জয়িতা ভট্টাচার্য * দু'টি কবিতা
পুকুরের কথা
যেন এক্ষুনি না পেলে মরে যাব।
যেন জল বিনা মাছ।
এখানেই ছিলো কালচে পুকুর। যখন এই পাড়ায় থাকতে
এলাম। এখন সেখানে ক্লাবঘর।
কলমি আর হিঞ্চের ভিড়।
পা-জড়ানো সাপ। ধারে ধারে মাটি। মাটির তলায়
ব্যাং, গেঁড়ি,গুগলি।
শত শত পোকাদের নিরাপদ ঘর-দোর স্বজন।
এখন যে স্থানে দিনভর তাস খেলে কয়জন।
মাছ আর মাছরাঙা যেদিন বেঘর হলো।
দেখেছি জল হীন পৃথিবীর দুর্দশা।
ওইসব তুচ্ছ প্রাণ কোনো ঈশ্বর রক্ষা করেনি।
মরে গেছে গেঁড়ি গুগলি অগুন্তি।
মরে গেছে তেলাপিয়া।মরে গেছে কেঁচো আর শাক।
জলের অভাবে।খাবি খেতে খেতে মরে গেছে ওরা।
এখন পৃথিবীর একটি চুনকাম করা ঘরে
ওরা তাস খেলে। পুকুরের 'পরে।
পৃথিবীর পুকুরের কাছে। মাছ আর মাছরাঙা।
পাড়ে তালগাছ।সারি সারি ছায়া
ভাবি।হয়তো আসবে তুমি আজ।বিকেলের দিকে।
মাছেরা আমার সাথী।
চালচিত্র
কিছু বলার থাকে না।
চুপচাপ বসে আকাশের ছবি আঁকো তুমি।
নীলচে আকাশ
মাঠ আর পুকুর,তালগাছ
ওখানে ছায়া পড়ে।
ছায়া
দু -একটা কালো ঘোড়া ঘাস খায়
নিরাপদ ব্যবধানে।
বেদনার মতো ম্লান মুখ।
ঘাস
সময়টা ভালো নয়।
ভয়
কখন কী হয়
অসুখের ভয় পায় সবাই
বিচ্ছেদের।
ভয়
কখনো কি সুখ ছিল?
বলো
স্বপ্নের সাক্ষর বসতির পরে
রেখে গেছে হাঁস।
পাতি হাঁস
বাজারে বসেছি
বিবেক-হলদি বেচে দেব বলে
জলের দামে।
বাজারে
*************************************************************************************************
কলকাতা নিবাসী সাহিত্যিক জয়িতা ভট্টাচার্য পেশায় শিক্ষক। অল্প বয়স থেকে লেখালিখি। প্রধানত মানবাধিকার বিষয়ক বুলেটিন ও খবরের কাগজে লিখতেন। প্রথম প্রেম কবিতা। এযাবৎ চারটি কবিতার বই,একটি গল্পের বই ও একটি উপন্যাস প্রকাশিত। লিখেছেন অসংখ্য সংকলনে। এছাড়াও নিয়মিত প্রবন্ধ, ও অনুবাদ কবিতা লেখেন বৈদ্যুতিন ও মুদ্রিত পত্রিকায়। পেয়েছেন সরকারি ও সাহিত্য গোষ্ঠীর নানা সম্মান।





কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন