গোবিন্দ মোদক * দুটি কবিতা
সাবালক
অনেকটা পথ হাঁটবার পর
বিনম্র একটা প্রণাম রাখি নিজেরই পায়ে।
ধুলি-ধূসরিত পা দু’টি
চকিতে পিছিয়ে যায় কয়েক কদম।
গাঢ় স্বরে বলে —
থাক বাবা! আজকাল কেউ তো আর
প্রণা
তাই প্রণাম করলে চমকে উঠি!
আসলে জানো,
আমরা সবাই বড় হয়ে গেছি অনেকটা,
সেইসঙ্গে এক্কেবারে একা!
নিজেই নিজের মধ্যে হাবুডুবু খাচ্ছি!
ভালো-মন্দ না ভেবেই মন্তব্য করছি!
নিতান্ত আপৎকালীন সময়েও
অন্যের বাড়িয়ে দেওয়া হাত ধরতে গেলে
মনে মনে ভাবছি —
এই বুঝি ছোট হয়ে গেলাম নিজের কাছে!
আচ্ছা বাবা, তোমার কি মনে হয়
সম্পর্ক এতোটাই ঠুনকো হয়ে গেছে?
আর বড়োরা যদি ছোটদেরকে …..
হঠাৎ সম্বিত ফেরে পায়ের।
সে আশেপাশে কাউকে খুঁজে পায় না।
পা সত্যি বলেছিল।
আমরা সত্যিই সাবালক হয়ে গেছি সবাই।
শর্তভঙ্গ
মুখোমুখি কথা বলতে বলতে
যখন অনেকটা সহজ হয়ে এসেছে সবকিছু
তখনই তুমি আড়াল চাইলে;
চায়ের উষ্ণতার সব শর্ত ভেঙে
দেখিয়ে দিলে ব্লাকবোর্ডের অন্ধকার।
তোমার বুকপকেটে জমিয়ে রাখা
সব প্রতিহিংসা বের হয়ে এলো লাফ দিয়ে;
তারপর এক পা .. দু পা .. করে
এগিয়ে আসতে লাগলো
ঠিক আমারই দিকে!
আহঃ! চিৎকার করার আগেই
ফিরে এল আমার চেতনা।
অথচ কি আশ্চর্য!
দু‘হাতের সাঁড়াশি আক্রমণে
তাকে পর্যুদস্ত করতে পারবো জেনেও
আমি এক এক পা পিছিয়ে যেতে লাগলাম।
আমার শ্বাস-প্রশ্বাসের সঙ্গে সংগতি রেখে
পিছনের দেওয়ালটাও
এগিয়ে আসতে লাগলো একটু একটু করে!
তারপর আর কিছু মনে নেই।
জ্ঞান ফিরতে দেখি –
নিভৃত অন্ধকারে খোয়া গেছে
আমার সমূহ একাকীত্ব।
************************************************************************************************
প্রকাশিতব্য গ্রন্থ:- পদ্য ভরা আমার ছড়া * ছন্দ ভরা আমার ছড়া * রূপকথার রূপ-কথা * ভয়ঙ্কর প্রতিশোধ * গুপ্তধনের সন্ধানে * জীবনের রোদ-রং ইত্যাদি সম্মাননা: পাঠকের ভালোলাগা এবং ভালোবাসা-ই সবচেয়ে বড় পুরস্কার।



কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন