কৌশিক সেন * দুটি কবিতা
চামুণ্ডা
ছেঁড়া ছেঁড়া তোর আগুনের তাপ আছেনা!
রাত ভোর হয় ঘন চুল্লির আঁচে
আলকাতরায় দক্ষিণাকালী নাচে
কাতারে কাতারে পিপীলিকা আর নাচেনা।
ছুতমার্গ যত কাটিয়ে উঠিস, যদিও
পল্টনে বাঁধা গোরাসাহেবের গদি
হিঁচড়ে টেনেছি লাশ তবু নিরবধি
বমি উপচায় চেনা বদখদ নদীও!
মেঘ জমে গেলে সরোবরে ধুম মাচেনা
লাথ মারি তবু ভাঙা বোতলের কাচে
জরা বেঁচে থাকে নশ্বরতার ছাঁচে
বেদেনীকে দেখে সাপেরাও আর হাঁচেনা।
রতিসঙ্গীত এখনও এখানে কান্না
ছায়া যদি ভরে সুচতুরা ধনে ধান্যে
পাপড়ি বিহনে ফুলেদের কোনো ঘ্রাণ নেই
গর্ভকেশরে ফলবতী চুনীপান্না।
আচমন ছাড়ো, এখনও কেউ কাছে নাই
আচারের দায় চির চিতলের মাছে
গণ্ডুষে দেখা মুণ্ডমালিনী নাচে
তুই কি এখনও বরাভয়, নাকি অচেনা!!
কুসুমকঠিন
একই বৃন্তে, দুটি পুষ্প। বড় দুষ্কর। অলি ফুল্লে
অতি শুষ্ক। চেয়ে চিন্তে। তবু ধূলোঝড়, গেট খুললেই।
মৃত পক্ষী। রাজযক্ষীর। তবু জমে ক্ষীর। ঝু্টো কাহিনী
আহা যোগী পীর। কত লক্ষ্মী। ঊরুসন্ধির। সুধাবাহী নির।
জল উপচায়। কাঠি ধূপ চায়। কত ভক্তি! হৃদি মোল্লা
আরে দুচ্ছাই। গলা বাজখাই। যত শক্তি। পাড়া তোলপাড়।
বলি, শুনছো তো! তারা গুনছো তো! তমোগুণ ছোট।
অধিকাংশে
চোখ বুঁজে ছোটো। চায় নাকি ভোট ও। ভারী মজা লোটো,
নরমাংসে!
ভ্রমরের দাবি। জংধরা চাবি। শুধু খায় খাবি। রাখে ভিন্ন
দুটি বৃন্তে, একই পুষ্প। জাগে পূণ্য। দেবী কিন্নর।
পাখি গান গায়। আদি গঙ্গায়। গোশালায় গাই। ওঁ গঙ্গে
কত সংজ্ঞায়, নাচি আর গায়। বেলা বয়ে যায়, ফুলরঙ্গে।।
**************************************************************
জন্ম :২২ সেপ্টেম্বর ১৯৭৬ বহরমপুর, মুর্শিদাবাদে। ছাত্রজীবন ও বেড়ে ওঠা বহরমপুর শহরেই। কলেজ উত্তীর্ণ হওয়ার পর কঠোর জীবন সংগ্রাম। সাতাশ বছর বয়সে দিল্লীতে আগমন। কেন্দ্রীয় সরকারী কর্মচারী। আঠেরো বছর ধরে দিল্লীর বাসিন্দা। দিল্লী ও দিল্লীর বাইরে বেশ কিছু পত্র পত্রিকায় লেখা প্রকাশিত ও প্রশংসিত। প্রকাশিত কাব্যগ্রন্থ : রাই জাগো গো, কর্ষণলিপি,পাখিঘুম।







কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন