সোমবার, ১৪ ফেব্রুয়ারী, ২০২২

অণুগল্প * রঞ্জনা ভট্টাচার্য্য

 

ণুগল্প সাহিত্যের একটি বিস্ময়কর শাখা। ' বিন্দুতে সিন্ধু দর্শন ?' ঠিক তাও নয় যেন, বিন্দুতে সপ্তসিন্ধু দশ দিগন্ত চকিতে উদ্ভাসিত হয়ে ওঠে সার্থক অণুগল্পে। তেমনই একটি অসাধারণ অণুগল্প এবার আমরা পড়ছি  রঞ্জনা ভট্টাচার্য্য-এর কলমে  ----


খাদ

রঞ্জনা ভট্টাচার্য্য 


খাদের একদম কিনারায় দাঁড়িয়ে মৃগনয়না। ওর থেকে একটু দূরে দাঁড়িয়ে তথাগত সিগারেট খাচ্ছে। তথাগত ভাবছে একটা ধাক্কা দিলেই মোটামুটি গল্প শেষ। মৃগনয়না ভাবছে তথাগত ধাক্কা দিতে আসলে ও একটু সরে যাবে, তথাগত টাল সামলাতে পারবে না। নীচে গভীর খাদ আজ কার অপেক্ষা করছে দেখা যাক। খাদের তলা থেকে কুয়াশার ভাপ উঠছে। ওপরের কালো আকাশে স্পষ্ট সপ্তর্ষি মণ্ডল। সমস্ত যন্ত্রণা অবসানের সাক্ষী থাকবে এই তারামণ্ডল। 

মৃগনয়না একা একা হেঁটে রেস্ট হাউজে যাবে। পিছনের বাগান দিয়ে ধীরে ধীরে ঢুকে শুয়ে পড়বে। পরের দিন সকালে একপ্রস্থ নাটকের পর ও সম্পূর্ণ মুক্ত। 

তথাগত নগ্ন খাদটার দিকে তাকিয়ে আছে।  একটা রক্তাক্ত নারী শরীর ওর চোখের সামনে ভেসে উঠলো। অসম্ভব গাটা গুলিয়ে উঠলো। সিগারেট ফেলে মাথা ধরে বসে 'ওক ওক 'করতে লাগলো। মৃগনয়না আওয়াজ শুনে দ্রুত ওর কাছে গিয়ে বললো, 'কি হয়েছে? '

নিমেষের মধ্যে একটা অসম্ভব জোর আওয়াজ। দুজনেই বিস্ফারিত চোখে দেখছে একটা গাড়ি টাল সামলাতে না পেরে খাদে উল্টে পাল্টে পড়ে যাচ্ছে। তথাগত  উঠে মৃগনয়নাকে জাপটে ধরলো। দুজনেই কাঁপছে। খাদ থেকে আর্তনাদ ভেসে আসছে। দুজনেই একসাথে ছুটছে রেস্টহাউজের দিকে, যদি কিছু লোক এনে উদ্ধার করা যায়...



**********************************************************




রঞ্জনা ভট্টাচার্য্য

রঞ্জনা ভট্টাচার্য্য পেশায় শিক্ষিকা। প্রথম কাব্যগ্রন্থ 'আঁধারের বাউলগান'। গান শুনতে আর বই পড়তে ভালোবাসেন । কবিতা লেখা তাঁর জীবনের আশ্রয়।

1 টি মন্তব্য: