শনিবার, ১৩ এপ্রিল, ২০২৪

অলোক পুষ্পপুত্র

 



অলোক পুষ্পপুত্র * দুটি কবিতা 








প্রতীক্ষা

দাওয়ায় বসে সাজাই খিলিপান

ইষ্টিকুটুম ডাকছে সজনেডালে

গুড় বাতাসা কুঁজোয় রাখা জল

শীতলপাটি রৌদ্রে পুড়ে এলে


হাতপাখাটি ঝালরমোড়া ধার

সাধ্যমতো ফলার চিঁড়ে দই

পানের খিলি এখন কেন সাজি?

তাম্বুলরাগ শিখিয়েছিল সই


সই গিয়েছে মুখটি ঢেকে পানে

একলা ঘরে প্রহর অনন্তর

চণ্ডীদাসের শ্লোক যদি হয় বুড়ি

বড়াই বাঁধে পান-বরোজে ঘর!


দাওয়ায় বসে সাজাই খিলি পান

পথ দেখা যায়, বাঁকের মুখে সাঁকো 

ইষ্টিকুটুম ঐ দেখা যায় ছায়া!

সজনে ফুলের গন্ধ গায়ে মাখো













মৌতাত

তোমাকে উড়িয়ে দেব ছিঁড়ে ধূমজাল, মহাকাল

চোখের তারায় রং বদলায় ঋষিমণ্ডল

মঙ্গলছায়া পড়ে বিষুবরেখায়, সুতো-বুড়ি?

কাচগুঁড়ো-মাঞ্জা ছিঁড়ে লাটাই ফেলে গেছে ঘুড়ি


ঘুড়িডাক বাজে শাঁখ, বায়ু কাটে মদনগোপাল

বড়াই তুলছে শাক, বাড়ন্ত রাধামণি চাল...

ঘূর্ণি সাগরনাদ, বরোজে খসে পড়ে পাতা

কৌমুদী জলাশয়ে মুখ দেখে কাব্যের সীতা


সীতার কৃষক পিতা আলে বসে হুঁকো বিশ্রাম

তন্ত্রীতে খেলে যায় মেঠোসুর ফকিরের গান।

লালন করেন পিতা, মাতা সাধ তিথি ঋতুদিন

প্রদীপের শিখা কাঁপে কাজলদানিতে জমে ঋণ


ঋণকাল উড়ে যায় ঘুরে যায় ধোঁয়ার আকর

মহামায়া, জাদুটোনা সম্বল ফুঁসমন্তর?

মন্ত্র আকাশে তোলে - লালগ্রহ, পূর্ণিমা চাঁদ

ছায়া ফেলো - মায়াবনে - ধনুভাঙা আহত নিষাদ













***************************************************************************************************



অলোক পুষ্পপুত্র

অলোক পুষ্পপুত্র(জন্ম ১৯৭২) আদতে গদ্যকার। প্রকাশিত গল্পগ্রন্থ "একটি রূপকথার জন্ম" তাঁকে ব্যতিক্রমী গদ্যশিল্পী হিসাবে চিহ্নিত করেছে। কাব্যে অলোক সনাতনী ধারার বাহক। তাঁর চতুষ্পদী কাব্যগ্রন্থ "চার(যা)পদ"-এর সাফল্যের পর তিনি মেতেছেন চতুর্দশপদী নিয়ে। নিপুণ দক্ষতায় পুরাতনী পয়ারের কাঠামোয় গড়ে চলেছেন আধুনিক বিষয়। এখানে অবশ্য আমরা পড়ছি ভিন্ন আঙ্গিকে লেখা তাঁর দু'টি কবিতা।   

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন