শুক্রবার, ১৪ জুন, ২০২৪

কৌশিক সেন




কৌশিক সেন * দু’টি কবিতা 







সিজারিয়ান

কাঁচির ভিতর একটা কল্পতরু, কামধেনু গাভী

এক সুরম্য রাজপ্রাসাদও। গোধূলির সবুজ আঁচিলে 

লেগে থাকে শুভ্র মেঘের ভিতর প্রতিঘাতের আখ্যান।


ওখানে সেলাইয়ের দাগ। নিভৃত দানবের ক্রন্দন

ক্ষুধা বা যন্ত্রণা যেখানে প্রাথমিক। মন্থনগাছ হয়ে

উঠে গেছে কবেকার নাভীকুণ্ডলীতে…


কাঁচির ভিতর এক বর্ণানুক্রমিক সূচি। নিঃসঙ্গ

কবিতার শিরোনাম। রোজ রোজ উপচে ওঠা 

অনাম্নী চিন্ময়ী শরীর। কাঁচির অন্তরালে রোগমুক্তি।


যা’কিছু ঘাত প্রতিঘাত, তুলে রাখা স্ক্যালপেলে 

মুঠোয় বন্দী নাবিকের রত্নধন। সামুদ্রিক শঙ্খমালা

ঈশ্বরের মত আমিও প্রত্নবিন্দু এঁকে রাখি হ্রদের স্বচ্ছতায়।











উদ্বর্তন

যুদ্ধের পর তোমাকে বলেছিলাম প্রিয়, স্থান সংকুলান কর। শত্রুপক্ষের রক্তে দুদণ্ড শান্তি খোঁজবার আগে স্খলন জুড়ে দাও বিক্ষত অশ্বের হ্রেষায়। যদি কোন পড়ে চিতাকাঠ, ক্ষতি নাই, গব্যঘৃতে দহন করো দাহ্য পৌরুষ। যুদ্ধের পর আর কোনও রোষ নাই, আক্রোশ নাই। শুধু ঘ্রাণে ঘ্রাণে বনজ্যোৎস্নার গান, মদিরার স্পর্শকাতরতা। শোনো, অনন্ত রতিরঙ্গে ভরিয়ে তোলো দূরবর্তী তাবুটি।

যুদ্ধের পর মৃত হস্তির পিঠ থেকে নামিয়ে এনো বিষাদের হাওদা।  কান্নায় কোনও অলঙ্কার নাই, যুক্তাক্ষর নাই, শুধুই প্রলাপ। তার উপর রেখে এসো প্রাসঙ্গিক শান্তিপ্রস্তাবের খসড়া। বোলো, স্বান্তনাবাক্যে কোনও কার্যোদ্ধার হয়না, বরং ল্যাজামুড়ো কেটে এনো দ্বাদশীর ধিঙ্গি চাঁদের। মরিয়া হরিণীর মত একদিন আমরাও পার হয়ে যাব এই ঈশ্বরীয় বিষাদ, দেখো প্রিয়!



















***************************************************************************************



কৌশিক সেন 

জন্ম :২২ সেপ্টেম্বর ১৯৭৬ বহরমপুর, মুর্শিদাবাদে। ছাত্রজীবন ও বেড়ে ওঠা বহরমপুর শহরেই।  কলেজ উত্তীর্ণ হওয়ার পর কঠোর জীবন সংগ্রাম। সাতাশ বছর বয়সে দিল্লীতে আগমন।  কেন্দ্রীয় সরকারী কর্মচারী। আঠেরো বছর ধরে দিল্লীর বাসিন্দা।  দিল্লী ও দিল্লীর বাইরে বেশ কিছু পত্র পত্রিকায় লেখা প্রকাশিত ও প্রশংসিত।  প্রকাশিত কাব্যগ্রন্থ : রাই জাগো গো, কর্ষণলিপি,পাখিঘুম


কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন