কবি সুজয় যশ-এর দুটি কবিতা
স্বত্ব বিলোপ
রেশমগুটির মতো নিজেকে জড়িয়ে আছে
আমার সহজাত লালা ।
তুমি চাইলেই বেড়িয়ে আসতে পারি না ।
কেউ কেউ হাত নাড়ে ।
আমি গুটিয়ে রাখি নিজেকে
খুব পরিচিত লার্ভার মতো ।
তুমি বললেই পারি না ভাঙতে
আমার পাঁজরে গড়া নিশ্ছিদ্র বাসর ।
কেউ কেউ প্রহর গোনে
কখন পাখনা মেলে ভুল করে
কেটে দেবো রেশমগুটি ।
প্রজাপতি হওয়া বড় অদ্ভুত !!
নিজেই বদলে যাই নিজের চোখে ।
চেনা অচেনা
বহুকাল এ রাস্তায় পা পড়েনি ।
কালো ঘোড়া পাহাড় ডিঙিয়ে
আর হাঁটতে পারে নি ।
আজ এ গাঁয়ে কার যেন বিয়ে ।
নিউমোনিয়া হয়ে , গেলো বার
ভজহরি শশ্মানে আগুন পেল ।
আজ তো সোমবার । হাটবার ।
কে যেন বাজার দিয়ে হেঁটে গেলো ।
বহুকাল এ উঠোনে পা রাখেনি কেউ ।
ধুলো জমে । পাতা পড়ে শুকিয়ে ।
বলি বাড়িতে আছেন কেউ ?
পুরনো স্মৃতির ঘরে আছেন কি কেউ লুকিয়ে ?
ঐ তো পুরনো সেই টিনের চালে
পড়ে আছে চাকা ভাঙা খেলনা ।
দড়ি ছেঁড়া দোলনাটা বকুলের ডালে
দেখি ডাঁট ভেঙে পড়ে আছে রুটির বেলনা ।
বহুকাল এই আমাকে দেখেনি তো কেউ ।
উচ্চতা বেড়ে গেছে অনেকটা ।
সকলের চোখে মুখে প্রশ্নের ঢেউ ।
শুধু তার মাঝে চেনা মুখ কয়েকটা ।
লালু কি চিনতে পারল ?
সবাই মুখ চাওয়া চায়ি করে ফিরে গেলো ।
অবশেষে কে হারল ?
বহুকাল পর কে যেন আবার কুয়াশায় ডুবে গেলো ।
বহুকাল আমি আর খুঁজি নি
ধুলোর পর্দা খুব মোটা ।
ভাঙা খেলনার কথা আর ভাবি নি
নিজেকে খামচে আজ ওঠা ।
বহুকাল বহুকাল নিজেকে খুঁজি নি
আলগোছে সাবধানে কোথাও কাঁদি নি ।
****************************************************************
অত্যন্ত সম্ভাবনাময় কবিদের একজন কবি সুজয় যশ। ওঁর কবিতায় আমি গভীর নিমগ্ন এক পরাবাস্তব খুঁজে পাই। এ কবির একান্ত নিজস্ব অভিজ্ঞা। শুভকামনা।
উত্তরমুছুনঅসংখ্য ধন্যবাদ জানাই দাদা
মুছুনএই মন্তব্যটি লেখক দ্বারা সরানো হয়েছে।
উত্তরমুছুনকবি সুজয় যশের কবিতার দুটি বিশেষ দিক হল সরলতা আর শব্দ নিয়ে খেলার অপার দক্ষতা।ওনার কবিতা পড়তে কোন অভিধানের আশ্রয় নিতে হয় না।একমাত্র আশ্রয় চাই মনের।সেই সংযোগটুকু হলেই অপার্থিব আনন্দ পাওয়া যায়
উত্তরমুছুনভালোবাসা অনিঃশেষ
মুছুন