অরূপরতন হালদার * দুটি কবিতা
ঐহিক
এইমাত্র যে স্বাদ লুপ্ত হল তার মুদিত চোখের ভার রঙের
দাহ চেয়েছে, তুমিও চেয়েছ যেভাবে চিরবহমান পাতাটি
স্রোতের সব মুদ্রা থামিয়ে দিয়ে চেয়েছিল শেষ নাচ। প্রতিটা
প্রতিবর্ত ক্রিয়া আসলে এক একটা সমাপ্তি। ঘাসের লব্ধ
আলো আহ্নিক গতি থেকে মুক্তি চেয়েছিল আর ঐহিক সব
আলো আহ্নিক গতি থেকে মুক্তি চেয়েছিল আর ঐহিক সব
দ্যুতি দেখে তারা কিভাবে ব্যর্থ হয়, সে আশ্চর্য করুণ, তবু
তারা গলার শিরা ফুলিয়ে দেখায় তাদের স্বোপার্জিত এ
পৃথিবীর মধ্যে বিকেলের নগ্ন গলা কি অনায়াসে ডুবে যায়। হাঁসেরা ক্লান্ত, মুকুট-পরিহিত, তাদের সোনালি পালক ফেলে
জল গড়িয়ে গেছে বহুদূর।
এই যে খনিমুখ, তার ইতিহাস সব নিয়তিকে তুচ্ছ করে
আর আলোর ইতরতা ঘামের ঈশ্বর ফেলে বেঁকে যায়
নন্দিত সৈকতে। তুমি শব্দের কাতর সংস্থাপন দেখ, দেখ
বর্ণচোরা এক ভুবন তার অজস্র টুকরোর মধ্যে রেখে
যাচ্ছে ইহজন্মের সেই কুয়াশা যা বীজের মিথ্যা ঢেকে রাখে।
যাচ্ছে ইহজন্মের সেই কুয়াশা যা বীজের মিথ্যা ঢেকে রাখে।
স্বপ্নাদিষ্ট
মাংসের ভেতরে ভয় উড়ে এল। চামড়ায় যে অভাবনীয় আলো
মাংসের ভেতরে ভয় উড়ে এল। চামড়ায় যে অভাবনীয় আলো
তা যেন একটা ডানা, খুলছিল আর মুড়ে যাচ্ছিল অন্তিম ঘণ্টার
কথা ভেবে। আমার নিঃশব্দ হেঁটে চলা সেই অনিশ্চিত হাওয়ার
দমক ফিরিয়ে এনেছিল, আর রক্তের নিকোটিন, নুনের জোব্বা
ও ভালবাসা একে অপরের মধ্যে থেকে বার করে আনছিল
একটা অদেখা প্লাবন। সকালের সাটিন দেওয়াল, জেড গাছের শাখারা আর মৃত্যু যেন আলম্বিত ছায়ার ভার নিয়ে দুলছিল। নটভৈরবের জল শিরায় আনত, আর তুমি সূর্যের মধ্যে নগ্ন,
ক্ষত ধুয়ে নিচ্ছিলে স্বপ্নে পাওয়া পাখিদের গানে। জানলার নিচ
থেকে খসে পড়ছিল রাত্রির চিহ্নরা।
তোমার মুখাবরণ থেকে আঁচ আসছিল। তুমি দৌড়ে যাচ্ছিলে
সেই সোনালি আভার দিকে আত্মার নিরাবরণ মেঘ থেকে যা
নেমে এসেছিল পৃথিবীতে। তোমার ফেলে যাওয়া চিড়েতন
হরতনেরা ক্লান্ত, তারা ঘুমের শীর্ষ চেয়েছে আজ। টেবিলে
তাদের দেহ পড়ে আছে এক একটা প্রাচীন পাথরের মতো।
*****************************************************************************************************
অরূপরতন হালদারপেশায় শিশু-চিকিৎসক। শিশুদের না-বলা অভিব্যক্তির মাধ্যমে রোগনির্ণয়ের দৈনন্দিনতা থেকে কবিতার অনাবিষ্কৃত ভূমিতে নতুন স্পন্দন শোনবার প্রয়াসী। কলেজ জীবন থেকে কবিতায় হাত পাকানো। এখনো পর্যন্ত পাঁচটি কাব্যগ্রন্থ প্রকাশিত হয়েছে। "শূন্য রক্ত গাথা" সাম্প্রতিকতম বই, ডিসেম্বর, ২০২১শে প্রকাশিত। লিখেছেন বেশ কিছু বিশিষ্ট কবিতা-পত্রিকা ও ওয়েব-পত্রিকায়। কবিতা লেখা ছাড়া বিভিন্ন বিদেশি কবিতার অনুবাদে নিয়মিতভাবে ব্যাপৃত। চলচ্চিত্র ও চিত্রকলাও তাঁর বিশেষ আগ্রহের বিষয়।কবির দুটি জনপ্রিয় কাব্যগ্রন্থ --







কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন