ছোটন গুপ্ত * দু'টি কবিতা
এই যে আমি
আমি কী আর তেমন কোনও বিখ্যাত হে !
খুব সাধারণ আমার যাপন একলা একাই
মাথার উপর দেনার বসত দিনান্তে ঠাঁই
লিখতে থাকি স্থবির কালের ক্ষোভ আবহে ।
নেই তো আমার স্মারক জারক চাওয়া পাওয়ায়
বেশ আছি ভাই মাস-মজুরের খোরাক হাতে,
আলোর মশাল জ্বালিয়ে রাখি আঁধার রাতে
দিন শুরু হয় রাস্তা চলায় আলোয় হাওয়ায়–
আকাশ আমার স্বপ্নচারণ পাখির ডানায়
আয় কে আছিস, সুনীল আকাশ সাজিয়ে দিবি,
দিশায় কেবল ভালোবাসার এক পৃথিবী
মানবতার মুক্তিকে চাই হার না মানায় ।
তোমরা যারা সিংহাসনের স্পর্শে বাঁচো
একটু পেলে রাষ্ট্র আশিস আস্থা জানাও
রোজ সকালে সাবধানতায় বাজারে যাও
হাঁচলে রাজা কাশলে মনিব দুঃখে নাচো–
তাদের কাছে যাইনে আমি ভয় যে বেজায়
এই যে খাতায় রাতবিরেতে স্বপ্ন আঁকি
একলা একাই যা খুশি তাই লিখতে থাকি
আমার বাঁচা রাষ্ট্র ভাঙার নেশাতে ঠায় ।
যেতে যেতে
এ পথে অনন্ত আলো আর ছায়াদের সাথে হেঁটে
যাওয়া রোদ্দুরে চেয়ে দেখি আকাশের পানে।
সেখানে পাখির যাওয়া আসা দু একটি বিমান
মাঝেমাঝে উড়ে যায়। অনন্ত রোদের কাছে হাত
পাতি। ছায়াকে সঙ্গী করে খোঁজ করি কোথায়
বিকেল।
রাত গাঢ় হলে ঘুম পায়, খোঁজ করি শয্যার,
নক্ষত্রমালা ডাকে, আয় আয়, চলে আয়।
রাস্তায় জোনাক আলো মিটমিটে ছায়া বিস্তারে
প্রশস্ত উঠোন জুড়ে ছবি আঁকে সারি সারি ঘুমন্ত
লোকের। ওরা ফুটপাতে সারি দিয়ে শুয়ে, আমি
কি ওদের মত ঘুমাতে পারি !
সাধারণ দিনে মেঘ আসে উড়ে চলে যায়। কখনও
বৃষ্টি হলে ছাতা নেই, নিবিড় ভিজতে ভালো লাগে।
তারপর সারারাত শরীরের জ্বরজ্বালা বকে। আমি
সেই বকুনিকে একপাশে মেলে দিয়ে গাছতলে
পূর্ণিমা দেখি। আহা, কত আলো। ভোর হবে কাল।
কুয়াশা চাদর ভেঙে ভোররাতে একা একা চলে
যাই আলোবাসা। বলে যাই, সূর্যের সোনারোদ
এলে মেলে দেবো সবটুকু খুশি আর সুরছাড়া
গান। আপাতত স্বপ্নের রাতে, হেঁটে যাই দূর থেকে
দূরে, যাওয়া সেই আনন্দপুরে।
********************************************************************
পোশাকি নাম প্রবীর দাশগুপ্ত। জন্ম ডিসেম্বর ১৯৬৪। পেশায় উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের অর্থনীতির শিক্ষক । এ পর্যন্ত প্রকাশিত কাব্যগ্রন্থ সংখ্যা ছয়। শেষ কাব্যগ্রন্থ, 'ছেঁড়া স্বপ্ন, অথবা'। সমাজের খেটে খাওয়া মানুষের মুক্তির স্বপ্ন জাগিয়ে রাখে কবিকে।






কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন