কনিষ্ক শাসমল * তিনটি কবিতা
তুমি ও আলিঙ্গনের অভিপ্রায়
এখন দরকার একটা ময়ূরাক্ষী নদী আর তোমার
কাছ থেকে একটা প্রস্তাব
সেটা কোনো আন্দোলনকারী বা বিক্ষিপ্ত
বিরক্তিকর হলেও চলবে।
তোমার সম্মুখে উপস্থিত আমি সন্ধ্যা বেলার
আসামি
দেরি করে আসা টাইম টেবিল।
মাথা নিচু, চুপচাপ পেছনে লুকিয়ে রাখা
নীলখাম।
এখন দরকার একপসলা বৃষ্টি আর তোমার কাছ
থেকে একটা এগিয়ে আসা আলিঙ্গন
সেটা মনে মনে হোক বা সামনাসামনি।
দেখা একবার হবেই
শেষবারের মতো আমাদের দেখা একবার হবেই
ট্রাফিক সিগন্যালে বা বন্ধ ট্রামে
ইউরোপীয় মিউজিয়াম বা অ্যাক্সিডেন্টের আগে
অপরিচিত প্লাটফর্মে একবার দেখা হবেই।
বর্ষাকালে জোনাকীর মতো, শীতের
ফেরিওয়ালার মতো। চায়ের দোকানে ডুবে যাওয়া
বিস্কুটের স্বাদে আমাদের দেখা একবার হবেই।
মিছিলে মাথা ফাটলে তোমার ওড়না বা তোমার
ওড়নায় শুঁয়পোকা বসলে আমার প্রজাপতি দেখা
হবেই।
কোনো এক নাইট শোয়ে বা শাড়ির দোকানে,
ল্যাম্পপোস্টের আড়ালে বা মুখমুখি আদালতে,
অগ্নিসাক্ষী রেখে বা কুরুক্ষেত্রে দেখা তো হবেই।
তোমার শরৎকালীন জ্বরের মধ্যে _ আমার
ঘর ভাঙা ভয়ের মধ্যে, প্যারাসিটামল বা থার্মোমিটারে।
জল পট্টি _ শুষ্ক চুমুয়
পদ্মা পারাপারে _ পদ্মার ধারে, ঢাকায় বা কোলকাতায়
গার্ডেনরিচে বা ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় দেখা তো একবার
হবেই।
কোনো রাতে সার্টারলাইটের নিচে একটা মাঠের
উপর তুমি খালি হাতে আমি বিষন্ন মুখে দেখা
একবার হবেই।
লাল নীল সংসার
আপাতত চাঁদের গল্প থাক। উনুনের উপর কেটলি
আর তোমার ঘামে ভেজা পিঠ - চিপচিপে ব্লাউজ
আমি অবশ্য উনুনের পাশেই বসে, আগুন আর
তোমার ঝুঁকেপড়া ইশারার দিকে তাকিয়ে।
তোমার রবীন্দ্রনাথ আর জগন্নাথ পাশাপাশি
ক্যালেন্ডার
প্রদীপ, পরিচয়পত্র, ধূপদানী মাসের শেষের
সংসার
তোমার অদ্ভুত সব বায়না।
আমি অবশ্য তোমার দিকেই তাকিয়ে।
খাম ভর্তি সুখ দুঃখের সাংসারিক গল্প,
একশো সাত রেডিও স্টেশন, দুপুরের বাঁচানো অল্প
মুরগির মাংস
লো ভোল্টেজের সিলিং ফ্যান
তোমার কাজে কাজে রাত ঘন হয়ে ওঠে
আমি দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে ঘড়ির হৃদস্পন্দন মাপছি।
কোনো এক গ্ৰীষ্মকালীন গল্পে চাঁদ বড় হয়ে
উঠলে রাতের বেলায় যা খুশি হতে পারে।
******************************************************************************************************






কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন