কবিতাগুচ্ছ * অজয় ঘোষ
দিনান্তে
সে এক সময় ছিল
যখন চোখ পাতলেই সকাল
যখন হাত পাতলেই বৃষ্টির জল
যখন বুক পাতলেই রোদ্দুর
এখন বসন্ত ভাবলেই
আর শিমূল পলাশ ভাসে না
জ্বর আসে মধ্য রাতে কাঁপুনি দিয়ে
উচ্ছিষ্ট
সেদিন সন্ধ্যেরাতে ছুঁয়ে দিয়ে বলেছিলে--
মোড় ,
তোমায় উচ্ছিষ্ট ক'রে দিলাম ।
তারপর জীবনের এই বারান্দা
সেই বাগান এ পথ সে পথ
কত ভাঙা বাড়ি প্রাচীন প্রাচীর
কত মধ্যরাতের আলেয়া
ছেঁড়া ছেঁড়া জল নৌকা জল
সব শেষে এই মাটির নিকানো দাওয়া
লক্ষ্মীর পদচিহ্ন
আমার বুকে নখের দাগ
এক ই রকম রয়ে গেছে !
মোছা গেলো না কিছুতেই ।
এই জন্মে যদি দেখা না হয়
পর জন্মে হয়তো হবে
কোনো পথের ধারে
কোনো বাদাম গাছের নিচে
কোনো অচেনা এক ভোরে
অপেক্ষায় থেকো
দুয়ার খুলে রেখো
শিক্ষা
আরো কিছুকাল আগুনের মধ্যে থাকি
তারপর তো যেতেই হবে
যাবার আগে বলে যাব নিশ্চয়
এই ঘর বাড়ি এই সংসার
এই আলোর ঠিকানা
এই আঁধার
এইসব শিখিয়েছে অনেক,
কিন্তু সত্যি কতটা শিখেছি !
সন্দেহ হয় বড় !
আমি জানতাম
যতটা যাওয়া যায় ততটা আজও যাওয়া হল না
অপেক্ষায় থাকতে থাকতে বিকেল এলো
একভাবে বসে থাকতে থাকতে
তোমার নরম আঙুল ছুঁয়ে দিল
আমার শরীর
আমি পাথর হয়ে গেলাম
সেই শুরু
ধীরে ধীরে দিগন্তে চাঁদ উঠলো
আমার পাথর শরীর নিঃসঙ্গ নৌকা হয়ে
ভেসে গেল তোমার দিকে
অথচ সেখানে তুমি নেই
এ কথা আমি জানতাম
সে তো এলো না
যাবার কথা শুনলেই মনে পড়ে
একটা রেলগাড়ি শেষ বিকেল
নির্জন ইষ্টিশানের প্লাটফর্মে
ফুল ঝরানো কুসুম গাছ
আর দূরে ছায়া ছায়া নীল পাহাড়
কেউ কোত্থাও নেই
শুধু মায়া লেগে আছে
বাতাসে কার আঁচলের গন্ধ
সে কি আসবে বিদায় জানাতে
অথচ রেলগাড়ি ছেড়ে দেবার সময় হলো
সে তো এলো না
১৯৪৯ এ জন্ম । শিক্ষাগত যোগ্যতা.. জলপাইগুড়ি পলিটেকনিক থেকে ১৯৭০ এ মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং এ ডিপ্লোমা । কলেজে থাকাকালীন লেখালিখি শুরু । সে সময়ে মিনি পত্রিকা প্রকাশ আরেক বন্ধুকে সঙ্গে নিয়ে । পরবর্তীতে বেশ কিছুকাল লেখালিখি থেকে সরে আসা । ১৯৯০ থেকে আবার শুরু । খুব অল্প কিছু পত্রপত্রিকাতে লেখা ছাপা হয়েছে । ফেসবুকে নিজের দেওয়ালে মূলতঃ লেখালিখি ২০১২/১৩ থেকে । কোনো বই প্রকাশ করায় অনীহা আছে । নিজের ভালবাসায় যেটুকু লিখি ,বন্ধুরা পড়েন তাতেই খুশি ।




কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন