ্রিমি দ্রিমি মাদলের বোল মাতালো বনজ সংসার
************************************************************************************************


কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন