শনিবার, ১৩ এপ্রিল, ২০২৪

গৌতম কুমার গুপ্ত

 


গৌতম কুমার গুপ্ত * দুটি কবিতা 







সামান্য লোক

সামান্য লোক আমি 
     হাত পা ছড়িয়ে আছি মাটিতে
অনুভবে আসছে খিদের রকমারি
পকেটে শূন্য কানাকড়ি
কী দিয়ে কিনি উপবেশন
মাদুরও নেই চেয়ারও নেই
এখানে দাঁড়ানো ক্ষণিক জাড্য ও স্থিতি
মাথার ওপরে পলকের কড়িকাঠ খড়কুুটো ছায়া
বেশিদের চলিষ্ণু দেখে শ্বাস গোপন করি
আমি কি ফুরিয়ে যাচ্ছি এই ছিন্ন লুঙি আর উদোম শরীরে
আমি সামান্য লোক আমার কোন জামা নেই

সামান্য মানুষ আমি 
      হাত দেখি না পা দেখি না
বুড়িয়ে যাচ্ছে নখের কোণ
ভোঁতাই স্বাভাবিক তীক্ষ্ণ নয় নখরও নয়
হা হা করে জল ও বাতাস গিলি
তোমাদের চোখে করুণাবৃষ্টি দেখি
আমি কিন্তু ভিজি না ছলের বাঁশিতে
গুটিয়ে রাখি দয়ামায়ার চাদর

আমি এক সামান্য লোক 
       খরজিভ ঢুকিয়ে রাখি
শুধু স্বরবর্ণের অভ্যাস সামান্য গুনগুন
সূর্য কেঁপে রৌদ্র এলে পুড়তে থাকি কাঁচা ডালে
ধোঁয়ায় চোখ জ্বলতে থাকে
টপ টপ করে নামে জল
যে জলে কারো ভ্রুক্ষেপ নেই 
পড়ছে পড়ুক পড়তে দাও
আকাশ ঝেঁপে বৃষ্টি এলে ভিজতে থাকি জটা চুলে
ভিজছে ভিজুক ভিজতে দাও

আমি এক সামান্য লোক 
       কিইবা কারো যায় আসে























ছোঃ


ট্রিগারে রেখেছি হাত

আমারও তো যুদ্ধ আছে
ওদের খারকিভ কিয়েভের মতো
আমার এখানে পায়ের নিচে একফালি জমি
পরম নির্ভরতা নিয়ে দাঁড়িয়ে আছি এখনো
যুদ্ধ এখানেও স্বতইঃ বিস্ফারিত 
জানি না কখন সরে যাবে মাটি
প্রোথিত হবো অতলান্ত গহ্বরে

যুদ্ধ শিখি নি কখনো
হাতে নেই কালাশনিকভ অ্যাসফেল্ট 
আছে সামান্য একটি বলপেন কাগজের সখ্যতায়
যে নাকি বিরুদ্ধ লেখে সবসময় যুদ্ধের মতো

অন্তরঙ্গের ভাষা পড়ি নি কখনও
বহিরঙ্গ দিয়ে বুঝি কত বিষ মাখানো আছে শরীরে
বিষ নিযে বাঁচি শিস দিয়ে ডাকি
শুনতে পাই নিজেরই উত্তরণ হয় কতোবার
ট্রিগারে রেখেছি হাত যুদ্ধ বাজাবো বলে

জানি আমার নির্ণয় আমাকেই করে নিতে হবে
আমাকেই বুঝে নিতে হবে ডালভাত
আগুনে জ্বালাই নিজেকে বারুদের গন্ধ উঠে আসে
এ তো আমারই নিজস্ব যুদ্ধক্ষেত্র
একক অস্ত্রসম্ভারে সাজানো শরীর

ট্রিগারে রেখেছি হাত যুদ্ধ বাজাবো বলে














****************************************************




গৌতম কুমার গুপ্ত

জন্ম  ১৩৬৭ বঙ্গাব্দে বাঁকুড়া জেলার শালতোড়া থানার গোপালনগর গ্রামে।বর্তমানে পশ্চিম বর্ধমান জেলার দুর্গাপুরের বাসিন্দা।প্রথম জীবনে সাংবাদিকতা পরে ই সি এলে কেন্দা এরিয়া বিভাগের কর্মী ছিলেন।২০১৯ সালে চাকুরিজীবন থেকে অবসর গ্রহন করেন।শিক্ষাগত যোগ্যতা বিজ্ঞান এবং কলা বিভাগে স্নাতক।পরে পার্সোনাল ম্য্যানেজমেন্ট ইনডাসট্রিয়াল রিলেশনে স্নাতকোত্তর পাশ করেন।আশির দশকের মাঝামাঝি থেকে লেখালেখি শুরু।'কালকেতু' নামে একটি পত্রিকা সম্পাদনা করতেন।বিভিন্ন পত্রপত্রিকায় তো বটেই ওয়েব ম্যাগাজিনেও গল্প কবিতা প্রবন্ধ লিখে থাকেন।এ পর্যন্ত তাঁর চারটি কাব্যগ্রন্থ  " সময়ের এই জলসাঘরে,'স্বভাবের সিলেবাস','অক্ষর ভাইরাস' এবং 'বিষুবরেখার পাখি' প্রকাশিত হয়েছে।কয়েকটি নাটকও  লিখেছেন। ইতিমধ্যে "কয়লাক্ষেত্র "এবং কৃষ্ণগহ্বর নামে দুটি উপন্যাস প্রকাশিত হয়েছে।।শীঘ্র একটি কাব্যগ্রন্থ 'যদি হৃদয়ের কথা বলো'প্রকাশিত হতে চলেছে।





কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন