পার্থসারথি মহাপাত্র-এর কবিতা
নিঃশব্দে
চুলে ধূসর সময়ের রেখা,
চোখে হলুদ পিচুটি লেখা।
শরীর কাঁপে, মনটা চুপ,
স্মৃতিরা সব নিঃশব্দ রূপ।
শূন্যতা
ঘরের কোণে ভাঙ্গা কাপ থালা গ্লাস
বাহিরে ছড়ানো প্রাণ উজ্জ্বল রোদ।
নিরব দেহের সন্ধিতে সন্ধিতে ব্যথা,
বার্ধক্যের ঠোঁটে নিঃশব্দ বিরোধ।
শহর
ধোকা ও ধোঁয়ায় ক্লান্ত এ শহরে,
জানালাগুলো স্বপ্ন বোনে রোজ।
গলি গলি গল্পেরা সব করে
মানব বনে মানবিকতার খোঁজ।
অসমতা
একদিকে উপচে পড়া উচ্ছিষ্ট বিন,
অন্যদিকে ক্ষুধার্তের বিনিদ্র চোখ।
খানাখন্দে হোঁচট খাচ্ছে জীবন
কাগজে যতই উন্নয়ন লেখা হোক।
শান্তি বার্তা
কুল ভাঙ্গা শ্রাবণের প্লাবন ধারা
শান্ত হও, দিন যাপনে হও সংযত
উথলে উঠা সূর্যের বর্নিল উল্লাস
সন্ধ্যেবেলা তেঁতুলতলায় হয় নত।
বিপন্ন
আকাশে গাঁথা লাল-সবুজের তীর,
স্বপ্নের শস্যে সমবেত বিস্ময় ভীড়।
মাটির নিচে গোপন প্রতিশ্রুতি,
নিমজ্জিত নৌকা বিকল সেঁউতি।
ঝরাপাতা
পোড়া মাটির গন্ধে লুকায় ইতিহাস,
রক্তে লেখা হোক প্রতিরোধের নিশ্বাস।
ঝরা পাতারাও জানে বিদ্রোহের গান,
নীরব বৃক্ষে জেগে উঠে অভিমান।
পরিনতি
ওর কারণে আজ সংক্রান্তি
ও আমার কিছুই শুনতো না
আমি চেয়েছিলাম শান্তি
ও আমায় দিল শুধু সান্তনা।
************************************************************
পার্থসারথি মহাপাত্র
৯ এর দশক থেকে লেখালেখির সাথে যুক্ত পুরুলিয়া জেলার বলরামপুরের পার্থসারথি মহাপাত্র। বাংলার বিভিন্ন ছোট পত্রপত্রিকায় তাঁর লেখা বিচ্ছিন্ন ভাবে প্রকাশিত হয়ে আসছে। কবিতা ছাড়াও ছোট গল্প ও অণুগল্প নিয়মিত লিখে চলেছেন । তাঁর লেখা দুটি কবিতার বই 'বড়মুকরুর ছা'( মানভূমী ভাষায়),পোয়াতি মেঘ এবং 'ক্ষুধার স্পর্শে বর্ণমালা কেঁপে যায়' সমাদৃত। এখনো কোনো গল্পের বই প্রকাশিত হয়নি। পরবর্তী ক্ষেত্রে প্রকাশ করার সম্ভাবনা আছে।




কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন