লালন চাঁদ * তিনটি কবিতা
মানুষ
এখানে সুখের বসতি গড়ে দলা দলা চাঁদ
নদীর ছায়ায় ভেজে জোছনা
দেয়াল জুড়ে বেড়ে ওঠে মাধবীলতা জীর্ণ মহিমায়
এ বসতি এখনো শান্ত
তবু মাঝে মাঝে ফিরে আসে রাজনীতির ঢেউ
ঘৃণা বিদ্বেষে ভরে ওঠে হাওয়া
লাশের গায়ে মাখা লাশ
লাশের গায়ে ফুটে ওঠে যুদ্ধের অশনি সংকেত
বুকের ভেতর বয়ে চলা ধলেশ্বরী থেমে যায় নিমেষেই
তবু ফুল ফোটে
আজও কুচ্ছিত বিষবৃক্ষ তুলে ফেলে নিরন্ন মানুষ
ভাত
সেই শৈশব থেকে ভাত খেতে চেয়েছি
ভাত পাই নি
পেয়েছি ভাতের মাড়
যেখানে ভাত হচ্ছে সেখানেও গেছি
হাঁড়ির পাশে দাঁড়িয়ে থেকেছি ঘন্টার পর ঘন্টা
আমার ডাক আসে নি। ভাত শেষ
মাঠে যাই। ভাত গাছ বুনি
মহাজন তুলে নিয়ে যায় কাটা ফসল
ভুখা পেট নিয়ে ফিরে আসি খোলা আকাশ বাড়ি
ভাত ভাত করে মৃত্যুর বিছানায় শুই
আমার কবরের চারপাশে ভাতের খরা। মৃত্যু থৈ থৈ
তুমি
পথ ভীষণ প্রতিকূল
তবু হাঁটতে হাঁটতে পেরিয়ে যাচ্ছি শীত
তুমি আসতে চেয়েছিলে। এলে না
আমারও আর মেলায় যাওয়া হলো না
একাকী থাকি
আমার দুচোখের ভেতর সন্ধ্যা নামে। বুকে আঁটে খিল
চায়ের নেশা পেয়ে বসে রোজ
চা বানাতে গিয়ে হাত পুড়ি
তবু তোমাকে বলি না। ঢেকে রাখি হাত
তুমি আসলে খুশি হই
না আসলে মৃত্যুকে বুকে নিয়ে পাশ ফিরে শুই
*****************************************************************************************************
লালন চাঁদ
জন্ম পঞ্চাশের দশকের মাঝামাঝি। ছোটোবেলা থেকেই লেখালেখি। স্কুলের একটি ম্যাগাজিনে প্রথম কবিতা প্রকাশ। কলেজ লাইফে বিভিন্ন পত্র পত্রিকায় অনিয়মিত লেখালেখি। স্নাতকোত্তর শেষে একটা ছোটো কাজ। লেখা নেশা। রক্তের সাথে মিশে আছে । এ যাবৎ এগারোটি একক কাব্যগ্রন্থ---- @ হৃদয়ে তুমি @ প্রথম কদম ফুল। @ কেষ্টপুরের কেয়া মল্লিক। @ এই সময় অস্থির সময়। @ রমা রায়। @ শব্দে সাজাই কবিতা।@ বেলাভূমি। @ ঈশ্বরের হৃদয়ে জলের শব্দ। @ নীল সমুদ্র। @ অতল জলের বসত। @ বলয় গ্রাস।
তিনটি ই কাব্যগ্রন্থ। @ এখানে আকাশ।@ হৃদয়ভূমি @ আরশিনগর। এছাড়া আছে বেশ কিছু অপ্রকাশিত নাটক ও উপন্যাস।



কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন