গোবিন্দ মোদক * দুটি কবিতা
দায়ভার
যেতে যেতে যতো কিছু ভাবি
তার কণাও বুঝি লেখা নেই কোনও পুঁথিতে।
তবু দৃশ্যের সামনে আরও কিছু দৃশ্য
আমাকে শিহরিত করে –
ছোট শিশু বমি করে দুধ ওগলালে
অশীতিপর ঠানদিদি মুছে দেয় যত্নে, আঁচলে,
কি দায় ছিল তার বুঝি না!
চলৎশক্তিহীন বৃদ্ধ প্রবল প্রচেষ্টায় এগিয়ে এসে
বীজধান তুলে দেয় পৈনাতির হাতে
কি ছিল তার দায় বুঝি না!
চলন্ত ট্রেনে দু'বেলা গান গায় অন্ধ সুবলকাকা
কি ছিল তার দায় জানি না!
সংসার-শর্তে প্রদীপদা এখন পকেটমার
জেল-হাজতও তাকে শোধরাতে পারেনি
কি আছে তার দায় জানি না!
নকুলজেঠু রোজগার করার বদলে
দিস্তা দিস্তা কাগজে কবিতা লেখে …
জেঠির মুখঝামটা শোনে অক্লান্ত চোখে …
কি আছে তার দায় আজও বুঝি না!
তবু দৃশ্য থেকে দৃশ্যান্তরে যেতে যেতে
আমি টিকটিকির ডাকে থমকাই …
আমার কি দায় আমি জানি না।
তাগিদ
পরিপূর্ণ হয়ে ওঠবার তাগিদ থেকে
দাউ দাউ আগুন জ্বলে ওঠে ভিতরে ভিতরে
চেতনার দরজা খুলে যায় একটু একটু করে
তেজী ঘোড়া অলক্ষ্যে লাফায়, ঝাঁপায়
সময়ের সরণী জুড়ে রঙিন পতাকা ওড়ে
আরও কত কিছু ঘটে যায়…
তখন নিজের সঙ্গেই নিভৃত আলাপচারিতা
দ্রোহকাল পেরিয়ে দু'দণ্ড ভাববার অবকাশ
আর অঙ্কুশ হাতে সময়কে শাসনের দুরূহ স্পর্দ্ধা।
সুখগল্প আর শোকগল্প পেরিয়ে
কিছু ছন্দময় উপাখ্যান আর বীজধানের খৈ …
মধ্যবিত্তের যন্ত্রণা বুকে নিয়ে আলোকিত প্রয়াস,
নিজেকে ভাঙাগড়া, প্রত্নবিদের মতো খোঁড়াখুঁড়ি
আর বিষণ্ণ বাঁশি সরিয়ে রেখে
বাজিয়ে দেওয়া পালার শেষ ঘণ্টা …
এসো, পরিপূর্ণ হই, অথবা জ্বলে ছাই হই!
প্রকাশিতব্য গ্রন্থ:- পদ্য ভরা আমার ছড়া * ছন্দ ভরা আমার ছড়া * রূপকথার রূপ-কথা * ভয়ঙ্কর প্রতিশোধ * গুপ্তধনের সন্ধানে * জীবনের রোদ-রং ইত্যাদি সম্মাননা: পাঠকের ভালোলাগা এবং ভালোবাসা-ই সবচেয়ে বড় পুরস্কার।

কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন