বুধবার, ১ অক্টোবর, ২০২৫

প্রভাত ভট্টাচার্য * ধারাবাহিক রহস্য রোমাঞ্চ কাহিনী



ধারাবাহিক রহস্য রোমাঞ্চ গল্প

প্রভাত ভট্টাচার্য  

পর্ব * ৫


কৃষ্ণ বিকেলেই বাড়ি ফিরে এল। এসেই ছাদে চলে গেল গাছগুলোর অবস্থা দেখতে । দু একটা গাছ নেতিয়ে আছে। দেখতে হবে ভালো করে। হলুদ গোলাপটা বেশ ভালো লাগছে। পেয়ারা হয়েছে চারটে। লাল টকটকে চেরী হয়েছে । খুব সুন্দর একটা প্রজাপতি ঘুরে বেড়াচ্ছে। অনেক কসরত করে মুবাইলে তার ছবি তুলতে পারল। 

    আমিও তুলেছি ।

    কথা শুনে ফিরে তাকাল কৃষ্ণ। উজ্জ্বয়িনী চলে এসেছে। 

    আরে দিদি যে। কি করে এলে ?

    কমলাদি খুলে দিয়েছে। 

   কমলাদির কাছে একটা চাবি থাকে। 

    যাক ভালো হয়েছে । চলো নীচে যাই। অন্ধকার হয়ে এসেছে। 

    হ্যাঁ চলো। আমি ফিশ কবিরাজি নিয়ে এসেছি। 

    বাঃ, চায়ের সঙ্গে জমবে ভালো। সূর্যদাও হয়ত এক্ষুণি চলে আসবে। 

    বলতে বলতেই সূর্য চলে এল। 

    কমলাদি চা আর কবিরাজি দিয়ে গেল । 

    তুমিও কবিরাজি নিও। কমলাদিকে বলল উজ্জ্বয়িনী ।

    আচ্ছা  । তুমি খুব ভালো। 

    গল্প চলতে লাগলো। 

    হাতে তো এখন কোন কেস নেই  ? বলল উজ্জ্বয়িনী ।

    না গো। জবাব দিল কৃষ্ণ। 

    ভালো কথা, আমাকে দিল্লিতে যেতে হবে বিশেষ কাজে। সূর্য বলল। 

    একাই যাবে?

    হ্যাঁ রে। ব্যাপারটা ভীষণ গোপনীয়। পরে সব বলবো। রাগ করিস না। 

   আরে, ঠিক আছে। কদিনের জন্যে  ? 

    ঠিক বলতে পারছি না। 

   নতুন কোন রহস্যের ব্যাপার  ? উজ্জ্বয়িনী বলে উঠল। 

    দেখা যাক। 

    তাহলে আমি এখন উঠি। বলে উজ্জ্বয়িনী বিদায় নিল। 

     মন খারাপ হয়ে গেল নাকি। সূর্য বলল কৃষ্ণকে। 

     না, ওরকম কিছু নয়। 

     সূর্য রওনা দিল দিল্লির উদ্দেশ্যে। কৃষ্ণ আর উজ্জ্বয়িনী তাকে এয়ারপোর্টে ছাড়তে এল। 

    প্লেনে বসে সূর্য ভাবতে লাগল পরবর্তী কর্মপদ্ধতি সম্পর্কে। 

    দিল্লিতে তাকে স্বাগত জানানোর জন্য ছিল অনুজ শর্মা। প্রথমেই তাকে নিয়ে যাওয়া হল স্পেশাল অফিসার আনন্দ কুমারের কাছে। তার সঙ্গে বেশ খানিকক্ষণ কথা হল সূর্যর। 

     কাজটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ এবং কঠিন। আপনার এতটাই সুনাম আছে যে এই কাজের জন্য আপনাকেই যোগ্য বলে মনে করা হয়েছে। বললেন আনন্দ। 

     থ্যাঙ্ক ইউ। 

    আপনার সঙ্গে অনুজ থাকবে।  ও খুবই দক্ষ অফিসার। আর কজন দরকার। 

    আর কাউকে এখন দরকার নেই। ঠিক সময়ে বলবো। 

    ঠিক আছে, অল দ্য বেস্ট। পরে দেখা হবে। আনন্দ

 করমর্দন করলেন সূর্যের সঙ্গে। 

    এরপর একটা হোটেলের ঘরে সূর্য আর অনুজ মিলে

 ছোটোখাটো একটা আলোচনা সেরে নিল।


পর্ব * ৬


নতুন সদস্যের আগমন 

    সেদিন সকালে অজয় তার কেবিনে বসেছিল । সেইসময় একজন দরজায় টোকা দিল। 

     ভেতরে আসুন। বলে উঠল অজয়। একজন প্রবেশ করল। লম্বা চুল, মুখে খোঁচা খোঁচা দাড়ি  , কেমন একটু খ্যাপাটে ভাব। কানের পাশে আবার হিয়ারিং এড রয়েছে। 

    আমি অতীশ দত্ত, একজন সায়েনন্টিস্ট । বিজ্ঞাপন দেখে এলাম। আসলে আমার কাজের মর্যাদা কেউ দেয় না। আমি এমন এক জিনিস বার করেছি যা একটুখানি ছড়িয়ে দিলেই লক্ষ লক্ষ মানুষ মারা যাবে। আরো অনেক এরকম আবিস্কার  আছে আমার। 

    বাঃ খুব ভালো ।

     কি বললেন, আলো। হ্যাঁ, আলোহাওয়া থাকলে বেশ ভালো লাগে। 

    এর কানের অবস্থা দেখছি দারুণ। যাক, এ কাজের লোক। মনে মনে বলল অজয়। তারপর শার্দুলকে ডেকে রবিনসনের কাছে নিয়ে যেতে বললেন অতীশকে। ল্যাবরেটরিটা দেখিয়ে দেবে। ওকে দিয়ে অনেক কাজ হবে। 

    শার্দুলও কেমন বিরক্তমুখে নিয়ে গেল অতীশকে। 

   একটু পরেই আবার হাজির হল আর একজন। তার নাম সুমিত। সে কম্পিউটার বিশেষজ্ঞ এবং হ্যাকার। বেশ চটপটে। সেও কোথাও পাত্তা না পেয়ে এখানে এসেছে।  এরকম লোক তো ভীষণই দরকার। তাকেও শার্দুলের সাথে পাঠিয়ে দিল অজয়। 

    এতক্ষণে সম্পূর্ণ হল তার টীম। আর কদিন পরেই শুরু হবে অ্যাকশন। 

    এদিকে কৃষ্ণ সূর্যের মোবাইলে  ফোন করে পেল না। তারপর দেখল , সূর্য মেসেজ পাঠিয়েছে , এখন বেশ কিছুদিন আমাকে ফোনে পাবি না। চিন্তার কিছু নেই। কাজে ব্যস্ত থাকবো। গৌরবের সঙ্গে বরং মাঝে মাঝে কথা বলে নিস আর নিজের খেয়াল রাখিস। 

    কৃষ্ণ উজ্জ্বয়িনীকে সব জানাল। তারপর ফোন করল গৌরবকে। গৌরব সূর্যের বন্ধু আর ইন্টেলিজেন্স ব্রাঞ্চে কাজ করে। 

    ফোন ধরে গৌরব বলে উঠল, আরে কৃষ্ণ ভাই, বলো কি খবর। 

    এমনি সব ঠিক আছে, সূর্যদার ব্যাপারে জানতে চাইছিলাম। 

    তোমার সূর্যদা তো এখন বেশ বড় একটা কাজ নিয়ে আছে। খানিকটা সময় তো লাগবেই। অত টেনশন করার দরকার নেই। পরে যাবো একদিন, তোমার হাতের রান্না খেয়ে আসবো। 

    নিশ্চয়ই। 

    কৃষ্ণ ফোন রেখে দিল।



************************************"**************************************************************



প্রভাত ভট্টাচার্য  

তিনি সব্যসাচী--- এক হাতে সামলান চিকিৎসকের গুরুভার দায়িত্ব আর এক হাতে ফোটান সাহিত্য সৃষ্টির ফুল। দ্য হার্ট, মিশন পসিবল, মাই ডটার, রাজবাড়িতে রক্তপাত , ডিটেক্টিভ সূর্য এবং কবিতা সংকলন - কাগজের মানুষ এবং ফিনিক্স পাখি তাঁর উজ্জ্বল সাহিত্যসৃষ্টি । সম্প্রতি প্রকাশিত তাঁর  তিনটি ভিন্ন ধরনের উপন্যাস - দশভুজা, কাগজের মানুষ ও মায়াবী গ্রাম। এছাড়াও তাঁর আর একটি মনভোলানো সৃষ্টি 'গুহা মানবের ডায়েরি'  




কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন