কৌশিক সেন * দু'টি কবিতা
টনসিল
শুঁয়োপোকা খেয়ে যায় লবণের লিনতাপ
শীতের সৌরতেজী পানসি,
ওসব বেদনাদাগ, থাক
কুয়াশার উষ্ণতা রাখ্
স্পর্শজনিত যত টনসিল!
মেঘমল্লারে যত ধূপকাঠি জ্বলে যাওয়া
আদিতম কোনো এক ঋগ্বেদ,
মিলনের উৎসবে ভয়
আবাহনে পাতানো প্রণয়
পিপাসা জাগানো ভেদাভেদ!
সুবচনী ব্রতগান, কালের নিয়মে জ্বলে
জন্মান্তর ঢাকে চোখ,
অন্ধ কটাহকূল
চুক তবু একচুল
মেঘে ঢাকা সূর্য আলোক!
দাবিদাওয়া ভুলে যাওয়া নেশাতুর জ্ঞানচোখ
তবুওতো শোকের অধিক,
পালনে ন্যায়ের বল
ঝরে যায় বল্কল
নিয়মিত, সময়ে সঠিক!
দেয়ালে ধূর্ত ছায়া, মায়াবিনী সারমেয়
ত্রিনয়নে অকারণ সন্ত্রাস,
দাঁড়ের একাকী পাখি
দুচোখ মেহনে ঢাকি
ঘনঘন দীর্ঘশ্বাস!
ঢোক যদি গিলে থাকি, রাখি হাত সংঘাতে
ঘুম ছাড়া কেটে যায় রাত,
শীতের বেদনাগাথা
তুমি-আমি-ছেড়াকাঁথা
বুকে ভাঙা পুষ্পপরাত!
শাসিত রাজার ধনে কিবা আছে সন্তাপ
গ্রেনেড ভর্তি করি মিরাজে,
শীতের মেধাবী পিল
স্বপ্নের টনসিল
হিমেল হাওয়ার সাথে বিরাজে!!
প্যারাসুট
জল বেলুনের ফানুসে ভেসেছি আজ
কর্ণকুহরে পাতাদের কথা শোনো,
ঝিরিঝিরি হাওয়া জানায় ধান্দাবাজ
প্রি হিট আভেনে ছলকায় এল নিনো।
নিয়নে শুকায় কামাতুর তিসিবীজ
সংরচনায় আদিদেব নামে জলে
রিপু বিজয়ের উদ্বায়ী মনসিজ
যোগনিদ্রায় রমনের কথা বলে।
ঋতুজর্জর শ্বাপদের এই বনে
চোরাপথ দিয়ে গৃহদেবতারা ঢোকে,
কারাগার জোড়া মহাসন্ধিক্ষণে
পাখপাখালির আদিম মর্ত্যলোকে।
মেঘ জমেছিল, কিছুকাল আগে তবু
সসাগরা দেহে বিষাদের সমনামে
বিজাতীয় বায়ু ভেঙে দিয়ে গেছে ট্যাবু
আকাশ ফাটিয়ে র্যাপিডফায়ার নামে।
তবু রোদ ধরি, খরিকাটা এই হাতে
বাতাসে উড়াই বায়বীয় যত স্বাদ,
উষ্ণতা নামে পাহাড়ের অজ্ঞাতে
বহু বহু নীচে গভীর হচ্ছে খাদ!
***************************************************************************************
জন্ম :২২ সেপ্টেম্বর ১৯৭৬ বহরমপুর, মুর্শিদাবাদে। ছাত্রজীবন ও বেড়ে ওঠা বহরমপুর শহরেই। কলেজ উত্তীর্ণ হওয়ার পর কঠোর জীবন সংগ্রাম। সাতাশ বছর বয়সে দিল্লীতে আগমন। কেন্দ্রীয় সরকারী কর্মচারী। আঠেরো বছর ধরে দিল্লীর বাসিন্দা। দিল্লী ও দিল্লীর বাইরে বেশ কিছু পত্র পত্রিকায় লেখা প্রকাশিত ও প্রশংসিত। প্রকাশিত কাব্যগ্রন্থ : রাই জাগো গো, কর্ষণলিপি,পাখিঘুম।







কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন