তিনটি কবিতা * শীলা দাশ
পানকৌড়ি
ঝিরিঝিরি বৃষ্টিতে রাস্তা মনকেমন ।
বাড়ির বড় উঠোনে পায়ের পাতা ডোবা
জলে পা ডুবিয়ে কাগজের নৌকো
ভাসাতো চেনা বাল্যকাল।পায়ের নিচে
ইশারায় নাচে দড়ি কলের মাঠ।
পাক খায় ফুটবল গোলপোস্টের
এপারে ওপারে। পাশের পুকুরে বেশ
কোমল হাঁসের সাঁতার।হঠাৎ কোন দেশ
থেকে পালিয়ে পরিযায়ী পানকৌড়ি
এসে বসে দুদিন আগে ঝড়ে ভেঙে
পড়া রাধাচূড়ার জলে ডোবা ডালে।
জলে টুপ করে ডুব দেয় সে আর ভেসে
ওঠে কলকলে সুখে, মীন রানি তার মুখে।
তার মলমলের মত কালো পাখনাতে
জমে থাকে কত চুপকথা।ভিজে ডানা
ঝাড়ে আর ঝরে পড়ে অলীক রূপকথা।
শ্রাবণধারা
পাখি ডাকা দুপুরবেলায়
শ্রাবণের বৃষ্টি নামে রিমঝিম
টুং টাঙ টাপুর টুপুর সেতার বাজে
দিগন্তে ঝিরিঝিরি জলছবি নাচে
ঢেউখেলানো সুমিষ্ট বাতাস কি
শনশন শব্দে ঝাঁপিয়ে পড়ে !
বুকের ভেতর যত ধুলো সব
ভিজে যায়,চোখের আয়নায়
ভাসে মেঘের ঝিলিক,শব্দ
বেজে ওঠে গুরু গুরু।মেহগনি
পাতার ফাঁকে দেখা যায় ছিন্ন
আকাশ।টুপটুপ জল পড়ে পাতা
থেকে কথামালার মত। স্মৃতির
জানলায় খেলা করে বালিকা বেলা।
শ্রাবণ রাতের কবিতা
আমার জীবনযাপনে
চিরসবুজ গল্পকথা
আমার খোলা দরজায়
সোনালী রোদের আনাগোনা
মাঝে মাঝে বৃষ্টিতে ভেজা
হাওয়া ঢুকে পড়ে গোপনে
আমার তুচ্ছ হৃদয়ে বাসা বোনে
শ্রাবণ রাতের মেঘজলের কবিতা।
******************************************************************************************




কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন