গৌরীশঙ্কর দে * দু’টি কবিতা
শব্দের অন্তর্গত নিস্তব্ধতা
আমি জন্মাইনি—
শুধু একটি ভুল উচ্চারণের ভেতর
একটি অনুপস্থিত নামের মতো ভেসে উঠেছি।
আমার ছায়া নেই,
তবু প্রতিটি দেয়ালে
আমি নিজেকে দেখি
একটি অদৃশ্য আয়নার ভেতর।
সময় এখানে
একটি ভাঙা ঘড়ির ফাঁকে
নিজেকে খুঁজে ফেরে,
যেন অতীতই ভবিষ্যতের ভুল বানান।
আমি হাঁটি—
একটি শব্দহীন শহরের ভেতর,
যেখানে প্রতিটি রাস্তা
একটি কবিতার অসমাপ্ত স্তবক।
মৃত্যু আসে না,
সে শুধু অপেক্ষা করে
একটি অক্ষরের ভুল ব্যাখ্যার মতো,
যেখানে জীবন নিজেই
নিজেকে অস্বীকার করে।
আমি লিখি না—
আমি শুধু মুছে ফেলি
যে ভাষা আমাকে চিনতে চায়,
তাকে অচেনা করে তুলি।
কেন লিখি?
আমি লিখি না,
আমার আঙুলে এক মৃত পাখির ছায়া লিখে যায়
আকাশের উল্টো পিঠে।
জীবন তখন
একটি ঘুমন্ত ঘড়ি,
যার কাঁটা সময়কে নয়,
শুধু অনুপস্থিতিকে মাপে।
মৃত্যু আসে না—
সে শুধু দাঁড়িয়ে থাকে
একটি দরজার মতো,
যার চাবি প্রতিটি কবিতার ভেতরেই হারিয়ে যায়।
আমি লিখি—
"আজ আমি একটি শব্দের অন্তর্গত শূন্যতা,
যেখানে ব্যাকরণ নিজেই আত্মহত্যা করেছে।"
তারা গোনে না,
তারা শুধু ঝরে পড়ে
একটি অদৃশ্য ক্যালেন্ডারের পাতায়,
যেখানে দিনগুলো কেবল
অস্তিত্বের ভুল বানান।
আমার কলমে রক্ত নেই,
তবু প্রতিটি অক্ষর
একটি মৃত আত্মার পুনর্জন্ম।
আমি লিখি,
যেন লিখছি না—
শুধু অনুপস্থিতির দিকে
একটি অন্ধ চোখ ছুঁড়ে দিচ্ছি।





কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন