রাজেশ গঙ্গোপাধ্যায় * দু'টি কবিতা
শীত – ১
আসক্তিতে উত্তাপ কমে এলে বিকল্পের খোঁজে সাহসী হয়ে
ওঠারা
একেকটা ক্ষণস্থায়ী গল্পের রেশ রেখে যায় কারণ ছাড়াই
কুয়াশাকে স্বাক্ষী রেখে সম্পর্কে আড়াল আনে ছোট হয়ে
আসা দিন
ধুলোকণায় বাষ্প জমা হল...এরপর যা হওয়ার ছিল তাই হয়
একটা চুমু বন্ধক রাখতে গিয়ে কতকিছু যে চলে যায় জলের
দরেই
জানতে ইচ্ছে হয় তোমাদের ছাদে কি এখনও
সাহসী সন্ধ্যারা নেমে আসে কালপুরুষ ঢেকে দেওয়া মেঘের
নীচে!
মাধবীলতা ফুলে বসা প্রজাপতিরা যখন তখন ঢুকে পড়ত
দোতলার ঘরে
দুএকটা কি আর গায়ে এসে বসেনি! তো!
গোটা ক্যালেন্ডার জুড়ে শীতকাল নেমে আসে যেকোন
অছিলায়
শীত – ২
প্রয়োজনের খাতিরে সাঁকো পেতে দিয়েছিলে তরুণ নদীতে…
সাবলীল পারাপারে কে বুঝেছে মহার্ঘ্যের আদানপ্রদান
স্রোত থিতিয়ে এলে আশরীর মেদ নিয়ে মন্থর হয়ে আসে চলন
মহিমা
অনাকাঙ্খার ঘাসসবুজ চর…ধার কমে গেছে বলে আগেকার
সবই মিছে
এই ভুল বাড়তে বাড়তে যাপনের সমান হয়ে এলে
কুয়াশাবিভ্রমে ওপাড়ের ইটভাটার আলোগুলোও দেখা
যাচ্ছেনা
নদী কি মুছে গেল! এই উদ্বেগের মুখে জল দেয় একরোখা
ডিসেম্বর মাস
শ্মশানফেরত হু হু হাওয়ায় অর্দ্ধদগ্ধ শরীরের গন্ধে ভারী হয়ে
ওঠে চারপাশ
বিরক্তিতে চায়ের ভাড়ে চুমুক দেয় বাধ্য শ্মশানযাত্রী কজন
সাঁকোর ওপর দিয়ে কেউ নেই পেরিয়ে যাওয়ার
************************************************************************************************
রাজেশ গঙ্গোপাধ্যায় 'কবি' পরিচয়ে চরম অস্বস্তি বোধ করা একজন। কবিতার সঙ্গে রয়েছেন দীর্ঘকাল। অশেষ পাঠক সত্তার পাত্রটিতে কখন যে অধক্ষেপ হিসেবে জমা হয়ে উঠেছে কিছু শব্দ, শব্দবন্ধ, বাক্য...আর সেসব ছাপার অক্ষরে প্রকাশিতও হয়েছে 'দেশ', 'কৃত্তিবাস', 'ভাষাবন্ধন', 'ভাষানগর', 'পরবাস', 'বাংলালাইভ.কম', 'নবকল্লোল', 'বম্বেduck' প্রভৃতি এবং আরো বেশ কিছু পত্রিকায়...তখন কবিতার প্রতি আরও ঝুঁকে এসেছেন। একাকী মুহূর্তগুলোয় রণিত হয়েছে তাঁর ইশ্বরের অমোঘ পংক্তি -"শুধু দশটা মিনিট ভালোভাবে বাঁচব বলে পুরোটা শতাব্দী কত কষ্ট করে বেঁচে রইলাম"..





কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন