কবিতাগুচ্ছ * গৌতম রায়
টোপ
কেউ কোনদিন জানতে চায় নি
কিভাবে চোখের জল সূর্য ফুটিয়ে
উপহার দিচ্ছে দিন,
বৃহৎ অপচয়কে কাজে লাগানোর
সুতীব্র সৌরআলো প্রয়াস
অন্যদিকে এতো রোদ্দুরেও চিনতে পারিনি
বিষাক্ত অলর্কদের চলন
ফাস্টফুড স্যাচেটের ভেতর
অলক্ষ্মী ফুটিয়ে রেখেছে কর্পোরেট কাল,
নাচাচ্ছে বিজ্ঞাপন
সুদৃশ মোড়কের পেছনে ছুটছি
এক সময় গিলে ফেলেছি টোপ,
ক্রমশ প্রসারিত হচ্ছে কর্কটপৃথিবী।
নিভৃতিজীবন
এতো মেলা খেলা উৎসব আয়োজন
তবু ডিকোডিঙের আশায়
বইছি একটি নিভৃতিজীবন।
এটা আমার নিজস্বী
আবার একে একার বলি কী করে?
নিভৃতি মানে হাজার সঙ্গের সাথে মুখোমুখি হওয়া,
ভাবায়, কথা বলিয়ে নেয়
আত্মজাগরণ, ফোটে সহস্র রাস্তা।
আমি বরং লোকালয় হয়ে উঠলে
অনেকের সাথে ক্যারাম খেলায় খেলায় আত্মবিস্মৃতির আনন্দ খুঁজি।
এ পথ নয় জানি
তবু এই পবিত্র স্বার্থপরতা রাখে উদ্বেগমুক্ত
আমার বয়স মাটির মতো
কত হলো আমি নিজেই জানতে চাই না।
এস এম এস এসেছে
রাগ করবে বলে প্রবল বর্ষণে নেমেছি পথে
আশেপাশের গাছ এন্টেনা হয়ে
বিরাম দিয়েছে আমায়,
বৃষ্টি মাথায় ভালোবাসা নিয়ে পৌঁছেছি গোকুল
আমার দুঃসাহসের সততাকে রাঙিয়েছো চোখ
তোমার ফোন আসেনি
নৌকোয় এসএমএস এসেছে
পৃথিবী জুড়ে বটের ঝুরিরা ঝরিয়েছে হাততালি।
অভাব
পুষ্টির অভাবে মরা মাঁস ওড়ে বাতাসে
চুল পড়ে খসে খসে
না থাকাকে থাকা করতে গেলে উইগ পরতে হয়
মুখে মাখতে হয় চড়া মেকআপ
এতে মুহা নাচ ভালো হলেও
জীবন রেট্যাল ধুনে আরাধ্যকে ঠকিয়ে যায়।
তিনদশকের বেশি কবিতা চর্চা করে আসছেন। কবি তাঁর সৃষ্টির মধ্যে বাঁক বদলের স্বপ্ন দেখতে পছন্দ করেন। এ পর্যন্ত কাব্যগ্রন্থের সংখ্যা তেরো। বিশেষ উল্লেখযোগ্য কাব্যগ্রন্থ হলো – "নয়নতারা অনুশীলন", "চোখের পা", "জল সিন্থেসাইজার", "স্থাপত্য স্টেশন", "ধরেরাখি পারাবত নিশান", "ড্রোনদৃষ্টি" ইত্যাদি। কবি বহু পুরস্কার ও সম্মাননায় সম্মানিত।




কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন