শনিবার, ১৩ এপ্রিল, ২০২৪

সন্দীপ ঘোষ

 


সন্দীপ ঘোষ * দুটি কবিতা 







একলা

ছেলেটা একলা হনহনিয়ে চলে গেল ওদিকে, মুখে একরাশ বিষণ্ণতা, দেহমনে ক্লান্তির মেঘ,শুরু হলো তুমুল বৃষ্টি, তারপর ক্ষণিকের আশ্রয় বটবৃক্ষের নিচে |

এক সময় থামল বটে, অশ্রুজলে ভিজে যাওয়া 
মলিন জামার জবজবে গন্ধ তাকে আজ বিচলিত করেনি |
একমনে উবু হয়ে বসে কী যেন খোঁজে,
উফ্, অসহ্য একাকীত্বের জ্বালা, 
বুঁদ হয়ে হয়ে যায় আত্মমগ্নতায় | 
টের পায় না কখন অন্তঃপুরের বাসিন্দারা 
তাকে ঘিরে গোল হয়ে দাঁড়িয়ে আছে |
বিবেক বলে, আমাদের দিকে চেয়ে দ্যাখ, 
তোর অবহেলায়
আমরা কেমন জীর্ণ-শীর্ণ হয়ে উঠেছি |
বিশ্বাস বলে, আমরা রয়েছি তোর অপেক্ষায়,
তোকে পথ দেখাব ব'লে |
সংবেদী অনুভব বলে, তুই ঘুরে দাঁড়া,
আমাদের কাছে টেনে নে, 
দেখবি কেটে যাবে অন্ধকার |
পবিত্ৰ আর শুভচিন্তন ছেলেটাকে নাড়িয়ে দেয় |
ঘোর কাটে নিঃসঙ্গতার,
শুনতে পায় ওদের সমব্যথী সুর ------

সেরা সুখ 'ভালোবাসা'র পরম স্পর্শ
আলোকিত করে দেবে জীবনের চলার পথ | 
না পাওয়া গুলো আলোর প্লাবনে  হারিয়ে যাবে,
তারপর মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়বে সমস্ত যন্ত্রণা,
ফিরে আসবে আনন্দ, নতুন করে গড়বে সংসার |

একসময় ছেলেটা 
সবাইকে হৃদের ভেলায় চাপিয়ে 
দৌড়ে গেল বাড়ির দিকে,
ক্লান্তিহীন প্রাণোচ্ছল দেহমনে |




                  







বিষবাষ্পে ভবিষ্যত

দাউদাউ করে জ্বলছে, 

পুড়ছে সংসারীর গহন মনের অবয়ব,
নবজাত যেদিন জন্মিল লেলিহান শিখা 
গ্রাসিল তার  পবিত্ৰ কোমল হৃদয়ের বিশ্বকে |
পৃথিবী যত বড় হতে থাকে-----
পরিবারের লালিত তেজ ঝলসে দেয় এক লহমায় |
কুঁকড়ে ওঠে সারা শরীর এক অসহ্য অব্যক্ত যন্ত্রনায় |

আরে-- যাকে তোমরা জগতের আলো দেখালে, 
হ্যাঁ তোমরা--  বিমুখ তো বটেই, 
কেন তোমাদের সারা কোল জুড়ে নিকষ কালোর সামিয়ানা  ? 
রুখুসুখু ভাঙাচোরা কর্কশ বাগিচায়
কেন  দিচ্ছনা পবিত্ৰ গঙ্গাজল ? 
দ্যাখো চেয়ে, দ্যাখো---  কেমন যেন নেতিয়ে পড়েছে শিশুটা !

চব্বিশ ঘন্টা গোলাগুলি বর্ষণে ব্যস্ত অশান্ত ,
তোমাদের মুখনিঃসৃত বেআইনী অশ্রাব্য শব্দগুলো
তিরের ফলা হয়ে তোমার শিশুটার
তুলতুলে মন ও নরম বক্ষপিঞ্জরে
ঢুকছে একটু একটু করে | 
জানো এর পরিণাম !
ভবিষ্যতই বলবে সেকথা…




















***********************************************************************************************


     সন্দীপ ঘোষ

জন্ম-06/01/1975, তালডাংরা, বাঁকুড়া থেকে লিখছেন।  বানিজ্যে স্নাতক । ছাত্র বয়স থেকেই লেখার নেশা। তবে, প্রকৃত লেখালেখি শুরু বিভিন্ন দৈনিক সংবাদ পত্রের পাঠকের কলম বিভাগে । রেডিও -টিভিতে চিঠি পাঠানোর অদম্য নেশা । জীবনের টানাপোড়েনে সাময়িক বিরতি । 2016'সালে দৈনিক যুগশঙ্খ পত্রিকায় পাঠকের কলম বিভাগে আবার লেখা শুরু। প্রথম গল্প প্রকাশ পায় বিষ্ণুপুর, বাঁকুড়া থেকে প্রকাশিত ছোটদের জন্য 'সেতু জুনিয়ার 4 ' গল্প সংকলনে, গল্পের নাম 'পাঁচু দাদুর বাগান'। এছাড়াও বিভিন্ন পত্রপত্রিকায় গল্প-কবিতা- প্রবন্ধ প্রকাশ। ভালো বাসেন নিজের লেখা গানে সুর করতে ।



কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন