প্রাণজি বসাক * দু’টি কবিতা
স্পর্শ গন্ধ
পুকুরের জল সারাদিন রোদে পুড়ে তপ্ত হয় গা পোড়ে
দুই মানুষ গভীরতা নিয়ে জল দিব্যি আছে স্থবিরতায়
শিরিষগাছ নুয়ে রাখে ডালপালা জলে পড়ে তার ছায়া
কিছুটা হলেও বাতাস ঘোরে ফেরে তরঙ্গ ভাসে জলে
কিছুটা জলের ছিঁটে ভিজে যেতে চাই শরীরে কপালে
নানান কামকম্ম সেরে কেউ কেউ পা ডোবায় পুকুরে
ততক্ষণে রোদও দিনের মতো সরে পড়ে দিগন্ত বলয়ে
কারো কোনো তাগিদ নেই দূর পাহাড় থেকে অন্ধকার
ছুটে আসে আর বাতাস ভূতুড়ে গন্ধ জড়িয়ে নেশাতুর
অবুঝ মানুষ খোঁজে মানুষের স্পর্শ আর শ্বাস বিশ্বাস
আমিও মানুষ
মানচিত্রে উপবাসের দাগ কেটে কেটে বদলে গেছে
পাহাড়-পর্বত হিমালয় নেমে গেছে নদীনালা গ্রামশহর
ছেড়ে দক্ষিণ মুখে – সাকিন খুঁজতে খুঁজতে কোথাও
খুঁজে পাই না তোমার মুখে বহুবার শোনা গ্রামের নাম
হয়রানি আর কাকে বলে অকেজো গুগল ম্যাপ তবু
সবুজ জলা জঙ্গল সতেজ নরম বাতাস ভালোবাসে
মন থেকে হৃদয় থেকে মুছে গেছে পিনকোড ঠিকানা
আমিও কখন হারিয়ে গেছি গ্রাম্য মানচিত্রে ঘুরপাকে
আমাকে চিনতেই পারছে না এখানের মানুষ জনেরা
যেন অন্য গ্রহের কেউ কাছে গিয়ে বলি আমিও মানুষ
***********************************************************************************************
পেশায় শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রশাসক ও নেশায় কবি। হিন্দি বলয়ে বাংলা ভাষার কবি। কবিতাই একমাত্র জীবনের ওষধি, একথায় বিশ্বাসী। স্কুল ও কলেজ জীবন কেটেছে উত্তরবঙ্গের তুফানগঞ্জ তথা কোচবিহার শহরে। চাকরিসূত্রে রাজধানী দিল্লিবাসী প্রায় ৪৩ বছর। আইআইটি দিল্লির ক্যাম্পাসে এবং আশেপাশে কাটালেন দীর্ঘ জীবন। কবিতা আড্ডা জমে ওঠে এখান থেকেই।
খোলবাদক পিতা ছিলেন তার কবিতার প্রেরণা। মূলত লিটম্যাগের কবি। কবিতা ছোটোগল্প অণুগল্পে তিনি স্বতঃস্ফূর্ত। দেশবিদেশে বহুবার সম্মানিত। বাংলা কবিতা নিয়ে বহুবার বাংলাদেশ এবং দুবার ইউরোপ ভ্রমণ করেছেন।
রূপসী বাংলা পুরস্কার, বনানী পুরস্কার , ভারত- বাংলাদেশ সাহিত্য সংহতি পুরস্কার, শৃন্বন্তু সারস্বত সম্মান, উত্তর বাংলা পুরস্কার,তিনবাংলা সম্মাননা উল্লেখযোগ্য। বিভিন্ন সময়ে তিনটি পত্রিকা এবং দুটি কাব্যসংকলন সম্পাদনা করেছেন। তাঁর রচিত কাব্যগ্রন্থের সংখ্যা ২২ টি।






কবির কবিতা ও পরিচিতি দুই'ই ভালোলাগলো।
উত্তরমুছুন