চন্দ্রাণী গোস্বামী * দু’টি কবিতা
ভূমিকা-বিহীন
তুমিও কলিজা উপুড় করে উনুনে জ্বলিয়েছিলে
সম-বৎসরের খুদকুঁড়ো। কিছু ভাঙা আতপ।
সহজিয়া বিশ্বাস।
তোমায় না পাওয়া নীরবেই মেনে নিয়ে আমিও গেয়েছি----
চরণ দু'খানই তবে দিও।
তবুও সব ঋতুতেই কালবোশেখী...
দুমড়ায় মুচড়ায় ঘর, পাখির ডানা, পুকুরের স্থির জল।
তাও গাই, মন রে কৃষিকাজ জানো না
প্লাবনেই অধিক থিতু হয় পলিমাটি,
নাবালে রুয়াই আমনের বীজ
অধিক মিলন শেষে তাদের পায়ের গোছ
ভারী হয়ে আসে...আসন্নপ্রসবা।
আমিও ক্ষরণবতী নারী, শ্রাবণ ফুরিয়ে এলে
তুমি ছাড়া কোথা যে যাই...
আমি তো রাধারই মতো ভূমিকা-বিহীন।
পেয়েছি কি ছুটি!
অবেলায় বকেছিলে বহুবার,
লেখাজোখা নেই
তবুও শুধিয়েছিলাম ---
এ কি আনুষ্ঠানিক প্রীতি সম্ভাষন!
বহুবার তিরষ্কৃত হয়েও উত্তর মেলেনি।
কালক্রমে সন্ধ্যা হলেই ভিজা চুল, ঘাম গা
পুরানো আমলের গ্রামোফোন রেকর্ডে
বেজে চলে পঙ্কজ মল্লিক--- "পেয়েছি ছুটি, বিদায় দেহ ভাই"
অনবরত ঘোরে সেলাই মেশিন
পায়ের ফাঁক দিয়ে মেশিনের চাকার সাথে ঘুরে ঘুরে
গড়িয়ে নামছে বসন্ত।
তলপেটে জমে থাকা লাজরক্তও ...
আত্মহত্যার কথা এখনো ভাবছি না---আপাতত ভাবছি ---
আরও কতোদিন হেমন্তের শেষ কোনাটুকু ধরে সখে
পোড়া অবেলার বসন্তকে ঘোরাতে পারব!
**********************************************************
জন্ম সত্তর দশকের শেষদিকে। স্কুল জীবন, বড়ো হয়ে ওঠা সবই কলকাতায়। পড়াশোনা স্নাতকোত্তর , কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে। বর্তমানে কলকাতার একটি কলেজে হিসাব রক্ষণ বিভাগে কর্মরত। ছোটবেলা থেকেই লেখালেখির প্রতি তীব্র আসক্তি। নতুন শতকের প্রথম দশকের শেষ থেকে নিয়মিত লেখালেখি। কবিতা আশ্রম, কৃত্তিবাস, গাঙ্গেয়, অপদর্থের আদ্যক্ষর, বম্বে ডাক, তমোহা, সাজি পত্রিকা, বিকল্প বার্তা সহ বিভিন্ন পত্র পত্রিকায় লেখা প্রকাশিত।






কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন